600শেষ পর্যন্ত রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্তকে সামনে রেখেই বিধাননগরে পুর-যুদ্ধে নামল বামেরা। পুরনো বিধাননগর এবং রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভার এলাকা জুড়ে নতুন বিধাননগর পুরনিগমের যে ৪১টি ওয়ার্ডে এ বার ভোট হচ্ছে, তার জন্য রবিবার প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করল বামফ্রন্ট। তালিকায় অসীমবাবু ছাড়াও উল্লেখযোগ্য মুখ বলতে প্রাক্তন বিধায়ক রবীন মণ্ডল এবং প্রয়াত মন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তীর স্ত্রী রমলা চক্রবর্তী আছেন। প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে গৌতম দেব বলেছেন, ‘‘এই ভোটটা আমরা অসীমদার নেতৃত্বে লড়ছি। দীর্ঘ দিন তিনি রাজ্যের অর্থমন্ত্রী ছিলেন। ভারতবর্ষে অর্থমন্ত্রীদের কমিটিরও তিনিই ছিলেন চেয়ারম্যান। সকলে তাঁকে এক ডাকে চেনেন। তাঁকে সহযোগিতা করবেন রবীন মণ্ডল এবং রমলা চক্রবর্তী।’’

সিপিএম সূত্রের খবর, বিধাননগরের বাসিন্দা অসীমবাবু প্রাথমিক ভাবে পুরভোটে দাঁড়াতে রাজি হচ্ছিলেন না। কিন্তু বিধাননগরের পুরভোটে বামেরা কোনও ভাবেই ময়দান ছেড়ে দিচ্ছে না, বরং অভিজ্ঞ মুখকে সামনে রেখে কঠিন লড়াই দিতে চাইছে— এই বার্তা এলাকার মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্যই অসীমবাবুর মতো হেভিওয়েট প্রার্থী দরকার ছিল। গৌতমবাবুদের এই যুক্তি শেষ পর্যন্ত মেনে নিয়েছেন অসীমবাবু। রবিবার সন্ধ্যা থেকে তিনি প্রচারেও নেমে পড়েছেন।

আগে রাজারহাট এবং বিধাননগর মিলিয়ে দু’টি পুরসভায় মোট আসন সংখ্যা ছিল ৬০। এখন নতুন পুরনিগমে ওয়ার্ড সংখ্যা হয়েছে ৪১। কিন্তু বাম ঐক্য অটুট রাখতে পুরনো সূত্রেই সিপিআই, ফরওয়ার্ড ব্লককে দু’টি করে এবং আসপি-কে একটি আসন ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, আসন যা কমল, তা গেল সিপিএমের খাতা থেকেই। ভোটের দিন শাসক দলের সন্ত্রাস মোকাবিলায় বাম, কংগ্রেস এবং এলাকার বিশিষ্ট জনেদের নিয়ে সদ্য আত্মপ্রকাশ করেছে ‘সল্টলেক সিটিজেন্স ফোরাম’। এই নাগরিক মঞ্চের ছাতার তলাতেই কংগ্রেস এবং বামফ্রন্ট একসঙ্গে প্রার্থী দেবে, এমন জল্পনা তৈরি হয়েছিল কোনও কোনও মহলে। বামফ্রন্ট প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে দেওয়ায় আপাতত সেই জল্পনায় ইতি পড়ল।

এই নিয়ে প্রশ্নের জবাবে গৌতমবাবু বলেন, ‘‘ফোরামের হয়ে প্রার্থী দেওয়া হবে, এই রকম কোনও আলোচনা তো হয়নি! ভারতের রাজনীতিতে দুটো (সিপিএম এবং কংগ্রেস) দলের আলাদা অস্তিত্ব আছে। একটা ছোট শহরে এসে তারা হঠাৎ মিলে যাবে, এ রকম হয় নাকি! আমরা শুধু চাইছি, ভোটের সময় তৃণমূলের বাইক বাহিনীর দাপট এলাকার সবাই মিলে যাতে ঠেকিয়ে দেওয়া যায়।’’ তৃণমূলের নেতা তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ইতিমধ্যেই হুঙ্কার দিয়েছেন, বিধাননগরের ফল ৪১-০ হবে। এই নিয়ে গৌতমবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘জ্যোতিপ্রিয়বাবুকে বলুন, খালের ও পারে বাইক রেখে সল্টলেকে আসতে। তার পরে দেখবেন, লোকে কেমন কান মলে দেয়।’’