ড. ইউনূসের প্রশংসা করায় অর্থমন্ত্রীর সমালোচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী

মার্চ ৪, ২০১৭

ঢাকা জার্নাল : ক্ষুদ্রঋণে দরিদ্রতা বিমোচন হয়েছে দাবি করে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত নোবেল বিজয়ী ড. মুহম্মদ ইউনূসের প্রশংসা করায় তার কড়া সমালোচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের অর্থমন্ত্রী ক্ষুদ্রঋণের প্রশংসা করে বললেন, ক্ষুদ্রঋণের জন্য নাকি দরিদ্রতা বিমোচন হয়েছে। যদি এ কারণে দরিদ্রতা বিমোচন হতো তাহলে দরিদ্রতা ৬০ ভাগে কেন ছিল? আর এখন কেন ২২ ভাগে নেমেছে? অর্থমন্ত্রীকে বলবো আপনি যদি হিসাব নেন, তাহলে এর কারণ দেখতে পারবেন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর গৃহীত নানা পদক্ষেপের কারণে দরিদ্রতা ২২ ভাগে নেমে এসেছে। যেখানে অর্থমন্ত্রীও কমর্সূচি নিয়েছেন।’

শনিবার মহিলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। রাজধানীর কৃষিবিদ ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আশরাফুননেসা মোশাররফ।

অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ক্ষুদ্রঋণে দরিদ্রতা বিমোচন হয় না, লালন-পালন হয়। আর যারা ব্যবসা করে তারা সম্পদশালী হয়।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের মা বোনরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে পরিশ্রম করে। আর লাভ নিয়ে যায় ক্ষুদ্র্রঋণের ব্যবসায়ীরা। যারা ক্ষুদ্রঋণের ব্যবসা করে তারাও চায় না দরিদ্রতা থেকে সাধারণ মানুষ উঠে আসুক। তা করলে তাদের ব্যবসা থাকবে না। দুঃখ লাগে অর্থমন্ত্রী এমন একজনের প্রশংসা করলেন যার কারণে পদ্মা সেতুর কাজই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। আমেরিকা থেকে আমাকে বারবার হুমকি দেওয়া হয়েছে। আমার ছেলেকে বারবার স্টেট ডিপার্টমেন্টে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এখন কানাডার আদালতে প্রমাণিত হয়েছে পদ্মা সেতুতে কোনও দুর্নীতি হয়নি। অর্থমন্ত্রীকে বলি দরিদ্রতা বিমোচন হয়েছে আওয়ামী লীগের গৃহীত পদক্ষেপের কারণে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে সামগ্রিক নিরাপত্তা কাজ যখন শুরু করলো তখনই দারিদ্র্যের হার কমেছে। ৫ কোটি মানুষ আজ নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যবিত্তে উঠে এসেছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দেশের মানুষ পুরস্কৃত হয় আর বিএনপি ক্ষমতায় এলে তারা তিরষ্কৃত হয়।’

সম্মেলনে আসা নারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এখানে নারীরা এসেছেন। তাদের বলবো, জঙ্গিবাদ একটি বিশ্বব্যাপী উপসর্গ। সন্ত্রাস জঙ্গিবাদের সঙ্গে মেয়েরাও সম্পৃক্ত হয়ে যাচ্ছে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। মেয়েরা মায়ের জাত। ইসলাম শান্তির ধর্ম। মানুষ খুন করে কীভাবে ইসলাম কায়েম হবে জানি না। মেয়েদের বলবো, আপনাদের ছেলে-মেয়েরা কী করে, কোথায় যায়, কার সঙ্গে মিশে, স্কুল-কলেজে যাচ্ছে কিনা এগুলো ভালো করে খোঁজ-খবর রাখবেন। সন্তানের জন্য সবচেয়ে বড় বন্ধু হবেন মা। সন্তান যেন মন খুলে সব কথা বলতে পারে সে সম্পর্ক স্থাপন করেন। সন্তানরা মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের পথে যাতে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। শুধু শাসন নয়, আদরও করতে হবে। আমি অবাক হই যখন দেখি উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানরা জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের পথে যাচ্ছে। সবই পেয়ে গেছে বলে কি তারা বিপথে চলে যাচ্ছে? এক্ষেত্রে সন্তান যাতে বিপথে না যায় সেদিকে অভিভাবকদের খেয়াল রাখতে হবে।’

ঢাকা জার্নাল, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০১৭।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.