হুমায়ূনের পাঠক প্রিয়তায় ফারজানা মিতু!

ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৬

Mitu 3ঢাকা জার্নাল : হুমায়ূনের পাঠক প্রিয়তায় ফারজানা Farzana-Mitu newsমিতু! দেশের তরুণ সমাজের চাওয়া-পাওয়া, ভাললাগা, ভালবাসা, সংসারের নানা মেরুকরণ এবং আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে লেখা গল্প সহজবোধ্য ঢঙ্গে তুলে ধরার চেষ্টা জাগিয়ে তুলেছে তরুণ লেখক ফারজানা মিতুকে।

খুব কম সময়ে গল্প লিখে সাড়া পাওয়া এবং বলতে গেলে ব্যবসা সফল হয়ে ওঠা তার একটি উধাহরণ। গল্পের বর্ণনা এবং বৈশিষ্ট উপস্থাপনে দেশ বরেণ্য কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমদের ছাঁয়া মেলে তার লেখায়। তাই অনেকেই বলেছেন-  হুমায়ূন আহমেদের পর ছোট কলেবরে হলেও পাঠক প্রিয়তা পেয়েছেন ফারজানা মিতু।

এ বছরের বই মেলার আগে ছয়টি বই নিয়ে একটি বই উৎসব করেছেন ফারজানা মিতু। এ উৎসবে বইগুলোর প্রকাশক মঈনুল আহসান সাবেরও তার এই পক্ষে মত দিয়েছেন। বলেছেন- এবার ভাল কিছু আশা করছি। বইগুলো বাজার পাবে অনায়াসেই।

Farzana mituবই মেলার শেষ দিকে খবর নিয়ে জানা গেল- বিক্রিতে ব্যতিক্রমি সাড়া। কথা হয় লেখক ফারজানা মিতুর সঙ্গে। তার কথায় ‘হুমায়ূন স্যার আর লিখবেন না’। কিন্তু কাউকে না কাউকেতো লিখতেই হবে, তরুণ সমাজের জন্য। আমি চেষ্টা করছি।

বইগুলোর নাম দিয়ে সাধারণ পাঠক থেকে ঋদ্ধ পাঠকের মাঝেও কৌতুহল সৃষ্টি করার যথেষ্ট কারণ লক্ষণীয়। কোনোটি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের ভাষায় আবার কোনোটি খুব প্রচলিত কথায়।

বই উৎসবেই ছয়টি বইয়ের নাম নিয়ে আলোচনায় উঠে এসেছে। কেটেছে একেলা বিরহের বেলা, Mituতোমাতে করিব বাস, পথে যেতে যদি কাছে আসি, ভালবেসে রুমাল দিতে নেই, যে আঁধারে তুমি নেই, এবং আমার অদৃষ্টে তুমি; সব কয়টিই যেনো মন কাড়ে।

চাওয়া পাওয়ার হিসেব মেলাতে মানুষের আকাঙ্খার পরিণতি শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় স্পষ্ট ও সুন্দরভাবে উঠে এসেছে আমার অদৃষ্টে তুমি গল্পটিতে। আর্থ-সামজিক অবস্থায় মানুষের টিকে থাকা কতটা শক্ত এর মধ্যে ভালবাসা কীভাবে উঁকি দেয়, কষ্টের আগুনে কেমন পোড়ায় মানুষকে তার সবটুকু যেনো মিশে আছে যে আঁধারে তুমি গল্পে।সংরারের জন্য সব নিংঢ়ে দেওয়ার পরেও জীবনের চরম আঁধরে কেমন কাটে। আর কেউ পাশে দাঁড়াতে চাইলেও কাছে টানা যায় না, তার উদাহরণ রয়েছে পথে যেতে যদি আসি কাছাকাছি গল্পে।

সব ক’টি বইয়ের গল্প সহজ ভাষায় লেখা হয়েছে সাধারণ পাঠকের জন্য।কিন্তু প্রতিটি বইই পাঠক টানতে পেরেছে অনায়াসে। আর ব্যবসা সফল হয়েছে ভালবেসে রুমাল দিতে নেই বইটি।

Farzana mitu 1পাঠক প্রিয়তা ও গল্পের আকার নিয়ে কথা হয় ফারজানা মিতুর সঙ্গে। একটানা বইটি শেষ করতে যেকোনো পাঠকই স্বাচ্ছন্দ বোধ করবেন। গল্প ছোট মাপের হওয়ার কারণে পাঠক যেমন বিরক্ত হবে না, অন্যদিকে পুরো বইটি পড়ার সময় মনোযোগ নষ্ট হওয়ার কোনো কারণ নেই। এসব বিষয় ভেবেই বাস্তবতার নিরিখে কল্পনার শক্তিকে কাজে লাগিয়েছেন ফারজানা মিতু।

ফারজানা মিতুর গল্পে ত্রিমুখী প্রেম, ভালবাসার নিবিড় স্পর্শের উন্মাদনা, সংসারের মায়াজালসহ ঘটনার নানা ভিন্নতা রয়েছে। তবে তার প্রতিটি গল্পে মানবিক মুল্যবোধ সৃষ্টির প্রয়াস রয়েছে।

