স্যালুট ঝর্ণা

এপ্রিল ৩, ২০১৩

cadd71d86b6b770fdae5489f353392fa_small

ঢাকা জার্নাল: স্যালুট ঝর্ণা আপনাকে। সবাই যখন নিজের কথা ভেবে নির্যাতনে অচেতন এক পুলিশ সদস্যকে ফেলে চলে গিয়েছে, তখন ভিতু কাপুরুষদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন কীভাবে অসহায়, বিপদগ্রস্থ , মানুষের পাশে দাঁড়াতে হয়। আপনাকে আমরা সবাই স্যালুট জানাই।

পুরো জাতি আপনাকে আপনার কাজের পুরষ্কার জানাতে স্যালুট করছে। সরকার পুরস্কার দেবে সেটি বড় বিষয় নয়। আপনাকে গোটা জাতি স্যালুট করছে সেটিই বড় বিষয়। আমরা আপনার কাছে অন্তত এই শিক্ষা নতুন করে নিতে শিখলাম সাহস করে নির্যাতিত মানুষের পাশে দাঁড়াতেই হবে।

 

সাহসিতকার পুরষ্কার দিচ্ছে সরকার

রাজশাহীর শালবানের সেই ঝর্ণা’র সাহসিকতায় মুগ্ধ রাজশাহী সহ দেশের সর্বস্তরের মানুষ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে বিউটি পার্লার কর্মী ঝর্ণা বেগমের স্বাধীন ব্যবসা করে দিবে রাজশাহী পুলিশ প্রশাসন।

 
গত ১ এপ্রিল রাজশাহী মহানগরীর শালবাগান এলাকায় কয়েকজন পুলিশ সদস্য সহ দায়িত্ব পালন করছিলেন পুলিশ সদস্য জাহাঙ্গীর আলম। এ সময় অতর্কিত শিবির কর্মীরা তাদের উপর আক্রমন করে বসে।

এরই মাঝে দায়িত্বপালনরত বাকি পুলিশ সদস্যরা আত্মরক্ষার্থে নিরাপদ দুরত্বে সরে গেলে শিবির কর্মীদের মাঝখানে পড়ে যান জাহাঙ্গীর আলম। শিবির কর্মীরা  মাথার হেলমেট খুলে বেধড়ক পেটাতে থাকেন জাহাঙ্গীর আলমকে। শিবিরের অন্যকর্মীরাও চতুর্দিক থেকে কিল ঘুষি, লাথি মারতে থাকে। এক পর্যায়ে জাহাঙ্গীর আলমের উপর ইট মারতে থাকে শিবির কর্মীরা।

এ সময় কয়েকজন কর্মী তার মাথা ইট দিয়ে থেতলে দেন। ঘটনার আকস্মিকতায় শালবাগান এলাকার বিউটি পার্লার কর্মি ঝর্ণা বেগম রাস্তায় বেরিয়ে দেখতে পান একটি নিথর দেহ পড়ে রয়েছে । তখনও কয়েকজন শিবির কর্মী সেই দেহে ইট দিয়ে আঘাত করে চলেছেন।

ঝর্ণা বেগম দৌড়ে গিয়ে দেখেন পড়ে থাকা মানুষটি একজন পুলিশ সদস্য। মাথা থেকে গলগল করে রক্ত পড়ছে। তিনি মহিলা মানুষ একাই তাকে তুলে ধরলেন। এসময় সংবাদ সংগ্রহে থাকা দুইজন সাংবাদিককে ডাক দিয়ে দ্রুত তাকে একটি ব্যাটারি চালিত যানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। পাশে থাকেন জ্ঞান না ফেরা পর্যন্ত।

ঝর্ণার সাথে কথা হলে তিনি জানান, হৈচৈ এর শব্দ শুনে বাইরে বেরিয়ে দেখেন একজন মানুষ কে ১৫/২০ জন অমানবিক ভাবে মারছে। তাই তিনি তাকে সাহায্যের জন্য দ্রুত এগিয়ে যান। ঝর্ণা বলেন মানবিকতা থেকে তিনি এই কাজ করেছেন। তিনি যদি সেইদিন এগিয়ে না যেতেন তাহলে বিবেকের কাছে তিনি প্রশ্নবিদ্ধ থাকতেন। তিনি বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম লোকটি মারা গেছে, পরে কেঁপে উঠায় নিশ্চিত হই বেঁচে আছেন তখন তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাই।’

ঝর্ণা যদি সেই সময় এগিয়ে না আসতেন তাহলে হয়তো তাকে বাঁচানো সম্ভব হতো না।

এই ব্যাপারে রাজশাহী মহানগরীর পুলিশ কমিশনার মনিরুজ্জামানের সাথে কথা হলে তিনি জানান পুলিশ সদস্য জাহাঙ্গীর আলম এখন ভালো আছেন। ঝর্না বেগমের সাথে পুলিশ প্রশাসনের যোগাযোগ হয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন ঝর্ণা বেগমের প্রতি পুলিশ প্রশাসন কৃতজ্ঞ।

ঝর্ণা বেগম যেহেতু একজন বিউটি পার্লার কর্মী সেহেতু তাকে স্বাধীন ব্যবসা কিংবা নিজস্ব পার্লার বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করে দিবে রাজশাহী পুলিশ প্রশাসন। ইতোমধ্যে এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

ঢাকা জার্নাল, এপ্রিল ৩, ২০১৩

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.