হত্যার আগে নুসরাতকে ছাদে ডেকে নেয় পপি

এপ্রিল ২০, ২০১৯

ঢাকা জার্নাল: ফেনী সোনাগাজীর ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে উম্মে সুলতানা পপি। আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে পপি জানিয়েছে, নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে হত্যার আগে তাকে (নুসরাতকে) ছাদে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল সে। এরপর কিলিং মিশনে অংশ নেওয়ার কথাও স্বীকার করেছে পপি।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শরাফ উদ্দিন আহম্মেদের আদালতে ১৬৪ ধারায় এই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব তথ্য জানিয়েছে উম্মে সুলতানা পপি। সে রাফিকে যৌন হয়রানির মামলায় জেলে থাকা ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার ভাগ্নি এবং একই মাদ্রাসার শিক্ষার্থী।

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-এর চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্পেশাল এসপি মো. ইকবাল বাংলা ট্রিবিউনকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন ।

তিনি বলেন, ‘উম্মে সুলতানা পপি আদালতের কাছে স্বীকার করেছে, সে ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিল। পরবরতীতে সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হবে।’

এর আগে এই মামলার চারজন আসামি নুসরাত হত্যার সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। তারা হলো- মামলার এজহারভুক্ত আসামি নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, আবদুর রহিম শরীফ ও হাফেজ আবদুল কাদের।

জানা গেছে, আলোচিত এই মামলায় এজাহারভুক্ত ৮ জনসহ এখন পর্যন্ত মোট ১৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ও পিবিআই। এদের মধ্যে রয়েছে- মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এসএম সিরাজউদ্দৌলা, কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম, শিক্ষক আবছার উদ্দিন, সহপাঠী আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্লাহ জনি, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, শাহিদুল ইসলাম, অধ্যক্ষের ভাগ্নি উম্মে সুলতানা পপি, জাবেদ হোসেন, যোবায়ের হোসেন, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন, মো. শামীম, কামরুন নাহার মনি, আবদুর রহিম শরিফ, হাফেজ আবদুল কাদের ও সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিন।

প্রসঙ্গত, নুসরাত জাহান রাফি সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিমের পরীক্ষার্থী ছিলেন। ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে এর আগেও ওই ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ওঠে। নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে ২৭ মার্চ সোনাগাজী থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে নুসরাতের পরিবারকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। ৬ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে আলিম পর্যায়ের আরবি প্রথমপত্রের পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে যান নুসরাত। এসময় তাকে কৌশলে একটি বহুতল ভবনে ডেকে নিয়ে যায় অধ্যক্ষের ভাগ্নি পপি। সেখানে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়া হয়। ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান নুসরাত।

ঢাকা জার্নাল, এপ্রিল ২০, ২০১৯।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.