নানা আয়োজনে বাংলা নববর্ষকে বরণ

এপ্রিল ১৪, ২০১৬

Rally-শিশু ও নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধের আহ্বানে এবং অন্তর বিকশিত করার প্রার্থনায় বাংলা নববর্ষকে বরণে বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ। নানা রঙ-ঢঙের মুখোশ ও প্রতীকে সাজানো এবং ঢাক-ঢোলের ছন্দের ঐকতানে মুখরিত এ শোভাযাত্রায় অংশ নেয় নারী পুরুষ নির্বিশেষে সব শ্রেণি-পেশার হাজারো মানুষ।

‘অন্তর মম বিকশিত করো, অন্তর তর হে’ শীর্ষক স্লোগানে বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ৯টার পর চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে এ শোভাযাত্রা বের করা হয়। এতে নেতৃত্ব দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, প্রক্টর ড. আমজাদ আলী, চারুকলা অনুষদের ডিন ড. নিসার হোসেন প্রমুখ।

শোভাযাত্রাটি শাহবাগ, হোটেল রূপসী বাংলা মোড় ঘুরে টিএসসিতে গিয়ে আবার চারুকলায় এসে শেষ হয়। ১০টার পর এ শোভাযাত্রা শেষ হলে চারুকলা অনুষদের পশ্চিম পাশে যথারীতি শুরু হয় পুতুলনাচ ও চড়কসহ অন্যান্য কর্মসূচি।

শোভাযাত্রায় নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতার প্রতিবাদী প্রতীক রূপে স্থান পায় মায়ের কোলে শিশু; সহিংসতার বিরুদ্ধে ঐক্যের প্রতীক হিসেবে তিনটি পাখি; শিশুদের সুরক্ষা ও বাংলা সংস্কৃতির পরিচায়ক প্রাণী-  হাতি, হরিণসহ মোট ৯টি লোকজ পুতুল। ছিল দেশের ঐতিহ্যবাহী ময়ুরপঙ্খীর আদলে নির্মিত প্রতীকী নৌকা। এছাড়া শোভাযাত্রায় রাজা, রাণী, পেঁচা, বাঘসহ নানা প্রাণীর মুখোশ, টেপা পুতুল, পেপার ম্যাশও দেখা যায়। শোভাযাত্রার অগ্রভাবে ছিল একতার প্রতীক তিনটি পাখি।

শোভাযাত্রায় প্রতিটি প্রতীকের সামনে ছিল বাদকদল। এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে নাচছিলেন অংশগ্রহণকারীরা। শোভাযাত্রায় সবাই বলছিলেন, নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতা নয়, পরম মমতার চোখে দেখতে হবে তাদের।

শোভাযাত্রার সামনে-পেছনে ছিল আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া প্রহরা। এর একবারে সামনে ছিল র্যাবের মোটরসাইকেল আরোহী চার সদস্যের একটি ইউনিট। তারপর যথাক্রমে ৠাবের দু’টি গাড়ি, হাতে হাত ধর‍া পুলিশের ১৮ সদস্যের একটি ইউনিট, পুলিশের ১০ সদস্যের বোম্ব ডিসপোসাল ইউনিট, পুলিশের ৩০ জনেরও বেশি সদস্যের আরও একটি ইউনিট এবং সুসজ্জিত সোয়াত টিম।

শোভাযাত্রায় এমন কড়া ও নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থার বিষয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) দক্ষিণ বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মাশরুকুর রহমান খালিদ বলেন, শোভাযাত্রায় চার স্তরের পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে। ছিল অন্য বাহিনী ও সংস্থারও তৎপরতা।

তিনি বলেন, সামনে যে সংখ্যক পুলিশ দেওয়া হয়েছে ঠিক পেছনেও একই সংখ্যক পুলিশ মোতায়ন ছিল, যেন মঙ্গল শোভাযাত্রার ভেতরে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। সাদা পোশাকে পুলিশ ও গোয়েন্দা নজরদারিও ছিল শোভাযাত্রায়।

ডিসি মাশরুকুর রহমান খালিদ জানান, সর্বোচ্চ নিরাপত্তার অংশ হিসেবে ডগ স্কোয়াড (কে নাইন) কাজ করেছে। এরা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি)  মেটাল বিস্ফোরক ডিটেকশনের ট্রেনিংপ্র্রাপ্ত ।

মানুষের কল্যাণের বার্তা নিয়ে ১৪৯৫ বঙ্গাব্দ থেকে প্রতিবছর বর্ষবরণ উপলক্ষে মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করে আসছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ।

এপ্রিল ১৪, ২০১৬।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.