সরকার গণপ্রতারকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে
সেপ্টেম্বর ১, ২০১৫
সিপিবি-বাসদ-এর অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশি বাধা
সরকার গণপ্রতারকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে,দাবি আদায় না হলে ৮ সেপ্টেম্বর অবস্থান কর্মসূচিগ্যাস-বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ এর জ্বালানি মন্ত্রণালয় অভিমুখে মিছিলে পুলিশ বাধা দিয়েছে।
পুলিশি বাধার পর অনুষ্ঠিত সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেছেন, বর্তমান সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত না হওয়ায়, জনগণের প্রতি সরকারের কোন দায় নেই। জনগণের সমর্থন ছাড়া ক্ষমতায় টিকে থাকতে সরকারকে পুলিশ-প্রশাসন, আমলা আর গু-াদের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।
আর এদের খুশী করতে লুটপাট বাড়াতে হচ্ছে। সরকার একের পর এক গণবিরোধী সিদ্ধান্ত নিচ্ছে এবং জনগণের সাথে প্রতারণা করছে। সরকার এখন প্রকৃতপক্ষে গণপ্রতারকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে।
আজ ৩১ আগস্ট সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে সিপিবি-বাসদ-এর একটি মিছিল জ্বালানি মন্ত্রণালয় অভিমুখে যাত্রা করে।
কিছুদূর অগ্রসর হওয়ার পর সচিবালয়ের প্রবেশমুখে পুলিশ কাঁটাতারের বেরিকেড দিয়ে মিছিলকে আটকে দেয়। সেখানেই নেতা-কর্মীরা শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান নেন। সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ-এর সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, সিপিবি’র প্রেসিডিয়াম সদস্য সাজ্জাদ জহির চন্দন, সিপিবি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদ-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রাজেকুজ্জামান রতন। সমাবেশটি পরিচালনা করেন বাসদ-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশীদ ফিরোজ।
সমাবেশে খালেকুজ্জামান বলেছেন, গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি অযৌক্তিক, গণবিরোধী। সরকার যুক্তির কাছে হেরে পুলিশ ও রায়টকার দিয়ে জনরোষ মোকাবেলা করতে চাইলে, জনগণ তার পাল্টা জবাব দেবে। গণবিরোধী অবস্থান ও সিদ্ধান্ত নিয়ে অতীতে কেউ ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে পারেনি, এ সরকারও পারবে না।
সভাপতির বক্তব্যে সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ বলেন, সরকার জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসেনি। তাই সরকার জনগণের স্বার্থের তোয়াক্কা করে না।
জনগণের ক্ষতি করে হলেও সরকার লুটেরাদের স্বার্থ রক্ষায় ব্যস্ত। দাম কমানোর জন্য সরকারকে ৭ দিন সময় দিয়ে তিনি বলেন, এ সময় জেলা উপজেলায় বিক্ষোভ সংগঠিত করা হবে এবং দাবি না মানলে ৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে।
সাজ্জাদ জহির চন্দন বলেন, দ্রব্যমূল্য লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম আরো বাড়বে। বাড়ি ভাড়া, গাড়ি ভাড়া বাড়বে। সংসদীয় কমিটি জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। বিইআরসি জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের তাবেদারি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।
রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, সরকারের ভুল নীতি ও দুর্নীতির কারণে অতীতে বিদ্যুৎ-গ্যাস এর উৎপাদন খরচ বেড়েছে। এর দায় জনগণ নেবে না। এখন গ্যাস সেক্টর লাভে চলছে।
গ্যাস উন্নয়ন তহবিলে ৫ হাজার কোটি টাকা রয়েছে। তেলের দাম সমন্বয় করলে বিদ্যুতের দাম কমে আসবে। তারপরও এই দাম বাড়ানো হয়েছে আইএমএফ ও দেশি-বিদেশি লুটেরাদের খুশী করার জন্য।
বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, দাম বৃদ্ধির যুক্তি হিসেবে বেতন বৃদ্ধির কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু মাত্র ৪% মানুষের বেতন বৃদ্ধি করা হয়েছে। তার জন্য সব মানুষের পকেট কাটা কোন যুক্তি হতে পারে না।
রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, বিইআরসি’র বিরুদ্ধে আইনভঙ্গ করেছে। ৯০ দিন পরে এই সিদ্ধান্তের কোন আইনি ভিত্তি নেই। মূল্য বৃদ্ধির টাকা শাসক দলের বিভিন্ন পর্যায়সহ কোম্পানিতে ভাগ-বাটোয়ারা করা হবে। এখানে জনগণের কোন স্বার্থ নেই।