সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে যুক্ত হচ্ছে আরও ১১ লাখ মানুষ

জুন ৭, ২০১৮

ঢাকা জার্নাল : সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে আরও ১১ লাখ মানুষকে। বৃহস্পতিবার (৭ জুন) জাতীয় সংসদে উপস্থাপিত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে নতুন করে প্রায় ১১ লাখ দরিদ্র মানুষকে সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের আওতায় আনার কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী।
নতুন করে এই ১১ লাখ মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করা হলে এ কর্মসূচির আওতায় উপকারভোগীর মোট সংখ্যা দাঁড়াবে ৮৬ লাখ। শেষ হতে যাওয়া ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় ৮টি খাতে মোট ৭৫ লাখ মানুষকে ভাতা দেওয়া হচ্ছে।
বর্তমানে বয়স্ক ভাতা পান ৩৫ লাখ মানুষ। নতুন বাজেটে এ খাতে ৪০ লাখ মানুষকে যুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বর্তমানে বিধবা ভাতা পান ১২ লাখ ৬৫ হাজার নারী। নতুন বাজেটে এ সংখ্যা ১৪ লাখে উন্নীত করার কথা বলা হয়েছে। একইভাবে বর্তমান অর্থবছরে প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছেন ৮ লাখ ২৫ হাজার জন। নতুন বাজেটে এ সংখ্যা বাড়িয়ে ১০ লাখ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। মাতৃত্বকালীন ভাতা পাওয়া ৬ লাখ বাড়িয়ে প্রস্তাব করা হয়েছে ৭ লাখ। ভিজিডি কার্ডধারীর সংখ্যা ১০ লাখ থেকে বাড়িয়ে ১০ লাখ ৪০ হাজার করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ে কর্মজীবী ল্যাকটেটিং মায়ের (শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ান যেসব মা) সংখ্যা ২ লাখ থেকে বাড়িয়ে ২ লাখ ৫০ হাজার করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
নতুন বাজেটে ভাতা ভোগীদের সঙ্গে বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে ভাতার পরিমাণও। এছাড়া, হিজড়াসহ অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য ভাতার পরিমাণ বাড়বে বলেও বাজেট বক্তৃতায় বলেছেন অর্থমন্ত্রী মুহিত।
প্রস্তাবিত বাজেটে সামাজিক সুরক্ষার আওতায় কিডনি, স্ট্রোক, ক্যানসার, প্যারালাইজড ও জন্মগত হৃদরোগীদের আর্থিক সহায়তা কর্মসূচিতে অর্থ বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। নতুন বাজেটে এ খাতে ৭৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ৫০ কোটি টাকা।
এবারের বাজেটে বয়স্ক ভাতা কর্মসূচির আওতায় ৫ লাখ মানুষ, বিধবা ভাতা কর্মসূচিতে ১ লাখ ৩৫ হাজার ও অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ১ লাখ ৭৫ হাজার মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
পাশাপাশি আরও থাকছে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি ১০ হাজার, জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচিতে চা শ্রমিক ১০ হাজার, দারিদ্র্য মাতৃত্বকালীন মা ১ লাখ, কর্মজীবী ল্যাকটেটিং মা ৫০ হাজার ও ভিজিডির সুবিধাভোগী ৪০ হাজার। নতুন বাজেটে এ কর্মসূচির আওতায় সুবিধা পাবেন ১৪ লাখ নারী।
এছাড়া, বর্তমানে ৩০ হাজার চা শ্রমিক জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় ভাতা পাচ্ছেন। প্রস্তাবিত বাজেটে এ সংখ্যা আরও ১০ হাজার বাড়িয়ে ৪০ হাজার করা হচ্ছে।
এদিকে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী, হিজড়া, বেদে ও অনগ্রসর গোষ্ঠীর ভাতাও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর মধ্যে মাধ্যমিক স্তরে ৬০০ থেকে বাড়িয়ে ৭৫০ টাকা, উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ৭০০ থেকে ৮৫০ টাকা এবং প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি প্রাথমিক স্তরে ৫০০ থেকে বাড়িয়ে ৭০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন কার্যক্রমের আওতাসহ হিজড়া, বেদের উপবৃত্তি প্রাথমিক স্তরে ৩০০ থেকে বাড়িয়ে ৭০০ টাকা, মাধ্যমিক স্তরে ৪৫০ থেকে বাড়িয়ে ৮০০ টাকা, উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ৬০০ থেকে ১০০০ টাকা এবং উচ্চতর স্তরে ১০০০ থেকে বাড়িয়ে ১২০০ টাকা নির্ধারণ করা হবে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আসছে বাজেটে মাতৃত্বকালীন ভাতা ৫০০ থেকে বাড়িয়ে ৮০০ টাকা করা হচ্ছে। এ দুটি ভাতা পাওয়ার মেয়াদ ২ বছর থেকে বৃদ্ধি করে ৩ বছর করারও প্রস্তাব করা হয়েছে। পাশাপাশি কর্মজীবী ল্যাকটেটিং মায়ের ভাতাও ৩০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০০ টাকা করা হবে।

ঢাকা জার্নাল, জুন ৭, ২০১৮।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.