বিদেশে বসে নতুন ষড়যন্ত্র করছেন খালেদা

অক্টোবর ১০, ২০১৫

37ঢাকা: দেশে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বিদেশে বসে নতুন ষড়যন্ত্র করছেন বলে অভিযোগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

নতুন কৌশল হিসেবে খালেদা জিয়া দেশে থাকা বিদেশি নাগরিকদের হত্যা এবং দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।

শনিবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে গণভবনে গাজীপুর, গোপালগঞ্জ, চট্টগ্রাম, বরিশাল ও রংপুর জেলা আইনজীবী সমিতিতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত নির্বাচিত আইনজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

লন্ডনে থাকা খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্যে করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এখন বিদেশে বসে নতুন  ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন। সেই ষড়যন্ত্র কি? বিদেশে থেকে লবিস্ট রেখে ইউরোপ, ইউকে, ইউএসএসহ বিভিন্ন জায়গায় জামায়াত এবং বিএনপি মিলে নানা ধরনের অপপ্রচার এবং একটা প্যানিক ছড়ানো।
তিনি বলেন, তিনি দেশে থেকে দেশের মানুষ হত্যা করেছেন। এখন আবার তিনি বিদেশে গেছেন। বিদেশে বসে এখন দেশে একটা অস্থিতিশীল অবস্থা সৃষ্টির পরিকল্পনা নিয়েছেন।

এখন নাকি আন্দোলনের কৌশল পাল্টেছেন। সেই কৌশল তিনি ব্যবহার করছেন।

এ কৌশল হচ্ছে, বিদেশে বসে বাংলাদেশে বিদেশিরা যারা আছেন তাদের হত্যা করে বিদেশিদের মধ্যে একটা আতঙ্ক সৃষ্টি করে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করা। দেশে থেকে দেশের মানুষ পুড়িয়ে মারা আর বিদেশে থেকে দেশে থাকা বিদেশিদের মারাই তার আন্দোলন।

দেশবাসীকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখনই দেশের উন্নতি হয়, দেশ যখন আর্ন্তজাতিক পর্যায়ে সম্মানজনক অবস্থানে যায়, তখন বিএনপি-জামায়াত জোটের অন্ত:পীড়া শুরু হয়ে যায়।

দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য তারা উঠে পড়ে লাগে। তখন তারা খুন, নানা ধ্বংসাত্মক কাজ করাসহ যা যা করা দরকার তাই করে। এজন্য জনগণকে সচেতন হতে হবে।

চলতি বছরের শুরুতে বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলনের ব্যর্থতার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি বুঝেছেন, তার আন্দোলনে জনগণ সাড়া দেয়নি। তার ডাকে দেশের মানুষ সাড়া দেয়নি। তিনি ঢাকাবাসীকে ডেকে দেখেছেন, তারাও তার দিকে ফিরেও তাকায়নি। জ্বালাও-পোড়াও করে সরকার উৎখাত, সেটাও তিনি পারেননি। সবদিকে ব্যর্থ হয়ে আদালতেও হাজির হতে হয়েছিলো, নিজের বাড়িতেও ফিরে গিয়েছিলেন।

সহিংসতার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ৯২টা দিন বিএনপি নেত্রী তার পার্টি অফিসে বসে ৬৪  জন মানুষ নিয়ে বলেছিলেন, তিনি সরকার উৎখাত না করে ঘরে ফিরবেন না। আর সরকার উৎখাত করবেন কিভাবে? মানুষ হত্যা করে। জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়, এমন বীভৎস দৃশ্য বোধহয় মানুষ আর কখনোই দেখেনি। শিশু নারী কেউ তাদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি।

দেশে থেকে অফিসে বসে থেকে তিনি মানুষ হত্যা করলেন। গাড়ি পোড়ানো, লঞ্চ পোড়ানো, বাস ট্রেন পোড়ানো, মানে পোড়াও জ্বালাও, মানুষ খুন করা, বোমা মারা, পেট্রোল বোমা মারা এটাই ছিলো তার রাজনীতি। এটাই তার আন্দোলন।

২০০১ পরবর্তী বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা সারা দেশে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করেছিলো। খুন করা ছাড়া তাদের কোনো কাজ ছিলো না।

প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘ সময় ধরে আইনজীবী নেতাদের বিভিন্ন সমস্যা, দাবি-দাওয়ার কথা শোনেন। তাদের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে বলেন, আপনাদের সমস্যা আমি উপলব্ধি করি। দেখবো, কিভাবে এসব সমস্যার সমাধান করতে পারি।

মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম থেকে নির্বাচিত বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য ইব্রাহিম হোসেন বাবুল, চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির সভাপতি মুজিবুল হক চৌধুরী, বরিশাল আইনজীবী সমিতির সভাপতি আনিস উদ্দীন শহীদ ও সাধারণ সম্পাদক কাজী মোহাম্মদ মনিরুল হাসান, রংপুর আইনজীবী সমিতির সভাপতি আব্দুল হক ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক,  গোপালগঞ্জ আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ নাসিরউদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী খান এবং গাজীপুর আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আজমত উল্লাহ খান ও বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইব্রাহিম।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সাবেক আইনমন্ত্রী আব্দুল মতিন খসরু, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন ও আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ প্রমুখ।

১৪২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০১৫

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.