৪৩তম জন্মদিনে বাংলাদেশ

মার্চ ২৬, ২০১৩

581440_10200900822308797_732188995_nঢাকা জার্নাল: একাত্তরের ২৫ মার্চ কালরাত্রির পর ২৬ মার্চ বাংলাদেশের জন্ম। বাংলাদেশের ৪৩তম জন্মদিনে মঙ্গলবার ভোরের সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গেই বাঙালী জাতির জীবনে সূচনা ঘটবে আরও একটি ঝলমল উৎসব দিনের। রক্ত, অশ্রুস্নাত বিক্ষুব্ধ বিদ্রোহের দিন ২৬ মার্চ।

এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত মহান স্বাধীনতার ৪৩তম দিন। এ ভূ-ভাগের সবচেয়ে বড় অর্জন, বাঙালীর সহস্র বছরের জীবন কাঁপানো ইতিহাস মহান স্বাধীনতা। অসংখ্য শহীদের রক্তে ভেজা, জাতির বীরসেনাদের রক্তস্নাত মুক্তিযুদ্ধের সূচনা দিন।

স্বাধীনতা অর্জন করতে বাঙালী জাতিকে করতে হয়েছে দীর্ঘ সংগ্রাম, দিতে হয়েছে এক সাগর রক্ত। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ধাপে ধাপে পুরো বাঙালী জাতিকে স্বাধীনতার প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ করেন। ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের অব্যবহিত পরেই ভাষার প্রশ্নে একাত্ম হয় বাঙালী। ১৯৪৮, ’৫২ পেরিয়ে ’৫৪, ’৬২, ’৬৬-এর পথ বেয়ে আসে ১৯৬৯। ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানে কেঁপে ওঠে জেনারেল আইয়ুবের শাসন। জনতার সাগরে উন্মাতাল স্রোতধারা। ‘জাগো জাগো বাঙালী জাগো,’ ‘তোমার আমার ঠিকানা- পদ্মা মেঘনা যমুনা,’ ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগানে স্লোগানে প্রকম্পিত হয় গ্রাম-শহর- জনপদ।

দিবসের কর্মসূচি

যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালনে এবার জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে । ঢাকায় প্রত্যুষে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা করা হবে।

সূর্যোদয়ের সাথে সাথে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এরপর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর নেতৃত্বে উপস্থিত বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাগণ পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, বাংলাদেশে অবস্থিত বিদেশি কূটনীতিকবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনগণ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন।

সকালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে শিশু কিশোর সমাবেশ ও কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।

দিনটি সরকারি ছুটির দিন। সকল সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনাসমূহ আলোক সজ্জায় সজ্জিত করা হবে। ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন শহরের প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপসমূহ জাতীয় পতাকা ও অন্যান্য পতাকায় সজ্জিত করা হবে।

দিবস উপলক্ষে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বাণী দিবেন। দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে সংবাদপত্রে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হবে। ইলেকট্রনিক মিডিয়া মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিভিন্ন অনুষ্ঠান প্রচার করবে।

এ উপলক্ষে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী, বাংলাদেশ শিশু একাডেমীসহ বিভিন্ন সংগঠন আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে।

বাংলাদেশ ডাক বিভাগ স্মারক ডাক টিকিট প্রকাশ করবে। দিবসটি উদ্যাপন উপলক্ষে গণযোগাযোগ অধিদপ্তর দিনব্যাপী ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ও সদরঘাট থেকে আশুলিয়া পর্যন্ত নৌপথে বিশিষ্ট শিল্পীগণ দেশাত্মবোধক সংগীত পরিবেশন করবেন।

ঢাকাসহ দেশের সবজেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সিনেমা হলগুলোতে বিনা টিকিটে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শনী ও দেশের সর্বত্র মিলনায়তনে, উন্মুক্ত স্থানে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করবে।      

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দেশের শান্তি ও অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ দোয়া ও উপাসনার আয়োজন করা হবে। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা কেন্দ্র, হাসপাতাল, জেলখানা, সরকারি শিশুসদনসহ অনুরূপ প্রতিষ্ঠানগুলোতে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে।

জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এবং বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসেও দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে অনুরূপ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।

এদিন আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্ট, সিপিবি, জাসদ,বাসদসহ বিভিন্ন দল নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে।

ঢাকা জার্নাল, মার্চ ২৬. ২০১৩।

 

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.