সোয়ান শ্রমিকদের উপর অতর্তিক হামলাকারিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি

আগস্ট ৫, ২০১৫

Swan 2ঢাকা জার্নাল: বিমানবন্দর রেলস্টেশনে পুলিশ ও সন্ত্রাসী বাহিনীর যৌথ হামলায় প্রতিবাদ জানিয়েছেন সোয়ান গার্মেন্টের আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর

মঙ্গলবার সোয়ান গার্মেন্টের আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর বিমানবন্দর রেলস্টেশনে পুলিশ ও সন্ত্রাসী বাহিনীর যৌথ হামলা চালায়।

চারমাসের বকেয়া মজুরি পরিশোধ, কারখানা খুলে দেওয়া এবং শ্রমিকদের নামে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করার দাবিতে সোয়ান গার্মেন্ট শ্রমিকরা গত ১২ জুলাই থেকে টানা আনেআলন চালিয়ে যাচ্ছেন।

চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে মঙ্গলবার জাতীয় যাদুঘরের সামনে সংহতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে ৬ শতাধিক শ্রমিক কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ট্রেনে করে এয়ারপোর্ট রেলস্টেশনে যায়। সেখান থেকে শ্রমিকদের যার যার বাড়িতে যাবার কথা থাকলেও, স্টেশনে পৌঁছামাত্র পুলিশ, রেলওয়ে পুলিশ, আনসার এবং সাদা পোশাকে গজারি লাঠিধারী এবং সন্ত্রাসীরা একযোগে শ্রমিকদের উপর হামলা চালায়।

Garmentsএসময় হামলাকারিরা নির্বিচারে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে শ্রমিকদের বেধড়ক লাঠিপেটা করে। তাদের বর্বরোচিত হামলায় শতাধিক শ্রমিক আহত হয়। এসময় শ্রমিকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র গাজীপুর জেলা কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক মো. জুয়েল, শ্রমিকনেতা আল আমিন, সোয়ান গার্মেন্ট শ্রমিক আরিফুল ইসলামকে আটক করে স্টেশনের বদ্ধঘরে গভীর রাত পর্যন্ত নির্মম নির্যাতন করা হয়। এক পর্যায়ে শ্রমিকরা পুনরায় একত্রিত হয়ে বিক্ষোভ শুরু করলে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।

এরপর আহতদের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেয়া হয়। এখনো অনেকে সেখানে চিকিৎসারত আছেন। গুরুতর আহত অবস্থায় শ্রমিকনেতা মো. জুয়েল, সোয়ান শ্রমিক হাসিনা আক্তার, ইয়ারজান বানু, জুলেখা বেগমকে রাতেই শ্যামলীর উঝক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি অ্যাডভোকেট মন্টু ঘোষ, কার্যকরি সভাপতি সাদেকুর রহমান শামীম, সাধারণ সম্পাদক কাজী রুহুল আমিন এক বিবৃতিতে চার মাসের বেতন বঞ্চিত সোয়ান গার্মেন্টের অনাহারী শ্রমিকদের উপরে এই বর্বরোচিত হামলার তীব্র প্রতিবাদ জানান। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে ঘটনার সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তারা।

নেতৃবৃন্দ বলেন, চারমাস ধরে সোয়ান গার্মেন্টের শ্রমিকরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে আসছে। এই আন্দোলনে সারাদেশের গার্মেন্ট শ্রমিক, মেহনতি মানুষ, বিবেকবান সকলের সমর্থন আছে। শ্রমিকদের দাবি মেনে না নিয়ে এহেন পুলিশ-সন্ত্রাসী যৌথ হামলার দায় দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে।

দোষীদের যদি অবিলম্বে শাস্তির আওতায় না আনা হয় এবং ২০০৬ সালের অভিজ্ঞতা যদি সরকার ও মালিকপক্ষ ভুলে গিয়ে থাকে তাহলে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটবে।  সকাল থেকে উত্তরা, দক্ষিণখান, আশুলিয়া, গাজীপুর, কাচপুর, তেজগাঁও, খিলগাঁও, নারায়ণগঞ্জ, বাড্ডা, শ্যামপুর, ভালুকা, কুমিল্লা, চট্টগ্রামসহ দেশের গার্মেন্ট শিল্পাঞ্চল সমূহে সোয়ান শ্রমিকদের উপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও দাবির সমর্থনে প্রচার অভিযান পরিচালিত হয়েছে। প্রেসবিজ্ঞপ্তি।

ঢাকা জার্নাল, আগস্ট ৪, ২০১৫।

 

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.