খালেদার বাড়ির পথে চালকদের মিছিল

ডিসেম্বর ২, ২০১৩
Untitled-1 copy_32452ঢাকা জার্নাল: টানা অবরোধ ও ভাংচুর-অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবহন চালক-শ্রমিকরা বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়ার বাড়ি ঘেরাও করতে মিছিল নিয়ে এগোলেও পুলিশ তাদের গুলশান থেকে ফিরিয়ে দিয়েছে।

সোমবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে ‘সম্মিলিত গাড়িচালক সমাজ’ ব্যানারে মহাখালী বাস স্ট্যান্ড থেকে প্রায় হাজারখানেক চালকের এই মিছিল শুরু হয়।

দুনিয়ার মজদুর এক হও’; ‘আমার ভাই মরলো কেন, খুনি খালেদা জবাব দে’; ‘ঘেরাও ঘেরাও ঘেরাও হবে, খালেদা জিয়া ঘেরাও হবে’- ইত্যাদি স্লোগান দিতে দিতে তারা গুলশানে খালেদা জিয়ার বাড়ির দিকে এগোতে থাকেন।

মিছিলে অংশ নেয়া টেক্সিক্যাব চালক আশরাফ আলী  বলেন, “বিভিন্ন সময় হরতাল অবরোধে গাড়ি ভাংচুর করা হয়, গাড়িতে আগুন দেয়া হয়। আন্দোলনকারীরা আমাদের ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়। এর প্রতিবাদে আমরা বিরোধী দলীয় নেত্রীর বাসভবন ঘেরাওয়ে যাচ্ছি।”

মিছিলটি কাকলী মোড় পার হয়ে গুলশান ২ মোড়ে পৌঁছানোর পর পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এ সময় পরিবহন চালকরা পুলিশের বাধা ডিঙিয়ে এগোতে চাইলেও পরে ব্যর্থ হয়ে রাস্তায় শুয়ে পড়েন এবং স্লোগান দিতে থাকেন।

পরে পুলিশ তাদের দুজন প্রতিনিধিকে স্মারকলিপি নিয়ে বিরোধী দলীয় নেতার কাছে যাওয়ার সুযোগ দিতে চাইলেও তাতে রাজি না হয়ে আবার মহাখালীর দিকে ফিরে আসেন আন্দোলনে নামা চালকরা।

মহানগর পুলিশের গুলশান জোনের এডিসি আয়শা সিদ্দিকা বলেন, “আমরা নিরাপত্তার স্বার্থে এবং বিশৃঙ্খলা হস্তক্ষেপ করেছি।”

গুলশান থানার ওসি নুরুল আলম বলেন, “তারা সবাই লিখিত দাবি নিয়ে খালেদা জিয়ার কাছে যেতে চান। আমরা তাদের বুঝিয়েছি, এটা কূটনৈতিক এলাকা, এটা সম্ভব নয়। তাদের দুজনকে স্মারকলিপি নিয়ে আমাদের সঙ্গে যেতে বললেও তারা রাজি হননি।”

ফেরার পথে টেক্সিক্যাব চালক আশরাফ আলী বলেন, “হরতাল অবরোধের নামে সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে মারা ও সহিংসতা বন্ধ করতে আমরা এই আন্দোলন শুরু করেছি। যতোক্ষণ না সহিংসতা বন্ধ না হচ্ছে, ততোক্ষণ আমাদের এই আন্দোলন চলবে।”

আওয়ামী মোটর চালক লীগের তেজগঁও থানার সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ বলেন, “আমার ড্রাইভার, আমাদের ওপর কেন আক্রমণ? হরতাল বা অবরোধের আগের দিন কেন গাড়ি পোড়ানো হয়? আমরা এর জবাব চাই। ”

মিছিলে অংশ নেয়া ট্যাক্সি ক্যাব চালক রবিউল জানান, তার গাড়ি গত ২৮ নভেম্বর বিজয়নগর এলাকায় পুড়িয়ে দেয়া হয়। তার হাতও পুড়ে যায়।

ঢাকা জেলা অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয়  সাংঠনিক সম্পাদক রমজান আলী বলেন, “আমরা কোনো দলের না, আমরা শ্রমিক।  আমাদের কেউ আগুন পুড়ে মারা গেলে বা ক্ষতিগ্রস্ত হলে পুরো পরিবারকে ভুগতে হয়।

নির্বাচনের তফসিল প্রত্যাখ্যান করে গত ২৬ নভেম্বর থেকে ৭১ ঘণ্টার অবরোধের পর শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রতিবাদে দ্বিতীয় দফায় ৭২ ঘণ্টার অবরোধ ডাকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলীয় জোট।

তবে এ কর্মসূচির শেষ দিন সোমবার অবরোধের সময় আরো ৫৯ ঘণ্টা বাড়িয়ে বৃহস্পতিবার বিকাল পর্যন্ত অবরোধ চলবে বলে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়।

দুই দফার অবরোধে বিভিন্ন স্থানে বিপুল সংখ্যক গাড়ি ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের শিকার হয়। এসব ঘটনায় বহু যাত্রী ও চালক হতাহত হন।

যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, বিরোধী দলের সাম্প্রতিক আন্দোলনে নাশকতার শিকার হয়ে এ পর্যন্ত ৪০ জন চালকের মৃত্যু হয়েছে।

ঢাকা জার্নাল, ডিসম্বের ২, ২০১৩।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.