১০ বছরে প্রাথমিক বিদ্যালয় সংস্কারে অগ্রগতি ৫২ শতাংশ

ফেব্রুয়ারি ২, ২০১৬

priঢাকা জার্নাল: সারা দেশে ৩৭ হাজার ৭২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ১৯ হাজার সাতটি রেজিস্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। বর্তমানে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র-ছাত্রীদের ভর্তির হার ব্যাপকহারে বাড়ছে বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের।

ক্রমবর্ধমান শিক্ষার্থী সংখ্যার পরিপ্রেক্ষিতে বেশিসংখ্যক ছেলে-মেয়ের জন্য উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি ও অবকাঠামো নির্মাণের লক্ষ্যে জরাজীর্ণ অবস্থায় থাকা বিদ্যালয়গুলোর সংস্কার জরুরি হয়ে পড়েছে। বর্তমানে সারাদেশে প্রায় ৯শ’ প্রাথমিক বিদ্যালয় এখনও জরাজীর্ণ।

সারাদেশের জরাজীর্ণ বিদ্যালয়গুলো সংস্কার ও মেরামতের জন্য প্রকল্প নেওয়া হলেও ১০ বছরে অগ্রগতি মাত্র ৫২ শতাংশ বলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর থেকে জানা গেছে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর সূত্র থেকে আরও জানা গেছে, বার বার সময় ও ব্যয় বাড়ার খেলায় যেনো মেতেছে ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পুনঃনির্মাণ ও সংস্কার প্রকল্প’। ভুল পরিকল্পনার মাশুল হিসেবে এখনও ৯শ’ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার কোনো উপযুক্ত পরিবেশ নেই। এর ফলে আবারও সময় ও ব্যয় বাড়ছে প্রকল্পটির।

এ বিষয়ে শিক্ষা অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, দেশের সব জরাজীর্ণ বিদ্যালয় সংস্কার করে শিক্ষার পরিবেশ উন্নত করতে আমরা বদ্ধপরিকর। সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের যথেষ্ট পরিমাণে বরাদ্দ রয়েছে। প্রকল্প, রাজস্ব ও বাজেটের আওতায় সারাদেশের জরাজীর্ণ বিদ্যালয়গুলোর সংস্কার কাজ করছি। এ বিষয়ে একটি রিভিউ করছি আমরা। সংশ্লিষ্টরা যেনো যথাসময়ে প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করেন, সেই বিষয়ে প্রাথমিক তাগিদ দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, দেশে যেনো জরাজীর্ণ প্রাথমিক বিদ্যালয় না থাকে সেই বিষয়েও আমাদের নানা পদক্ষেপ রয়েছে। জরাজীর্ণ প্রাথমিক বিদ্যালয় সংস্কার কাজের ধীর অগ্রগতির বিষয়ে আমরা নানা পদক্ষেপ নেবো। জরাজীর্ণ প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ কাজ টেন্ডারের মাধ্যমে গণপূর্ত ও এলজিইডিকে দেওয়া হয়েছে। তারা কেন বাস্তবায়নে দেরি করছে, এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হবে।

২০০৫ সালে এলজিইডি সারা দেশে অবস্থিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর বিদ্যমান ভৌত অবকাঠামো জরিপ করে। এ জরিপে দেখা যায়, ‍উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ও বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ব্যাপক ‍পুনঃনির্মাণ, সংস্কার ও সম্প্রসারণ করা হলেও এখনও ৯শ’ বিদ্যালয় জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

পাঁচ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় সংস্কারে মূল প্রকল্পে ব্যয় ছিলো এক হাজার ১শ’ ৮২ কোটি টাকা। প্রকল্পটি জুলাই ২০০৬ থেকে জুন ২০১১ মেয়াদে শেষ হওয়ার কথা ছিলো। কয়েক ধাপে এ প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৬শ’ ৬৭ কোটি টাকায়। অন্যদিকে, কয়েকধাপে প্রকল্পের মেয়াদ বেড়ে হয় জুন ২০১৬ সাল পর্যন্ত। তবে জুন ২০১৫ পর্যন্ত প্রকল্পের মোট ব্যয় হয়েছে মাত্র এক হাজার ৩শ’ ৭২ কোটি টাকা।

২০১৫-১৬ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) মোট বরাদ্দ ছিলো ২শ’ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। কিন্তু নভেম্বর ২০১৫ সাল পযর্ন্ত ব্যয় হয়েছে ৯৭ কোটি টাকা বা ৫২ শতাংশ।

পররবর্তীতে ৯শ’ জরাজীর্ণ বিদ্যালয়ের মধ্য থেকে আরও ৬শ’ বিদ্যালয় সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রাথমিক ‍শিক্ষা অধিদফতরের তত্ত্বাবধানে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। পূর্ত কাজের দায়িত্ব পালন করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি)।

শিক্ষার জন্য সুষ্ঠু ও উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করার লক্ষ্যে জরাজীর্ণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন পুনঃনির্মাণ এ প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য। অবসাবপত্র সরবরাহ, নলকূপ স্থাপন ও স্যানিটারি ল্যাট্রিন নির্মাণ করাও প্রকল্পের অন্যতম লক্ষ্য।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উঁচু-নীচু বেঞ্চ, চেয়ার, টেবিল ও স্টিলের আলমারি সরবরাহ করাও এ প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে।

ঢাকা জার্নাল, ফেব্রুয়ারি ০২, ২০১৬

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.