‘একরামের পরিবার এখনও কোনও অভিযোগ করেনি’

জুন ২, ২০১৮

ঢাকা জার্নাল: কক্সবাজারের টেকনাফে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত ওয়ার্ড কাউন্সিলর একরামুল হকের পরিবারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনও আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। তিনি বলেছেন, ‘একরামের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও কোনও অভিযোগ করা হয়নি, এখন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অডিও রেকর্ডটি দেয়নি। পরিবারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনও অভিযোগ না পাওয়া গেলেও একরাম নিহত হওয়ার ঘটনাটি তদন্ত করবে একজন ম্যাজিস্ট্রেট। তদন্ত শেষে ওই ম্যাজিস্ট্রেট যে রিপোর্ট দেবেন তার ভিত্তিতেই জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

২৬ মে রাতে একরাম নিহত হওয়ার পর গত বৃহস্পতিবার তার পরিবার সংবাদ সম্মেলন করে একটি অডিও রেকর্ড প্রকাশ করেছে, যা ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ওই অডিও রেকর্ড আমাদের কাছে কেউ দেয়নি। তারপরও অডিও রেকর্ডটি শুনেছি। একরামের ঘটনাটি একজন ম্যাজিস্ট্রেট তদন্ত করবে। কেউ প্রলুব্ধ হয়ে কোনও কিছু করছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে।’

শনিবার (২ জুন) রাজধানীর ধানমন্ডিতে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত কমিশনার একরামুল হক প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এসব কথা বলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

এসময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যদি কেউ অন্যায় কাজ করে থাকে, কিংবা প্রলুব্ধ হয়ে বা স্বপ্রণোদিত হয়ে অথবা উদ্দেশ্যমূলকভাবে কিছু করে থাকে, তাহলে তার বিচার হবে। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, আবারও রিপিট করতে চাই, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘অন্যায় করলে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কাউকে ছাড় দেন না। সেটাও আপনারা দেখেছেন।’

অডিও রেকর্ডটির প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা যে অডিওটির কথা বলছেন। আমাদের কাছে অফিসিয়ালি আসেনি সেটি। আমাদের কাছে সেরকম তথ্য নেই। কেউ অফিসিয়ালি ঘটনাটি বলেনি। তথ্য এলে আমাদের যা করণীয় তাই করব।’

মাদবিরোধী অভিযানের প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘যে তালিকা অনুযায়ী অভিযান চলছে তা কেবল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের না। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার। আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনছে। যারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ডাকে সারা দিচ্ছে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। যারা নির্দোষ তাদের ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। যারা অভিযুক্ত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।’

অভিযানে আটক ও গ্রেফতারের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ১৩ হাজার অভিযুক্তকে কারান্তরীণ করা হয়েছে। বর্তমানে দেশের কারাগারে প্রায় ৮৩-৮৫ হাজার বন্দি আছে, যার প্রায় ৩৩ থেকে ৩৫ শতাংশ মাদকের মামলার আসামি।’

মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরকে ঢেলে সাজানোর কথা উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জানান, মাদকের একটা নতুন আইন হচ্ছে, সেটি হলে সবকিছুর সমাধান হবে।

উল্লেখ্য, গত ২৬ মে র‍্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ একরাম নিহত হন। এরপর র‍্যাব দাবি করে, একরাম একজন মাদক ব্যবসায়ী। তবে বৃহস্পতিবার টেকনাফে এক সংবাদ সম্মেলনে নিহত কাউন্সিলর একরামের স্ত্রী আয়েশা বেগম অভিযোগ করেন, বন্দুকযুদ্ধের নামে অন্যায়ভাবে তার স্বামীকে ‘হত্যা’ করা হয়েছে।

ঢাকা জার্নাল, জুন ২, ২০১৮।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.