অপর্যাপ্ত ঘুম বাড়ায় শারীরিক ও মানসিক জটিলতা

সেপ্টেম্বর ৬, ২০১৫

gumসুস্থ শরীরের জন্য অন্যতম প্রয়োজনীয় উপাদান হল ঘুম৷ গবেষকদের মতে যখন প্রয়োজনের চেয়ে ঘুম কম হয় তখন শারীরিক ও মানসিকভাবে বিভিন্ন জটিলতার সৃষ্টি হয়। এতে কোষের স্বাভাবিক কার্যক্রমও ব্যাহত হয়। আরও একটি বিশেষ শারীরিক সমস্যা হল ঠাণ্ডা লাগার সমস্যা৷

একদল মার্কিন গবেষকের দাবি ছয় ঘণ্টার কম ঘুমে শরীরে ঠাণ্ডাজনিত নানা রোগ দেখা যেতে পারে৷ তারা দাবি করেন, যেসব নারী-পুরুষ রাতে ছয় ঘণ্টার কম ঘুমান তাদের অধিকাংশই ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হন। আর যাদের পর্যাপ্ত ঘুম হয়, তাদের ঠাণ্ডার অ্যালার্জিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক কমে। মানুষের ঘুম নিয়ে গবেষণার পরে ‘স্লিপ’ নামে একটি জার্নালে এই বিষয়ক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

গবেষক দলের প্রধান অ্যারিক প্রাথার জানিয়েছেন, যারা দৈনিক ছয় থেকে সাত ঘণ্টা ঘুমান, তাদের মধ্যে মাত্র ১৮ শতাংশ মানুষের ঠাণ্ডার ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। আর যারা দৈনিক পাঁচ ঘণ্টা বা তার কম ঘুমান- তাদের ৩৯ শতাংশই ঠাণ্ডাজনিত রোগে ভোগেন।

গবেষণা থেকে আরও দেখা গিয়েছে, পুরুষ এবং নারী উভয়েরই রাতে কমপক্ষে ছয় ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন। তা না হলে ঠাণ্ডা লাগার সম্ভবনা থাকে৷ যুক্তরাষ্ট্রের ১৬৪ জন নর-নারীর এক সপ্তাহে মোট ঘুমের পরিমাণ পর্যবেক্ষণের পর এমন ফলাফল পাওয়া গিয়েছে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, দৈনিক ছয় ঘণ্টার কম ঘুমান এমন লোকেরা অধিক ঘুমপ্রিয় মানুষের চেয়ে ঠাণ্ডাজনিত সমস্যায় বেশি ভোগেন।

অ্যারিক প্রাথার জানিয়েছেন, যখন প্রয়োজনের চেয়ে ঘুম কম হয়- তখন এটা শারীরিক ও মানসিকভাবে বিভিন্ন জটিলতার সৃষ্টি করে। এতে কোষের স্বাভাবিক কার্যক্রমও ব্যাহত হয়।

সেন্ট লুইস ইউনিভার্সিটির ‘পেডিয়াট্রিক স্লিপ অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের’ পরিচালক শ্যালাইন পারুথি বলেন, প্রয়োজনীয় ঘুম মানব শরীরের ইমিউন সিস্টেম ভালো রাখে।

অ্যামেরিকান একাডেমি অব স্লিপের তথ্য অনুযায়ী তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অধিবাসীরা জীবনের ২৫ বছরেই ঘুমিয়ে কাটান। তবে বর্তমানে মার্কিনিদের প্রয়োজনীয় মাত্রায় ঘুমানো অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে। ১৯৮৫ সালের সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, মার্কিন নাগরিকরা সে সময়ে গড়ে সাত দশমিক ৫০ ঘণ্টা ঘুমাতেন। বর্তমানে তা কমে সাত দশমিক ১৮ ঘণ্টায় দাঁড়িয়েছে। ফলে দেশটির নাগরিকরা ঠাণ্ডাজনিত রোগের পাশাপাশি হৃদরোগ, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস এবং স্থূলতার সমস্যায় বেশি ভোগেন।

অন্য এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যারা দৈনিক নয় ঘণ্টা অথবা তার বেশি সময় ঘুমান তাদের মৃত্যু ঝুঁকি কমে। যদিও এ নিয়ে গবেষকদের মধ্যে ভিন্নমত রয়েছে।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.