সব ব্যাংকেই চুরি-জালিয়াতি হয়: অর্থমন্ত্রী
নভেম্বর ৬, ২০১৩ ঢাকা জার্নাল: ঋণ প্রবাহের তুলনায় সোনালী ব্যাংকের হলমার্ক কেলেঙ্কারীকে বড় করে দেখছেন না অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। তবে প্রায় দেড় হাজার কোটিরও বেশি টাকা মামলা ছাড়া উঠানোর কোনো উপায়ও দেখছেন তিনি।
বুধবার সচিবালয়ে সোনালী ব্যাংকের নতুন পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে বৈঠকের পর অর্থমন্ত্রী এমনটাই জানালেন।
বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী বলেন, সব ব্যংকেই চুরি-জালিয়াতি হয়, এখানেও হয়েছে। নোটিশে আনার মতো কিছু নয়। তবে ব্যাংকের জন্য এটি ক্ষতির কারণ। আর ব্যাংকের ক্রেডিট ফ্লো (ঋণ প্রবাহ)-এর তুলনায় এটা তেমন কিছু নয়। প্রসঙ্গত: সোনালী ব্যাংকের বার্ষিক ঋণ প্রবাহ ৪০ হাজার কোটি টাকা।
‘সোনালী ব্যাকের মোট লোকসান হচ্ছে কত টাকা’ সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, তারাই বলতে পারবেন।
এ প্রসঙ্গে সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, সব মিলিয়ে দায় রয়েছে প্রায় ২৫শ’ কোটি টাকা। এর মধ্যে ফান্ড হচ্ছে (স্থাবর অস্থাবর মিলিয়ে) ১১শ’ ৭০ কোটি টাকা। এই মুহূর্তে তাদের ফান্ডের দায় আছে প্রায় ১৭শ’ কোটি টাকা। আর নন ফান্ডের দায় আছে হচ্ছে ৮২৮ কোটি টাকা। যদি নন ফান্ডের দায় না আসে তাহলে বর্তমানে পুরো দায় ২৫শ’ কোটি টাকার মতো।
সেই হিসেবে স্থাবর অস্থাবর মিলিয়ে ব্যাংকের কাছে রয়েছে ১১শ’ ৭০ কোটি টাকা। বাকি থাকছে ২৫শ’ কোটি টাকার পুরোটাই দেড় হাজারেও বেশি।
টাকা উত্তোলনের জন্য বোর্ডের সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ করবেন বলে জানান ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
অর্থমন্ত্রী বলেন, নতুন পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে কয়েকটি সমস্যা নিয়ে কথা হয়েছে। স্থানীয় এলসিতে অনেক পার্টি থাকে। সেখানে তারা ডি-ভোল্টারই বলা যায়। লোকাল এলসি নিয়ে তারা একা পারবে না সে ক্ষেত্রে। বাংলাদেশ ব্যাংকেরও ব্যাপার রয়েছে।
এছাড়া বহু টাকার পাবলিক বন্ড রয়েছে। সরকারী বন্ড রয়েছে। আমরা সেটা দেখবো।
রাষ্ট্রায়াত্ব ব্যাংকগুলোর মধ্যে সামাজিক কাজে সব থেকে বেশি লোকসান দিচ্ছে জনতা ব্যাংক। তারা ৩৭টি সামাজিক খাতে সেবা দিয়ে থাকে। বন্ডে তারা সর্বোচ্চ লাভ করে ৭ শতাংশ, ৫ শতাংও রয়েছে। তা কম বলেও উল্লেখ করেন অর্থমন্ত্রী।
হলমার্ক কেলেঙ্কারীর পর ব্যাংকের সংকট কাটাতে বর্তমান পরিচালনা পরিষদ ভালো করবে এমনটাই আশাবাদ ব্যক্ত করেন অর্থমন্ত্রী।
বৈঠকে পরিচালনা পর্ষদের পক্ষ থেকে মন্ত্রণালয়ের কাছে সহযোগিতা চাওয়া হয়। বন্ডের ৭ শতাংশ লভ্যাশ বৃদ্ধি এবং ১২শ’ ৫০ কোটি টাকার এলসি ছাড়ের বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চায় পরিচালনা পর্ষদ।
সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরো বলেন, এলসির টাকাসহ প্রায় ২৫শ’ কোটি টাকার দায় রয়েছে। তবে এলসির এলসির ১২শ’ ৫০ কোটি টাকা উঠিয়ে আনা সম্ভব।
অর্থমন্ত্রী বলেন, স্থাবর অস্থাবর মিলিয়ে ১১শ’ ৭০ কোটি টাকা তাদের (ব্যাকের কাছে) রয়েছে। অন্য টাকা মামলার মাধ্যমে উঠাতে হবে।
ইতোমধ্যে টাকা উত্তোলনে সোনালী ব্যাংক দুর্নীতি দমন কমিশনে মামলা করেছে। মামলাটি চলমান।
নতুন পরিচালনা পর্ষদের কার্যক্রম নিয়ে একটি জাতীয় দৈনিকের (যুগান্তর) প্রতিবেদনের সমালোচনা করেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, সোনালী ব্যাংকের বিরুদ্ধে একটি প্রত্রিকা প্রচারণা চালাচ্ছে। এটি উদ্যেশ্য প্রণোদিত।
ঢাকা জার্নাল, নভেম্বর ৬, ২০১৩।