দাসপ্রথা অবসানের ১৫০ বছর পর ক্ষমাপ্রার্থনা

ডিসেম্বর ১০, ২০১৫

17১৮৬৫ সালের ৬ ডিসেম্বর শাসনতন্ত্রের ১৩তম সংশোধনী অনুমোদনের মাধ্যমে মার্কিন কংগ্রেস যুক্তরাষ্ট্রে দাসপ্রথার অবসান ঘটায়। সে ঘটনার দেড় শ বছর পূর্তি উপলক্ষে গত মঙ্গলবার এক ভাষণে প্রেসিডেন্ট ওবামা মনে করিয়ে দেন, প্রতিটি আমেরিকানের স্বাধীনতা ও মুক্তি অন্যান্য সব আমেরিকানের স্বাধীনতা ও মুক্তির সঙ্গে যুক্ত। তা তারা যেখান থেকেই আসুক না কেন, তারা যেমনই দেখতে হোক না কেন, তাদের নামের উপাধি যেমনই হোক না কেন বা তারা যে ধর্মের অনুসারী হোক না কেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মুসলিমবিদ্বেষী বক্তব্য উল্লেখ না করলেও ওবামা তাঁর ভাষণে যে ট্রাম্পের কথাই বলছিলেন, সে কথা বোঝা কারও পক্ষে কঠিন ছিল না।
পরে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জশ আর্নেস্ট সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জানান, ওবামা দেশের মানুষের কাছে এই বক্তব্য নানা সময়ে নানাভাবে দিয়েছেন। তবে সাম্প্রতিক ঘটনাবলির পরিপ্রেক্ষিতে এই বক্তব্যের অতিরিক্ত গুরুত্ব রয়েছে। আর্নেস্ট স্বীকার করেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের মুসলিমবিরোধী বক্তব্যের পাশে ওবামার বক্তব্য তুলনা করলে তাঁদের প্রভেদ খুবই স্পষ্ট হয়। তিনি বলেন, ট্রাম্প তাঁর বক্তব্যে ভীতি ছড়াচ্ছেন ও সরাসরি মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়েছেন।

এদিকে, ডেলাওয়ার অঙ্গরাজ্যের গভর্নর জ্যাক মার্কেল ঘোষণা করেছেন, দাসপ্রথার জন্য তাঁর রাজ্য এ দেশের কৃষ্ণকায়দের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থনা করবে। এক বিবৃতিতে গভর্নর মার্কেল বলেন, বিগত পাপের অপরাধ আমরা দাসপ্রথা অবসানের দেড় শ বছর পরেও বহন করে চলেছি, তা অপনোদনের জন্য জনসমক্ষে, খোলামেলাভাবে সে অপরাধের স্বীকৃতি প্রদান ও তার জন্য ক্ষমা চাইতে হবে।

১৩তম সংশোধনীর ১৫০ বছর পূর্তির আগেই দাসপ্রথার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চেয়ে ডেলাওয়ারের আইন পরিষদে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে। মার্কেল এর প্রতি সমর্থন জানাতে গিয়ে এ কথা বলেন। এই প্রস্তাবের প্রতি আইন পরিষদের ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান উভয় দলের সদস্যরাই সমর্থন জানিয়েছেন। এই প্রস্তাব গৃহীত হলে ডেলাওয়ারসহ দাসপ্রথার জন্য ক্ষমা চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের এমন অঙ্গরাজ্যের সংখ্যা দাঁড়াবে আট।

২০০৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদ এক প্রস্তাবে দাসপ্রথা ও তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বর্ণবৈষম্যমূলক আইনব্যবস্থার জন্য দেশের কৃষ্ণকায় নাগরিকদের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমাপ্রার্থনা করে। এর আগে ১৯৯৮ সালে, দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের সময় প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন আফ্রিকা থেকে দাস আমদানির জন্য ব্যক্তিগত দুঃখ প্রকাশ করেন, তবে আফ্রিকান-আমেরিকান নেতারা তাঁর ওই বক্তব্যকে দাসপ্রথার জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা হিসেবে বিবেচনা করেননি।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.