দুই শিশু খুন : মা মাহফুজার বিরুদ্ধে মামলা

মার্চ ৪, ২০১৬

two-siblings-dhakaঢাকা জার্নাল : রাজধানীর বনশ্রীতে  দুই শিশু খুনের ঘটনায় র‌্যাবের কাছে তাদের মায়ের স্বীকারোক্তির পর তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (০৩, ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টায় শিশু দুটির বাবা আমানউল্লাহ বাদী হয়ে রামপুরা থানায় এ মামলা দায়ের করেন।

রামপুরা থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, আমানউল্লাহ শিশুদের মা মাহফুজা মালেক জেসমিনকে একমাত্র আসামি করে এ মামলা করেছেন।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ২৯ ফেব্রুয়ারি পড়ালেখা নিয়ে মাহফুজা মালেকের সঙ্গে অরনীর কথা কাটাকাটি হয়। এক পর‌্যায়ে অরনী ও আলভীর গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন তিনি।

ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, হত্যাকান্ডের তদন্তের ক্ষেত্রে অনেক বিষয়ই আমাদের বিবেচনায় রাখতে হয়। নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে অতি দ্রুত দোষীদের বিচারের আওতায় আনা হবে।

শুক্রবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) আদালতে মাহফুজা  মালেককে হাজির করে রিমান্ড চাওয়া হতে পারে। তিনি চাইলে ওই ম্যাজিস্ট্রেটের খাস কামরায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে পারবেন।

এর আগে সোমবার রাজধানীর রামপুরার বনশ্রীতে নুসরাত আমান অরনী (১৪) এবং আলভী আমানকে (৭) ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। ওই সময় শিশু দুটির মা ও  স্বজনরা জানিয়েছিলেন, চাইনিজ রেস্টুরেন্টের খাবার খেয়ে বিষক্রিয়ায় শিশু দুটির মৃত্যু হয়েছে।

র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান বলেন, দুই শিশুর ময়নাতদন্তের রিপোর্টের ভিত্তিতে জামালপুর থেকে শিশুদের বাবা-মা ও খালাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঢাকায় নিয়ে আসা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে মাহফুজা মালেক জানিয়েছেন, তিনি সবসময় তার সন্তানদের স্কুলের পরীক্ষার ফলাফল এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তাযুক্ত থাকতেন। ধারণা ছিল, তার সন্তানরা বড় হয়ে কিছুই করতে পারবে না।  ২৯ ফেব্রুয়ারি ৫টার দিকে অরনী ঘুমাতে যায়। একই সময়ে আলভি আমানও ঘুমাচ্ছিল। অরনী ঘুমিয়ে পড়লে তিনি তার গলায় ওড়না দিয়ে পেঁচিয়ে ধরেন। একপর‌্যায়ে ধস্তাধস্তিতে উভয়েই বিছানা থেকে মেঝেতে পড়ে যায়। কিছু সময় পর মেয়ের শরীর নিস্তেজ হয়ে গেলে তিনি আলভিকে একইভাবে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর তিনি লাশ দুটির সামনে কিছু সময় ধরে কান্নাকাটি করেন।

হত্যাকাণ্ডের পর নিজেকে বাঁচানোর জন্য মাহফুজা প্রথমে ফোন করে  স্বামী আমানউল্লাহকে জানান, ছেলে-মেয়ে কেমন যেন করছে। স্বামীর বাসায় ফিরতে দেরি হবে জেনে তিনি তার মা ও নিজ বোন মিলাকে ফোন করে বিষয়টি জানান। মাহফুজা তাদের বলেন, দুপুরে খাবার খেয়ে ঘুমানোর পর তার সন্তানরা আর ঘুম থেকে ওঠেনি। আগের দিন রাতে আনা খাবারের বিষক্রিয়ার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে প্রচার করেন।

ঢাকা জার্নাল, মার্চ ০৩, ২০১৬।

 

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.