অবশেষে চার্জশিট দাখিল : ধর্মবিরোধী লেখালেখির কারণেই খুন
সেপ্টেম্বর ২, ২০১৫ ঢাকা : অবশেষে ব্লগার ওয়াশিকুর রহমান বাবু হত্যা মামলার চার্জশিট দাখিল করেছেন ডিবির পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মশিউর রহমান। বুধবার শেষ বিকেলে ঢাকা সিএমএম আদালতে এ চার্জশিট দাখিল করেন তিনি।
চার্জশিটের ৫ আসামি হলেন- নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য জিকরুল্লাহ ওরফে হাসান, আরিফুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম, জুনায়েদ ওরফে তাহের ও হাসিব ওরফে আব্দুল্লাহ। আসামিদের মধ্যে হাসিব ও জুনায়েদ পলাতক।
এই চার্জশিট দাখিল বিষয়ে গতকাল মঙ্গলবার থেকে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয় আদালত পাড়ায়। তদন্ত কর্মকর্তা চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে মর্মে মিডিয়ায় বক্তব্য প্রচার করলেও বাস্তবে বুধবার বিকেল পৌনে ৫টা পর্যন্ত চার্জশিট না পাওয়ার কথা দৃঢ়তার সাথে জানান আদালতে সংশ্লিষ্ট জিআরও আলতাফ হোসেন।
চার্জশিটে বলা হয়, ব্লগ ও ফেসবুকে কথিত ইসলামবিরোধী লেখালেখির কারণেই ওয়াশিকুরকে খুন করা হয়েছে। গত ২৩ মার্চ যাত্রাবাড়ীর নয়ানগরের একটি বাসায় বৈঠক করে হত্যার চূড়ান্ত পরিকল্পনা করা হয়। বৈঠকে কথিত ‘বড় ভাই’ আব্দুল্লাহ ওরফে হাসিব, শরীফ, তাহের ওরফে জুনায়েদ, আবরার, জিকরুল্লাহ, আরিফুল ও সাইফুল উপস্থিত ছিল।
পরিকল্পনায় ওয়াশিকুরকে চাপাতি দিয়ে মাথা ও ঘাড়ে কুপিয়ে হত্যার নির্দেশনা দেয় হাসিব। বৈঠকে আটজন অংশ নিলেও হত্যা করতে যায় চারজন। দু’জন চাপাতি নিয়ে বাসার কাছে ওৎ পেতে থাকে। কাছাকাছি এলাকায় অবস্থান নেয় একজন, নির্দেশনা অনুযায়ী দূরে থাকে আরেকজন।
ওঁত পেতে থাকা দুই মাদরাসাছাত্র জিকরুল্লাহ ও আরিফুল কুপিয়ে হত্যা করে বাবুকে। আর দ্রুত সটকে পড়ে জুনায়েদ ওরফে তাহের নামের আরেকজন। সাইফুল নামের আরেক যুবক চাপাতি নিয়ে নির্দেশনার অপেক্ষায় থাকে।
আসামিদের মধ্যে জিকুরুল্লাহ এবং আরিফুল হত্যাকাণ্ডের পরই জনতার হাতে আটক হয়। জিকুরুল্লাহ চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদরাসার তাফসির বিভাগের ছাত্র। আরিফুল মিরপুর-১ নম্বরের দারুল উলুম মাদরাসার ছাত্র, বাড়ি কুমিল্লার তিতাস উপজেলার বারকাউলিয়ায়। সাইফুল যাত্রাবাড়ীর একটি মাদরাসার ছাত্র।
উল্লেখ্য, গত ৩০ মার্চ তেজগাঁওয়ের বেগুনবাড়ীর দিপীকা মোড়ে ওয়াশিকুরকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যার পর পালানোর সময় হিজড়া ও এলাকাবাসী মিলে দুজনকে আটক করে। এ ঘটনায় ওয়াশিকুরের ভগ্নিপতি মনির হোসেন মাসুদ বাদী হয়ে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় হত্যা মামলা করেন।
ওয়াশিকুর মতিঝিলের ফারইস্ট অ্যাভিয়েশন নামে একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে ট্রেইনি অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বাবা টিপু সুলতানের সঙ্গে তিনি বেগুনবাড়ীর ৪/৩-এ ভবনের দ্বিতীয় তলায় একটি কক্ষে সাবলেট থাকতেন। তাদের গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপেজলার উত্তর হাজীপুরে।