ফারজানা মিতুর ৬ উপন্যাসের মোড়ক উন্মোচন

পাঠকের জন্য আরো কিছু তথ্য তুলে ধরা হল-

আমার অদৃষ্টে তুমি

মূল্য:  ১৫০ টাকা

কাহিনী সংক্ষেপ: নূপুর আর নক্ষত্র। যারা প্রচন্ড ভালোবাসায় একজন আরেকজনকে কাছে ধরে রেখেছে। দূরত্ব আর বিচ্ছেদ যাদেরকে আলাদা করতে পারেনি। যারা ভালোবেসে কষ্টের সমুদ্রে ভাসতে চেয়েছে। নূপুর আর নক্ষত্রের লেখা সব চিঠি এই বইয়ের প্রাণ যা কখনো কখনো ওদের সাথে কান্না ঝরাবে সবার চোখেও। ওরা বুঝিয়ে দেবে ভালোবাসায় স্বার্থপরতাও থাকতে হয়, ভালোবাসায় বেহিসেবিও হতে হয়। ভালোবাসার মানুষটিকে ধরে রাখার জন্য তাই সব পারতে হয়, সব করতে হয়।

ভালোবেসে রুমাল দিতে নেই

মূল্য: ১২০ টাকা

কাহিনী সংক্ষেপ: কথায় বলে কেউ যখন প্রেমে পড়ে তখন তার ভেতরের আসল মানুষটা তার নকল খোলস ছেড়ে বের হয়ে আসে। তাই হয়তো কঠিন হৃদয়ের মানুষেরাও জেনে হোক আর না জেনে হোক প্রেমে পড়ে। আর যখন প্রেমে পড়ে তখন ভুলে যায় নিজের অবস্থান, নিজের নিজের পরিচয়। অনন্ত, যার হাত মানুষের রক্তে লাল হয়, যার অস্ত্রের সামনে মানুষ দাঁড়াতে ভয় পায় আর সেই অনন্তই কিনা একদিন প্রেমে  পড়লো নীলা নামের এক মেয়ের। তার ভেতরে ঘটে গেল বিশাল বিস্ফোরণ। ভুলে গেল সে কোন সমাজের মানুষ, সেখানে প্রেম ভালোবাসার কোন জায়গা নেই। তাই বলে কী প্রেম থেমে থাকবে?  অনন্তর প্রেমও থেমে থাকেনি, । ভালোবেসে অনন্ত নীলার হাতে তুলে দিয়েছিল রুমাল। ভালোবাসার রঙে লেখা অসংখ্য রুমাল।

যে আঁধারে তুমি নেই

মূল্য:  ১৫০ টাকা

কাহিনী সংক্ষেপ: কিছু মানুষ থাকে যারা কাছের মানুষদের জন্য আজীবন নিজেকে নিঃশেষ করে যায়। তাকিয়ে দেখে না দিন শেষে কী পেল আর যখন দেখে তখন আর পাশে এসে দাড়ানোর মতো কেউ থাকে না। প্রচন্ড ভালোবাসায় হাত ধরার কেউ থাকে না, কেউ থাকে না বলার আর কিছু না শুধু তোমাকেই চাই। জীবিনে ভালোবাসা আসে আর চলেও যায়। সব ভালোবাসা আকাশের মতো উদার বিশাল হয় না, বিশ্বাসের ভিত অবিচল তাই হয় না। শাহেদ নামের মানুষটি চেয়েছিল নীরা নামের মেয়েটিকে নিয়ে অনেক দূরে কোথাও গিয়ে বাঁচতে। যেখানে নীরার অন্ধকার অতীত গিয়ে পৌছাবে না কিন্তু নীরা চেয়েছিল অয়নের মাঝে  আজীবন নিজেকে খুঁজে পেতে। ভালোবাসার এমনই হয়তো নিয়ম। যে যাকে চায় ভুল করে চায়। নীরা ভুলে যায় বিশ্বাসের দেয়ালও অবিশ্বাসের পানিতে ভেজানো থাকে।

কেটেছে একেলা বিরহের বেলা

মূল্য:  ১৫০ টাকা

কাহিনী সংক্ষেপ: একটি পরিবার। কাছাকাছি পাশাপাশি আনন্দ কষ্ট ভাগ করে নেবার অঙ্গীকার। তারপরও মাঝে মাঝে ঝড় আসে। এলোমেলো করে যায় সবকিছু। তেমনই কিছু এলোমেলো হয়ে যাওয়া মানুষের কাহিনী নিয়েই আবর্তিত হয়েছে “কেটেছে একেলা বিরহের বেলা“ উপন্যাসটি। অধরা, অর্পিতা আর অরণ্যকে নিয়ে বেড়ে উঠেছে এই উপন্যাসের কাহিনী। ওদের ত্রিমুখী সম্পর্ক যা কখনো কষ্ট দেবে, কখনো নির্বাক করবে। কারো আত্মত্যাগ, কারো স্বার্থপরতা, কারো আত্মকেন্দ্রিকতা সবই ফুঁটে উঠেছে এই উপন্যাসে। সেখানে দেখা যাবে কেমন করে একটি পরিবার এক হয়ে যায় আবার একই সাথে কীভাবে বাজে ভাঙ্গনের সুর।

পথে যেতে যদি আসি কাছাকাছি

মূল্য: ২০০ টাকা

কাহিনী সংক্ষেপ: এই উপন্যাসের মাঝে ছড়িয়ে আছে ধোঁকা, অপমান আর অবহেলার নিদারুণ অভিমান। রায়া অনেক ভালোবেসে জড়িয়ে পড়েছিল রাতুল নামের এক ছেলের সাথে। যার সাথে কথা ছিল ভালোবাসা দিবসে প্রথম দেখা হবার। রায়া আর রাতুল জড়িয়ে গিয়েছিল অমোঘ এক আবেগে। কিন্তু ভালোবাসার পথ এতো মসৃণ হয় না তাই অন্ধকার এসে ঢেকে দিয়েছিল আর সেই অন্ধকার সরাতে মাঝে এসে দাড়িয়েছিল আরিয়ান। যার সর্ব সত্তায় কখন মিশে গেছে রায়া নামের মেয়েটি।

তোমাতে করিবো  বাস

মূল্য: ২০০ টাকা

ঢাকা জার্নাল, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৬।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.