‘কৃষ্ণপক্ষ’ ও হুমায়ূন আহমেদ

ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৬

krishna pokkhoঢাকা জার্নাল : বসন্তের প্রথম দিন। চলছে অমর একুশে বইমেলা। সবার মনে উদাস-আনন্দ। তরুণীদের খোঁপায় গোঁজা ফুলে মুগ্ধ বাতাস। তরুণ-তরুণীদের শাড়ি ও পাঞ্জাবিতে হলুদের ছোঁয়া। যে কোনো ছেলেই যেন হিমু, আর মেয়েরা রূপা!

এমন এক রঙিলা দিনে, পহেলা ফাল্গুনের (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে হুমায়ূন আহমেদকে মনে পড়াই সঙ্গত। সবার মনের অবস্থা তিনি বুঝতে পেরেছিলেন হয়তো। তাই ‘কৃষ্ণপক্ষ’ ছবির উদ্বোধনী প্রদর্শনীতে রাজধানীর বলাকা সিনেওয়ার্ল্ডে হুমায়ূন আহমেদ স্বয়ং উপস্থিত ছিলেন, ভক্তদের সান্নিধ্য দেওয়ার জন্য!

বলাকা সিনেওয়ার্ল্ডে মূল ফটকের সামনে প্রচণ্ড ভিড়। আমন্ত্রিত অতিথি ছাড়াও উৎসুক জনতার চোখে বিস্ময়, ‘ভেতরে হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে কিছু একটা হচ্ছে…’। তাছাড়া বাইরে থেকে চোখে পড়ছে ‘কৃষ্ণপক্ষ’র বড় ও ছোট পোস্টার। সব মিলিয়ে তাদের কৌতূহলের অন্ত নেই। ভেতরে যারা ঢুকছেন, কেউ কেউ চমকে উঠছেন, এ কী! অভ্যর্থনাস্থলে যে স্বয়ং হুমায়ূন দাঁড়িয়ে! স্বম্বিৎ ফিরে পেতে অবশ্য লেগে যায় কয়েক সেকেন্ড। ‘আরে, তিনি আসবেন কোত্থেকে? এটা কাগজ দিয়ে বানানো হুমায়ূন আহমেদের প্রতিকৃতি!’

হলুদ গাদা ফুলের শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু হলো আনুষ্ঠানিকতা। প্রেক্ষাগৃহের দোতলায় গ্রামীণ আবহে সাজানো হয়েছে মঞ্চ। অতিথিদের বরণ করার জন্য একদল যন্ত্রশিল্পী প্রস্তুত। ঢাক-ঢোল, বাঁশি প্রভৃতি যন্ত্রে তারা সুর তুলছেন মুহূর্মুহু। হুমায়ূন আহমেদের প্রতিকৃতি পাশে রেখেই মঞ্চে এলেন সবাই। ‘কৃষ্ণপক্ষ’ ছবির শিল্পী ও কলাকুশলীরা সংক্ষিপ্ত আকারে বক্তব্য সেরেছেন।

inner_krishna_1_শুরুতেই ছবিটির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ইমপ্রেস টেলিফিল্ম লিমিটেডের পক্ষে বক্তব্য রাখেন ফরিদুর রেজা সাগর। তিনি বলেন, ‘হুমায়ূন আহমেদ আশপাশে কোথাও থেকে সব দেখছেন। এবার বইমেলায় তার নতুন বই নেই। কিন্তু সিনেমা হলে আছে তার ছবি। আপনারা সবাই হলে গিয়ে ছবিটি দেখবেন, এটাই প্রত্যাশা।’

‘কৃষ্ণপক্ষ’র পরিচালক ও হুমায়ূন আহমেদের সহধর্মিণী মেহের আফরোজ শাওন স্বামীকে স্মরণ করে বলেন, ‘আমার মনে হয় অদৃশ্য হয়ে থাকতে পারলে ভালো হতো। আমি নার্ভাস নই, তবু…। হুমায়ূন আহমেদের ছবি- এটাই বড় কথা। আমাদের সঙ্গে তিনি আছেন, থাকবেন সবসময়। ছবিটি তৈরিতে সংশ্লিষ্ট সবাই খুব কষ্ট করেছেন। একটি দৃশ্যে অভিনয় করার জন্য বড় বড় তারকাকে বলেছি, তারা সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়েছেন। কারণ এটা হুমায়ূন আহমেদের ছবি।’

শাওন আরও জানান, ছবিটির শুটিংয়ের কারণে নিজের দুই সন্তানকে সময় দিতে পারেননি তিনি। এ সময় ওরা নানীর কাছে ছিলো। সংশ্লিষ্ট সবাইকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে দর্শকদেরকে প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে ‘কৃষ্ণপক্ষ’ উপভোগ করার আহ্বান জানান শাওন।

krishnaফিতে কেটে উদ্বোধনী প্রদর্শনীর প্রথম ধাপ শেষ করা হয়। এরপর ছবিটি দেখতে প্রেক্ষাগৃহে প্রবেশ করেন শাওন, রিয়াজ, ফেরদৌস, তানিয়া আহমেদ, আজাদ আবুল কালাম, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, এস আই টুটুল, স্বাধীন খসরুসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা। অনুষ্ঠানে ছিলেন না ছবিটির অন্যতম প্রধান চরিত্র অরু তথা মাহিয়া মাহি। অনুষ্ঠানে তার না আসার কারণও উল্লেখ করা হয়নি।

‘কৃষ্ণপক্ষ’ মুক্তি পাচ্ছে আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি। হুমায়ূন আহমেদের প্রয়াণের পর তার সৃষ্টিকর্ম নিয়ে এটাই প্রথম কোনো ছবি। তাই ছবিটিকে ঘিরে দারুণ কৌতূহল তৈরি হয়েছে দর্শক মনে।

 

ঢাকা জার্নাল, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৬

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.