খালেদার বিবর্ণ ঈদ

জুলাই ১৮, ২০১৫

khaledaঢাকা জার্নাল: ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুর পর প্রথম ঈদ পালন করতে যাচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।

গত সাত বছরে অন্তত ১৪টি ঈদ দুই ছেলেকে ছাড়াই কেটেছে খালেদা জিয়ার। ছেলেরা পরিবার-পরিজন নিয়ে লন্ডন, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া বা থাইল্যান্ডে ঈদ উদযাপন করায় দূরে থাকার যন্ত্রণা ভোগ করতে হলেও হারানোর যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়নি খালেদা জিয়াকে।

কিন্তু এবার তাকে ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোকে হারানোর যন্ত্রণা নিয়েই ঈদ করতে হবে। ঈদানন্দ বিষাদে পরিণত হবে তার জন্য।

বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সূত্রে জানা গেছে, ঈদের দিন সকাল সাড়ে ১১টা থেকে সোয়া ১টা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিদেশি কূটনীতিক, বিশিষ্টজন, দলীয় নেতা-কর্মী ও সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিয়ময় শেষে  শেরেবাংলানগরে স্বামী জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত করবেন খালেদা জিয়া।

এর পর সেখান থেকে সোজা চলে যাবেন বনানী কবরস্থানে। সেখানে চিরনিদ্রায় শায়িত ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর কবরের পাশে কিছু সময় কাটাবেন তিনি।

সংশ্লিষ্টসূত্রে জানা গেছে, ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরের পর সব ঈদেই লন্ডন প্রবাসী বড় ছেলে তারেক রহমান, ছেলের বউ জোবায়দা রহমান, নাতনি জাইমা রহমান, মালয়েশিয়া প্রবাসী ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো, ছেলের বউ সৈয়দা শর্মিলা রহমান সিঁথি, নাতনি জাফিয়া ও জাহিয়ার সঙ্গে ওভার টেলিফোনে আনন্দ ভাগাভাগির মধ্য দিয়ে দিনের কাজ শুরু করতেন খালেদা জিয়া।

সুদূর প্রবাসে থাকা দুই ছেলে, পুত্রবধূ ও নাতনিদের অভাববোধ করলেও তারা সুস্থ ও নিরাপদে আছে-এটিই ছিলো তার শান্ত্বনা। কিন্তু গত ২৪ জানুয়ারি হঠাৎ করে ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যু হয়।

নাড়িছেঁড়া ধন, প্রিয় সন্তানের মৃত্যুর সাত মাসের মাথায় পাওয়া ঈদ কীভাবে কাটবে ‘মা’ খালেদা জিয়ার-তা বর্ণানাতিত! তবে এটুকু বলা যায়, আর দশজন মায়ের মতো তার বুকও বিদির্ণ হবে প্রিয় সন্তান হারানোর যন্ত্রণায়।

মাত্র ৩৬ বছর বয়সে ১৯৮১ সালে স্বামী (জিয়াউর রহমান) হারানোর পর দুই সন্তান তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোকে নিয়ে বেঁচে ছিলেন খালেদা জিয়া। সত্তরের কোটায় এসে জীবনের পড়ন্ত বেলায় প্রিয় পুত্রকে হারিয়েছেন তিনি।

বাবা হারা নাতনি দু’টিও পাশে নেই তার। বিধবা পুত্রবধূও সুদূর পরবাসে। চিকিৎসার জন্য বাইরে থাকা বড় ছেলে ও তার স্ত্রী কন্যাকেও ঈদের সময় পাশে পাচ্ছেন না খালেদা জিয়া।

গত কয়েক বছর রোজায় শেষ দশ দিন ওমরা পালনের জন্য সৌদি আরব অবস্থানকালে ছেলে, ছেলের বউ ও নাতনিদের সঙ্গে দেখা হয়েছে। কিন্তু এ বছর সৌদি সফর বাতিল করায় সে সুযোগও হাতছাড়া হয়েছে খালেদা জিয়ার।

ঢাকা জার্নাল, জুলাই ১৭, ২০১৫

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.