ক্রেতা সেজে হামলা, অস্ত্র একই ধরনের

অক্টোবর ৩১, ২০১৫

Bloger 2ঢাকা জার্নাল: রাজধানীর লালমাটিয়া ও শাহবাগে অভিজিৎ রায়ের বইয়ের দুই প্রকাশনা সংস্থায় ক্রেতা সেজে এসে সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

শুদ্ধস্বর ও জাগৃতি প্রকাশনীর অফিসে এসব হামলায় একই ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে বলেও ধারণা করছে পুলিশ।

শনিবার দুপুরে লালমাটিয়ায় শুদ্ধস্বরের অফিসে হামলায় প্রকাশক আহমেদুর রশীদ চৌধুরী টুটুল এবং দুই ব্লগার তারেক রহিম ও রণদীপম বসু আহত হন।

শাহবাগে আজিজ সুপার মার্কেটে নিজের অফিসে হামলায় জাগৃতি প্রকাশনীর মালিক ফয়সল আরেফিন দীপন নিহত হন হওয়ার খবর পাওয়া যায়। দুটি ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর রাতে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার শেখ মারুফ হাসান বলেন, ঘটনা দুটো প্রায় একই সময় ঘটেছে। হামলাকারীদের উদ্দেশ্য ও মতাদর্শ একই কি না সেটা বলার সময় এখনও আসেনি। আমি দুটো ঘটনাস্থলই দেখেছি। একই ধরনের অস্ত্র দিয়ে হামলা করা হয়েছে। উভয় জায়গায় ক্রেতা সেজে হামলাকারীরা এসেছে।

অতিরিক্ত কমিশনার শেখ মারুফ হাসান জানান, বিকাল ৩টা থেকে ৪টার মধ্যে দীপনকে হত্যা করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।

Bloger 2দীপনের বাবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক জানান, তার ছেলে দুপুর দেড়টার বাসা থেকে বেরিয়ে অফিসে আসেন। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে তার মোবাইলে কল করলে কেউ রিসিভ করেনি। ঘণ্টাখানেক পরে আজিজ সুপার মার্কেটে এসে অফিসে ছেলেকে ‘গলাকাটা’ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন এই অধ্যাপক।

শুদ্ধস্বরের অফিসে হামলায় আহতদের ঢাকা মেডিকেলে আনা হয়। জাগৃতির কর্মচারী আলাউদ্দিন বলেন, শুদ্ধস্বরের মালিককে কুপিয়ে আহত করা হয়েছে শোনার পর থেকে আমি ও স্যারের পরিবারের সদস্যরা তাকে ফোন করতে থাকি। কিন্তু স্যার ফোন ধরছিলেন না।

বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে স্যারের রুমে গিয়ে দেখি উনি উপুড় হয়ে পড়ে আছেন, তার ঘাড়ে কোপের চিহ্ন। তাৎক্ষণিকভাবে মার্কেটের দোকান মালিক সমিতির সবাই জানাই।

পরে পুলিশ এসে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে রক্তাক্ত অবস্থায় দীপনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। এর আগে বেলা আড়াইটার দিকে লালমাটিয়ার সি ব্লকে শুদ্ধস্বরের কার্যালয়ে  হানা দেয় দুর্বৃত্ত দল। তারা তিনজনকে কুপিয়ে আহত করার পর বাইরে তালা মেরে চলে যায়। পরে পুলিশ গিয়ে তালা ভেঙে ঢোকে।

ভেতরে আটকা পড়া ওই তরুণ নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তারা (হামলাকারী) ছিল পাঁচজন। তারা ঢুকেই বলেছিল,  আমরা টুটুলকে মারতে এসেছি’।
Bloger 3তিনি বলেন, তাকেসহ অন্যদের অস্ত্রের মুখে পাশের কক্ষে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। নক করা হলে দরজা খুলে দেওয়া হয়। একজন ঢুকে বলে যে সে বই নিতে এসেছে। তাকে ঢুকতে দিলে বলে, আমার এক ভাই আছে’। এরপর দরজা খুললে তিনজন একসঙ্গে ঢোকে। এদের একজন স্বাস্থ্যবান। একজনের হালকা দাড়ি ছিল। যার হাতে পিস্তল ছিল, তার ১৬-১৭ বছর বয়স।

প্রথমে যে ঢুকেছিল তার কাছে কালো ব্যাগ ছিল। সেখান থেকে চাপাতি বের করে। আমাদের অন্য ঘরে জিম্মি করে রাখে। পরে কুপিয়ে তালা লাগিয়ে চলে যায়। যাওয়ার সময় গুলির শব্দ শুনি।

পরে পুলিশ গিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় টুটুল, ব্লগার তারেক ও রণদীপমকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

ঢাকা জার্নাল, অক্টোবর ৩১, ২০১৫।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.