‘নির্বাচনের গণ্ডিতে বিএনপি-জামায়াতের কোনো নিজস্ব অবস্থান নেই’

ডিসেম্বর ১৬, ২০১৮

ঢাকা জার্নাল: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকেন্দ্রিক গঠিত জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ড. কামাল ভোটের মাঠে জোটের অজনপ্রিয়তা এবং এর পেছনের প্রধান অন্তরায় জামায়াত ইসলামীর জন্য চরম হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। সরকারের বিরুদ্ধে যে পরিকল্পনা তিনি সাজিয়েছিলেন বিএনপির হতবুদ্ধিতার জন্য তা ভেস্তে যাচ্ছে বলেই মনে করছেন এই প্রবীণ নেতা। নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে তিনি গোপনে জামায়াত–শিবিরের সাংগঠনিক শক্তি ব্যবহার করবেন বলে মনস্থির করেছিলেন। তবে নির্বাচনের গণ্ডিতে বিএনপি-জামায়াত–শিবিরের কোন নিজস্ব অবস্থান নেই তা নিশ্চিত হবার পর তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। সূত্র, বাংলাদেশ প্রেস।

জানা গেছে, হঠাৎ করেই ১৩ ডিসেম্বর সকাল থেকে ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের সঙ্গে তিনি খারাপ ব্যবহার করছেন। আর ১৪ ডিসেম্বর প্রকাশ্যে এক সাংবাদিকের সঙ্গে ড. কামাল যে ব্যবহার করেছেন তাতে তার মানসিক অবস্থা বেগতিক বলেই মনে করছেন ঐক্যফ্রন্টের একাধিক নেতা। সাংবাদিকদের সাথে ভারসাম্যহীন আচরণ করে তিনি ঐক্যফ্রন্টের ক্ষতি করেছেন বলেও মনে করেন তারা।

ঐক্যফ্রন্ট সূত্র বলছে, ড. কামাল ১৪ ডিসেম্বর রাত থেকেই তার দল গণফোরামের কোন নেতাকর্মীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করছেন না। এমনকি পরিবারের সদস্যদের সাথেও কথা বলতে অনীহা প্রকাশ করছেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে ড. কামালের জ্যেষ্ঠ মেয়ে ব্যারিস্টার সারা হোসেন বলেন, ১৪ ডিসেম্বর মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থান থেকে ফেরার পথে বিএনপি কর্মীরা অভ্যন্তরীণ কোন্দলে জড়িয়ে পড়ে। এসময় বাবার গাড়িতেও হামলা চালায় বিএনপির মনোনয়ন বঞ্চিত নেতারা। এতে বাবা মানসিকভাবে চরম আঘাত পেয়েছেন বলেই মনে হচ্ছে। রাত থেকেই ঐক্যফ্রন্টের কোন নেতার সঙ্গে তিনি কথা বলতে চাচ্ছেন না।

এবিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ড. কামাল তিনদিন ধরে বারবার বিএনপির সাংগঠনিক শক্তি প্রদর্শন করার বিষয়ে কথা বলছিলেন। তার মতে, নির্বাচনের মাঠে বিএনপির সাংগঠনিক শক্তিকে তিনি কাজে লাগাতে চান। কিন্তু বাস্তবতা হলো- বিএনপির রাজনৈতিক কর্মীরা দলগতভাবে অনেকটা কোণঠাসা হয়ে আছেন। আমরা ড. কামালকে বারবার বোঝানোর চেষ্টা করেছি, জনগণ স্বাভাবিকভাবেই তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে। আর আমরাই এই নির্বাচনে ক্ষমতায় এসে ড. কামালকে রাষ্ট্রপতি করবো। কিন্তু তিনি নির্বাচনী প্রচারণায় বিএনপি-জামায়াতের সাংগঠনিক শক্তি দেখে সন্তুষ্ট নন বলেই মনে হচ্ছে। মিরপুরের ঘটনার পর থেকে ড. কামাল বিএনপি নেতাদের সঙ্গেও আর যোগাযোগ করতে চাইছেন না। একাধিকবার তার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে ফিরে আসতে হয়েছে নেতাদের।

এদিকে বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, বিএনপির আন্দোলন করার কোন শক্তি কিংবা সামর্থ্য নেই। যদি সেই সক্ষমতা থাকত তাহলে জনবিচ্ছিন্ন ড. কামাল হোসেন ও ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেনের মতো লোকজনের সঙ্গে যুক্ত হতো না। তবে ড. কামাল হোসেন ভোটের হিসেব পর্যালোচনা করে হয়তো বাস্তবতা বুঝতে পেরেছেন। তাই নির্ঘাত ঐক্যফ্রন্টের পরাজয় দেখতে পেয়ে তিনি সাধারণ মানুষের সঙ্গে স্বাভাবিক ব্যবহার করতে পারছেন না।

ঢাকা জার্নাল,ডিসেম্বর ১৬, ২০১৮।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.