ভবন ঝুঁকিপূর্ণ তাই ক্লাস চলছে অন্য স্কুলে

এপ্রিল ২০, ২০১৯

ঢাকা জার্নাল: খুলনায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকা তৈরিতে ব্যস্ত শিক্ষা কর্মকর্তারা। প্রায় তিন মাস আগে খুলনা থেকে ২শ’টি ঝুঁকিপূর্ণ প্রাথমিক স্কুল ভবনের তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এখন আবার নতুনভাবে চলছে তালিকা তৈরির কাজ। কিন্তু খুলনা সদরের সোনাডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটির তথ্য এখনও জানেন না শিক্ষা কর্মকর্তারা। চার বছর ধরে এ স্কুলটির শিক্ষা কার্যক্রম পাশের আরেকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চলছে। সদর থানা শিক্ষা অফিসের দায়িত্বরতরা কখনও ওই বিদ্যালয় পরিদর্শনেও যাননি। শিক্ষা বিভাগের তথ্য মতে, খুলনা সদর থানা শিক্ষা অফিসের অধীন ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের কারণে চারটি বিদ্যালয়ের পাঠদান চলছে অন্যত্র। এ চারটি বিদ্যালয়ের তালিকার বাইরে রয়েছে সেনাডাঙ্গার বিদ্যালয়টি।

শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, মহানগরী ও খুলনার ৯টি উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে এক হাজার ২৯৯টি। এর মধ্যে ২০৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন ঝুঁকিতে রয়েছে। খুলনা সদর থানায় ঝুঁকিপূর্ণ ভবন কিংবা নতুন ভবনের কাজ চলায় অন্য বিদ্যালয়ের সঙ্গে সংযুক্তিতে পাঠদান করানো হচ্ছে চারটি বিদ্যালয়ের। জেলা শিক্ষা অফিসের তথ্য অনুযায়ী, সদর থানা শিক্ষা অফিসের আওতায় অন্য বিদ্যালয়ে পাঠদান করানো হচ্ছে তিনটি বিদ্যালয়ের। একটি শিগগিরই অন্য বিদ্যালয়ে সংযুক্তিতে পাঠদান করবে।

জেলা শিক্ষা অফিসের সূত্র অনুযায়ী, বর্তমানে শহীদ সুবেদার মেজর জয়নাল আবেদীন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান চলছে বানরগাতী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে, পল্লীমঙ্গল রহমানিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান সোনার বাংলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এবং আব্দুল গণি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছে সোনাপোতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। আর ভবন নির্মাণের কারণে মোল্যা পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিগগিরই শিশুমেলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংযুক্তিতে পাঠদান করবে বলে জানা গেছে।

খুলনা সদর থানা শিক্ষা অফিসের তথ্য অনুযায়ী সোনাডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি তালিকায় নেই। ২০১৬ সাল থেকে এ বিদ্যালয়টি সংযুক্তিতে পাঠদান করছে সোনাডাঙ্গা আবু বক্কর খান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। কিন্তু এই বিদ্যালয়ের ক্লাস কোথায় হচ্ছে তা জানেন না জেলা শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তা।

সোনাডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহমুদা আক্তার বলেন, ‘২০১৫ সালে স্কুল ভবনটি নষ্ট হওয়ার পর আমরা অন্যত্র ক্লাস করাচ্ছি। সরকারি আবু বকর খান স্কুলে কক্ষ না থাকায় এক কক্ষে ২টি ক্লাস নিতে হয়। এখানে আমাদের স্কুলের ৯ জন শিক্ষক ও ১১৭ জন শিক্ষার্থী নিয়ে চরম সংকটে দিন কাটছে।’

সোনাডাঙ্গা আবু বকর খান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও স্কুলটির প্রতিষ্ঠাতা মো. ইউসুফ আলী বলেন, ‘আধা পাকা এ স্কুলে ৪টি কক্ষ রয়েছে। এখানে দুই শিফটে ক্লাস নেওয়া হয়। ১২টার পর সোনাডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্লাস এখানে শুরু হয়। আমাদের স্কুলের ৬টি ক্লাসে ৬৬ জন শিক্ষার্থীর জন্য চারটি ক্লাস রুম আছে। শিক্ষক আছেন তিন জন।’

খুলনা সদর থানা সহকারী শিক্ষা অফিসার নাজমুন্নাহার বলেন, ‘আমি নতুন এসেছি। কখনও সোনাডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়টি পরিদর্শনে যাইনি।’ ২০১৫ সাল থেকে বিদ্যালয়টির ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার কারণে অন্য বিদ্যালয়ে সংযুক্তিতে পাঠদান চলার বিষয়টিও তিনি জানেন না।

খুলনা সদর থানা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসার কামরুন্নাহার বলেন, ‘সদর থানার আওতায় চারটি বিদ্যালয় ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার কারণে অন্য বিদ্যালয়ে পাঠদান করা হচ্ছে। বিষয়টি জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা অবগত আছেন। কিন্তু সোনাডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তথ্য এখানে নেই।’ খুলনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এএসএম সিরাজুদ্দোহাও একই কথা জানালেন। কী কারণে সোনাডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তথ্য কর্তৃপক্ষের কাছে নেই সেব্যাপারে কিছু বলতে পারেননি তিনি।

ঢাকা জার্নাল,

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.