প্রধান বিচারপতির বক্তব্য নিয়ে আইনমন্ত্রীর ব্রিফিং রোববার

অক্টোবর ১৪, ২০১৭

ঢাকা জার্নাল: আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন, প্রধান বিচারপতির বিদেশে যাওয়ার আগের বক্তব্য নিয়ে তিনি রবিবার (১৫ অক্টোবর) আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবেন। সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সামনে এবিষয়ে কথা বলবেন তিনি।

বিদেশে যাওয়ার পথে সাংবাদিকদের সামনে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার দেওয়া বক্তব্যের বিষয়ে শনিবার (১৪ অক্টোবর) বাংলা ট্রিবিউনের পক্ষ থেকে আইনমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয়। এ সময় মন্ত্রী বলেন, ‘আমি আজ আলাদা করে কিছু বলব না। আগামীকাল রবিবার আনুষ্টানিক ব্রিফিং হবে। আপনাদের সময় জানিয়ে দেওয়া হবে।’

শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) রাতে অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে রওনা হওয়ার সময় রাজধানীর হেয়াররোডের বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন প্রধান বিচারপতি। এক পাতার একটি লিখিত বিবৃতিও সাংবাদিকদের হাতে দিয়ে বিমানবন্দরের দিকে চলে যান তিনি।

তিনি বলেন, ‘আমি অসুস্থ না, আমি অসুস্থ না। আমি ভালো আছি, আমি পালিয়েও যাচ্ছি না। আমি আবার ফিরে আসবো। আমাকে ছুটিতে যেতে বাধ্য করা হয়নি। আমি নিজে থেকেই ছুটি নিয়েছি।’তিনি আরও বলেন, ‘আমি একটু বিব্রত, আমি বিব্রত। আমি বিচার বিভাগের অভিভাবক। আমি চাই না, বিচার বিভাগ কলুষিত হোক। বিচার বিভাগের স্বার্থে আমি সাময়িকভাবে যাচ্ছি। কারও প্রতি আমার কোনও বিরাগ নেই। বিচার বিভাগ স্বাধীন থাকুক, এটাই আমি চাই।’

প্রধান বিচারপতির সিলমোহরসহ কম্পোজ করা লিখিত বক্তব্যে লেখা রয়েছে, ‘আমি সম্পূর্ণ সুস্থ আছি। কিন্তু ইদানিং একটা রায় নিয়ে রাজনৈতিক মহল, আইনজীবী, বিশেষভাবে সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী আমাকে ব্যক্তিগতভাবে যেভাবে সমালোচনা করেছেন, এতে আমি সত্যিই বিব্রত। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, সরকারের একটি মহল আমার রায়কে ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে পরিবেশন করায় প্রধানমন্ত্রী আমার প্রতি অভিমান করেছেন। এই অভিমান অচিরেই দূর হবে বলে আমার বিশ্বাস। সেই সঙ্গে আমি বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়েও একটু শঙ্কিত বটে। কারণ, গতকাল (বৃহস্পতিবার) প্রধান বিচারপতির কার্যভার পালনরত দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রবীণতম বিচারপতির উদ্ধৃতি দিয়ে মাননীয় আইনমন্ত্রী প্রকাশ করেছেন যে, দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি অচিরেই সুপ্রিম কোর্টের প্রশাসনে পরিবর্তন আনবেন। প্রধান বিচারপতির প্রশাসনে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি কিংবা সরকারের হস্তক্ষেপ করার কোনও রেওয়াজ নেই। তিনি শুধুমাত্র রুটিনমাফিক দৈনন্দিন কাজ করবেন। এটিই হয়ে আসছে।’

লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ‘প্রধান বিচারপতির প্রশাসনে হস্তক্ষেপ করলে এটি সহজেই অনুমেয় যে, সরকার উচ্চ আদালতে হস্তক্ষেপ করছে এবং এর দ্বারা বিচার বিভাগ ও সরকারের মধ্যে সম্পর্কের আরও অবণতি (অবনতি) হবে। এটি রাষ্ট্রের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে না।’

গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রধান বিচারপতির বক্তব্যকে হতাশাজনক বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা। তাদের মতে, এই বক্তব্যে দেশে অস্থিরতা তৈরি করবে।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.