সান্ত্বনার জয়

নভেম্বর ৭, ২০১৩

সংক্ষিপ্ত স্কোর: নিউ জিল্যান্ড: ২০ ওভারে ২০৪/৫ (ডেভসিচ ৫৯, রাদারফোর্ড ১৭, টেইলর ২৮, মানরো ৭৩*, অ্যান্ডারসন ১৮, রঞ্চি ০, ম্যাককালাম ০*; আল-আমিন ২/৩১, রাজ্জাক ১/১৯, জিয়া ১/২৬, সোহাগ ১/৩০)

বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৮৯/৯ (শামসুর ৪, জিয়া ৬, মুমিনুল ৯, মুশফিক ৫০, নাঈম ১৮, নাসির ২৮, মাহমুদুল্লাহ ৩৪, সোহাগ ২৪, মাশরাফি ৭*, রাজ্জাক ০, আল-আমিন ৫*; সাউদি ৩/৩৮, অ্যান্ডারসন ২/২১, ম্যাককালাম ১/১৮, মিলস ১/৩২, ম্যাকক্লেনাগান ১/৪৫)

ম্যাচ সেরা: কলিন মানরো

mushfiqueঢাকা জার্নাল: বাংলাদেশ সফরে অবশেষে জয় পেয়েছে নিউ জিল্যান্ড। একমাত্র টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশকে ১৫ রানে হারিয়ে কিছুটা সান্ত্বনা নিয়ে ফিরতে পারছে তারা।

তবে বাংলাদেশকে ২০৫ রানের লক্ষ্য দিয়ে নিউ জিল্যান্ড যতটা সহজে ভেবেছিল, ততটা সহজে জয়টা পায়নি। লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে বেশিরভাগ সময় প্রয়োজনীয় রানরেট বজায় রেখে চললেও শেষদিকের ব্যর্থতায় ৯ উইকেট হারিয়ে ১৮৯ রান পর্যন্ত তুলতে পারে স্বাগতিকরা।

টি-টোয়েন্টিতে এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান। এর আগে গত বছর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৫ উইকেটে ১৯০ রান করেছিল মুশফিকুর রহিমের দল।

মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে বুধবার বড় সংগ্রহ তাড়া করতে নেমে শুরুতেই তিনটি উইকেট হারালেও ভীষণ আক্রমণাত্মক ছিলেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। টিম সাউদির করা প্রথম ওভারেই দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান শামসুর রহমান ও জিয়াউর রহমান বিদায় নেন।

পরের ওভারেই মুমিনুল হকের বিদায় বাংলাদেশের ওপর চাপ আরো বাড়ায়। তবে মুশফিকুর রহিম ও নাঈম ইসলামের পাল্টা আক্রমণ খেলায় ফেরায় স্বাগতিকদের। তৃতীয় ওভারের পঞ্চম বল থেকে পঞ্চম ওভারের দ্বিতীয়, এই টানা দশ বলে মুশফিক আর নাঈমের রান এমন- ৪, ৪, ৪, ৪, ৪, ১, ৪, ৬, ৪ ও ৪।

১০ বল স্থায়ী এই ঝড়ের পর টিম সাউদির দুর্দান্ত ক্যাচ হয়ে বিদায় নেন নাঈম (১০ বলে ১৮)। এরপর প্রথম ছয় বলের চারটিকেই বাউন্ডারিতে পরিণত করা নাসিরের সঙ্গে মুশফিকের ৪৮ রানের ৫৪ রানের জুটি কক্ষপথেই রাখে বাংলাদেশকে।

ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো অর্ধশতকে পৌঁছেই মুশফিকের বিদায় বড় একটা খায় বাংলাদেশ। অধিনায়কের ২৯ বলের ইনিংসে ছিল ৭টি চার ও ১টি ছক্কা।

