মেট্রোরেল আইনের খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন মন্ত্রিসভায়

নভেম্বর ১০, ২০১৪

downloadঢাকা জার্নাল: ‘মেট্রোরেল আইন, ২০১৪’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা প্রেস ব্রিফিংয়ে এ অনুমোদনের কথা জানান।

তিনি বলেন, এ আইনের অধীনে মেট্রোরেল পরিচালনার জন্য ঢাকা ম্যাস ট্রান্সপোর্ট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) গঠন করা হবে। ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) হবে ডিএমটিসিএল-এর নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা।

এর আগে গত ২৮ এপ্রিল এ আইনের খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছিল মন্ত্রিসভা।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে বিশেষ বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে খসড়া আইনে। মেট্রোরেল ও যাত্রীদের বীমাও বাধ্যতামূক করা হয়েছে আইনে।

প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকায় মেট্রোরেল (ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট- এমআরটি ৬) প্রকল্পের কাজ চলছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এরমধ্যে সরকার পাঁচ হাজার ৪০০ কোটি ও জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) দেবে ১৬ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।

তিনি বলেন, মেট্রোরেল উত্তরার তৃতীয় পর্ব থেকে উত্তরা সেন্টার, পল্লবী, মিরপুর-১০ সেকশন হয়ে কাজীপাড়া, রোকেয়া সরণির পশ্চিম পাশ দিয়ে খামারবাড়ি হয়ে ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, টিএসসি, দোয়েল চত্বর হয়ে তোপখানা রোড দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত যাবে। এ পথে ১৬টি স্টেশন থাকবে। দুপাশে ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহন করা যাবে। নকশা প্রণয়নের কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।মোশাররাফ হোসাইন বলেন, খসড়া আইনে মেট্রোরেলের ভাড়া নির্ধারণ, কারিগরি মানদণ্ড নির্ধারণ, পরিদর্শন ও মনিটরিংয়ের বিধান রাখা হয়েছে। আইন লঙ্ঘণ করলে শাস্তির কথা বলা হয়েছে। মেট্রোরেল পরিচালনার জন্য লাইসেন্স নিতে হবে বলেও আইনে বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে সরকারি প্রতিষ্ঠানকেও লাইসেন্স নিতে হবে, তবে বেসরকারি অপারেটরদের মতো ফি দিতে হবে না।

‘ভাড়া নির্ধারণ ও লাইসেন্স দেওয়ার জন্য কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছে খসড়া আইনে। ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক হবেন এ দুই কমিটির প্রধান।’

ডিটিসিএ’র সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরকারের কাছে আপিল করার বিধান রয়েছে বলেও জানান মোশাররাফ হোসাইন।
লাইসেন্স ছাড়া মেট্রোরেল পরিচালনা করা, অনুমোদন ছাড়া মালিকানা হস্তান্তর, চলাচলে বাধা সৃষ্টি করলে, বিনা টিকেটে ভ্রমণ করা, নিরাপত্তা বিঘ্নিত করলে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে খসড়া আইনে।

সর্বোচ্চ শাস্তির মধ্যে রয়েছে ১০ বছর কারাদণ্ড ও এক কোটি টাকা জরিমানা। লাইসেন্স ছাড়া মেট্রোরেল পরিচালনা, অনুমোদন ছাড়া লাইসেন্স হস্তান্তর ও অনুমোদিতভাবে মেট্রোরেলের টিকেট বিক্রি করলে করলে এ শাস্তি দেওয়া হবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

তিনি আরও বলেন, কেউ কাউকে বেআইনীভাবে বাধা দিলে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড ও দুই লাখ টাকা জরিমানা। এছাড়া মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনা কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি এবং সংরক্ষিত স্থানে প্রবেশ করলে সর্বোচ্চ এক বছর কারাদণ্ড ও পাঁচ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে আইনে।

নিরাপত্তা বিঘ্নিত করলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ লাখ টাকা জরিমানা, মেট্রোরেলের যন্ত্রের অপব্যবহার করলে এক বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। এছাড়া বিনা টিকেটে মেট্রোরেলে ভ্রমণ করলে ভাড়ার ১০ গুন জরিমানা গুনতে হবে, জরিমানা না দিলে ছয় মাসের কারাদণ্ডের বিধানও রয়েছে খসড়া আইনে।

ঢাকা জার্নাল, নভেম্বর ১০, ২০১৪।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.