জিয়ার মরণোত্তর বিচার হওয়া উচিত

জুলাই ২২, ২০১৫

Inuঢাকা জার্নাল: কর্ণেল তাহেরকে অন্যায়ভাবে হত্যার জন্য জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার দাবি করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু । একইসথে যুদ্ধাপরাধী-জঙ্গিবাদী অপশক্তিকে চিরতরে বিতাড়নের জন্য রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে তোলার উদাত্ত আহ্বান জানান তিনি।

মঙ্গলবার (২১ জুলাই) মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার কর্ণেল আবু তাহেরের ৩৯তম শাহাদৎ বার্ষিকীতে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল কার্যালয়ে (জাসদ) তার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সভাপতির বক্তব্যে এ দাবি জানান তথ্যমন্ত্রী।

হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘জেনারেল জিয়া তার ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে গভীর ষঢ়যন্ত্রের অংশ হিসেবে ১৯৭৬ সালের এই দিনে আদর্শবান মুক্তিযোদ্ধা তাহেরকে হত্যা করেন। বীর উত্তম কর্ণেল তাহেরকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করার সাথে সাথে ইতিহাসের খলনায়ক জিয়াউর রহমানসহ সকল হত্যা খুনের অপরাধীদের মরণোত্তর বিচারের ব্যবস্থা করার জন্য নিজের এবং জাসদের পক্ষ থেকে দেশবাসী ও সকল সংসদ সদস্যের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’

মন্ত্রী এসময় বিশ্বের অন্যান্য দেশে এধরনের ঘৃণ্য অপরাধের জন্য প্রচলিত মরণোত্তর বিচার ব্যবস্থার উদাহরণ তুলে ধরেন।

‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে সা¤প্রদায়িক অপশক্তির আমদানী, যুদ্ধাপরাধী-রাজাকারদের পুণর্বাসন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে খাটো করা, ইতিহাসবিকৃতি, বঙ্গবন্ধু ও গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠানোর গভীর ষড়যন্ত্র চরিতার্থ করতে জিয়াউর রহমান কর্ণেল তাহেরকে অন্যায়ভাবে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করেছেন। কিন্তু কর্ণেল তাহের আমাদের মাঝ থেকে হারিয়ে গেলেও জেনারেল জিয়া তার ক্ষমতা ধরে রাখতে পারেননি’, বলেন তথ্যমন্ত্রী।

‘গোপন বিচারে দেশপ্রেমিক কর্ণেল তাহেরকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা যে অন্যায় ছিল এবং জেনারেল জিয়া যে একজন ঠান্ডামাথার খুনী, আদালতের রায়ে তা আজ সুস্পষ্ট’ উলে­খ করে হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘জিয়া এবং তার উত্তরসূরীরা ক্যান্টনমেন্টকে কসাইখানা বানিয়েছেন, শেখ হাসিনাকে হত্যার জঘন্য অপচেষ্টা করেছেন, আগুনসন্ত্রাস করে মানুষ হত্যা করেছেন।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘জেনারেল জিয়ার সেই চক্রান্তের জাল আর সামরিক শাসন-সা¤প্রদায়িক-আগুনসন্ত্রাসের জঞ্জাল থেকে দেশকে মুক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার দেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গণতান্ত্রিক ধারায় এগিয়ে নিয়ে যাবার পথে রাজনীতির খলনায়ক জিয়াউর রহমানের উত্তরসূরী আগুনসন্ত্রাসী-জঙ্গিবাদীদের সাথে কোন ছাড় বা আপোশের সুযোগ নেই।’

যুদ্ধাপরাধী-জঙ্গিবাদী অপশক্তির দিকে ইঙ্গিত করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘হয় ওরা থাকবে, না হয় আমরা। আর মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে জন্ম নেয়া বাংলাদেশে আমাদেরই বিজয় হবে।’

রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে তুলে যুদ্ধাপরাধী-জঙ্গিবাদী অপশক্তিকে চিরতরে বিতাড়নের মাধ্যমে কর্ণেল তাহেরসহ সকল বীরকে স্বমহিমায় ফিরিয়ে আনার উদাত্ত আহ্বান জানান হাসানুল হক ইনু।

জাতীয় শ্রমিক জোট সভাপতি শিরিন আকতার এমপি, কর্ণেল তাহেরের স্ত্রী লুৎফা তাহের এমপি, জাসদের সাধারণ সম্পাদক শরীফ নূরুল আম্বিয়া, জাতীয় নারীজোটের সভাপতি আফরোজা হক রীনা, জাসদ মহানগরের প্রধান সমন্বয়ক মীর হোসেন আখতার, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সামছুল ইসলাম সুমন প্রমূখ তাদের আলোচনায় কর্ণেল তাহেরের ত্যাগ ও বিপ্লবী আদর্শ তুলে ধরেন।

এর আগে এর আগে বীর উত্তম কর্ণেল তাহের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন শেষে জাসদ সভাপতির পরপরই কর্ণেল তাহেরের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন জাতীয় শ্রমিক জোট সভাপতি শিরিন আকতার এমপি, লুৎফা তাহের এমপি, জাসদ মহানগর উত্তর, পূর্ব এবং পশ্চিম শাখার সভাপতি যথাক্রমে বীরমুক্তিযোদ্ধা শফিউদ্দীন মোাল্লা, শহিদুল ইসলাম ও মাইনুর রহমান, জাসদ মহানগরের প্রধান সমন্বয়ক মীর হোসেন আখতার, জাতীয় নারীজোটের সভাপতি আফরোজা হক রীনা এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সামছুল ইসলাম সুমন।

ঢাকা জার্নাল, জুলাই ২২, ২০১৫।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.