পরের ওভারের শেষ বলে নাসিরের (২০ বলে ২৮) বিদায় দলের বিপদ আরো বাড়ায়। এরপরও আশা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও সোহাগ গাজী। সপ্তম উইকেটে তাদের ৫৭ রানের চমৎকার জুটি অস্বস্তিতে ফেলে দেয় অতিথিদের।

তবে তিন বলের মধ্যে সোহাগ (১৫ বলে ২৩) ও মাহমুদুল্লাহর (২৫ বলে ৩৪) বিদায়ের পর আর পেরে উঠেনি বাংলাদেশ।

৩৮ রানে ৩ উইকেট নিয়ে নিউ জিল্যান্ডের সবচেয়ে সফল বোলার টিম সাউদি। তবে ২১ রানে ২ উইকেট নেয়া কোরি অ্যান্ডারসনের অবদানও কম নয়।

এর আগে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে ৫ উইকেটে ২০৪ রান করে নিউ জিল্যান্ড।

হামিশ রাদারফোর্ডের সঙ্গে অ্যান্টন ডেভিসিচের ৭৩ রানের উদ্বোধনী জুটি অতিথিদের উড়ন্ত সূচনা এনে দেয়। এক প্রান্তে অভিষিক্ত ডেভসিচ ঝড়ো গতিতে রান তুললেও অন্য প্রান্তে রয়ে সয়ে খেলছিলেন রাদারফোর্ড।

অষ্টম ওভারে অফস্পিনার সোহাগ গাজীর বলে নাসির হোসেনের হাতে ধরা পড়েন রাদারফোর্ড (১৭)।

রাদারফোর্ডের বিদায়ের পর বেশিক্ষণ টেকেননি ডেভসিচ। ২৪ বলে অর্ধশতক হাঁকানো বিপজ্জনক হয়ে ডেভসিচকে (৫৯) সাজঘরে ফেরত পাঠান বাঁহাতি স্পিনার আব্দুর রাজ্জাক। শামসুর রহমানের হাতে ক্যাচ দেয়া ডেভসিচের ৩১ বলের ইনিংসে ছিল ১০টি চার ও ১টি ছক্কা।

ডেভসিচ যেখানে শেষ করেছিলেন, সেখান থেকেই যেন শুরু করেন কলিন মানরো। ১০ ওভারে ৮৬ রান সংগ্রহ করা অতিথিরা মানরোর আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে শেষ ১০ ওভারে যোগ করে আরো ১১৮ রান।

অভিজ্ঞ রস টেইলরের সঙ্গে মানরোর ৯৩ রানের জুটি অতিথিদের বড় সংগ্রহের দিকে নিয়ে যায়। আঠারোতম ওভারে টেইলর (২৮) বিদায় নিলেও শেষ পর্যন্ত ৭৩ রানে অপরাজিত থাকেন মানরো। তার ৩৯ বলের ইনিংসে ছিল ৩টি চার ও ৫টি ছক্কা।

৩১ রানে ২ উইকেট নিয়ে স্বাগতিকদের সেরা বোলার অভিষিক্ত আল-আমিন হোসেন। তার দুটি উইকেটই এসেছে শেষ ওভারে।

বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে এটি কোনো দলের সর্বোচ্চ রান। এর আগে ২০০৮ সালে করাচিতে ৫ উইকেটে ২০৩ রান করেছিল পাকিস্তান।

ম্যাচ শেষে একমাত্র টি-টোয়েন্টিতে জয়ী নিউ জিল্যান্ড দলের অধিনায়ক কাইল মিলসের হাতে ট্রফি তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে ট্রফি পেয়েছেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমও। নিউ জিল্যান্ড দলকে ৩-০ ব্যবধানে হারালেও পুরস্কারের পর্বটা তোল ছিল প্রধানমন্ত্রীর জন্য।

মুশফিকুর রহিমের হাতে ওয়ানডে সিরিজ জয়ের স্মারক তুলে দেয়ার পর পুরো দলের সঙ্গে ছবি তুলেন শেখ হাসিনা।

ঢাকা জার্নাল, নভেম্বর ৬, ২০১৩।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.