৪৩ রানে বাংলাদেশ জয়

অক্টোবর ২৯, ২০১৩

caঢকা জার্নাল: ছিল এক ঘণ্টার বেশি সময়। তবে বাংলাদেশের ইনিংসটা হাসিখুশি সূর্য্যে আলোতেই অনুষ্ঠিত হল।

রুবেল হোসেনের হ্যাটট্রিকসহ ছয় উইকেটের বিধ্বংসী বোলিংয়ে ৪৩ রানের জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। রুবেল হোসেনের ক্যারিয়ার সেরা ২৬ রানে ৬ উইকেটের এক স্বপ্নের স্পেলেই বৃষ্টি বিঘ্নিত প্রথম ওয়ানডেতে জয়ী হলো বাংলাদেশ।

বৃষ্টির পর নতুন লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামা কিউইদের বিপর্যস্ত করে খেলার ২৪তম ওভারের তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম বলে কোরে অ্যান্ডারসন, ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ও জেমস নিশামকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিক করেন রুবেল। এরপর তিনি নাথান ম্যাককালামকেও ফেরান। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ২৯ ওভার শেষে কিউইদের সংগ্রহ ৮ উইকেটে ১৬০ রান।

বৃষ্টির পর নতুন লক্ষ্য বেঁধে দেয়া হয় নিউজিল্যান্ডকে। পরিবর্তিত টার্গেটে ৩৩ ওভারে ২০৬ করতে হবে কিউইদের। ফলে জিততে হলে নিউজিল্যান্ডের অবশিষ্ট ১৩ ওভারে করতে হবে ১২৪ রান। এই পরিস্থিতিতে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই বোলারদের উপর চড়াও হতে শুরু করেন অ্যান্ডারসন। স্বাগতিক দর্শকদের আতঙ্কিত করে তিনি মাত্র ৩০ বলে চারটি ছক্কা এবং তিন বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৪৬ রান তুলে ফেলেন। কিন্তু ব্যক্তিগত ৩১তম বলেই রুবেলকে বেপরোয়া ভাবে হাঁকাতে গিয়ে বোল্ড হন এই অলরাউন্ডার।

পরের বলেই কিউই অধিনায়ক এবং বিপজ্জনক ব্যাটসম্যান ব্রেন্ডন ম্যাককালামকে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন রুবেল। আর লেগ স্ট্যাম্পের বাইরের বল খেলতে গিয়ে উইকেটরক্ষক মুশফিকের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিনত হন নিশাম। স্বপ্নের হ্যাটট্রিক পূর্ণ হওয়ায় উল্লাসে মাতোয়ারা তখন রুবেলসহ স্টেডিয়াম উপচে পড়া দর্শকরাও।

অবশ্য এখানেই থেমে থাকেননি এই ডানহাতি পেসার। নাথান ম্যাককালামকেও তুলে নিয়ে স্বাগতিকদের জয়ের কাছাকাছি পৌছে দেন তিনি।

২৬৬ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নামলে ২০ ওভার শেষে তিন উইকেটে কিউইদের সংগ্রহ ছিলো ৮২ রানের বৃষ্টি হানা দেয়।

নিউজিল্যান্ড ইনিংসের চতুর্থ ওভারেই আঘাত হানেন অফ স্পিনার সোহাগ গাজী। হামিশ রাদারফোর্ডকে মাত্র ১ রানে বোল্ড করেন তিনি। এরপর অ্যান্টন ডেভচিচ ইলিয়টের সঙ্গে জুটি বেঁধে ইনিংস মেরামতের চেষ্টা করলেও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন ব্যক্তিগত ২২ রানে। এরপর কিউইদের ভরসা টেলরকে দলীয় ৬০ এবং ব্যক্তিগত ৮ রানে কট বিহাইন্ড করে স্বাগতিকদের উল্লাসে ভাসান রুবেল। জয়ের জন্য অতিথিদের অবশিষ্ট ৩০ ওভারে ১৮৪ রান করতে হবে। হাতে আছে সাত উইকেট।এমন সময়ই বৃষ্টি শুরু হয়।

এর আগে মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দিবা-রাতের ম্যাচটিতে প্রথম ব্যাট করতে নেমে এক বল বাকি থাকতেই সবউইকেট হারিয়ে ২৬৫ রান সংগ্রহ করে মুশফিকের দল। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৯০ রান করেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম।

ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় শতকের কাছে গিয়েও ব্যর্থ হন টাইগার দলপতি মুশফিকুর রহিম। ৯৮ বলে ৮ বাউন্ডারি এবং দুই ছক্কায় সাজানো ৯০ রানের চমকপ্রদ ইনিংসটি জেমন নিশামের বলে উইকেটরক্ষক ব্রেন্ডন ম্যাককালামের গ্লাভসবন্দী হয়ে শেষ হয়।

১১ মাস পর মিরপুরে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নেমে ওয়ানডে ক্রিকেটে ক্যারিয়ারে সর্বোচ্চ রান করেন অলরাউন্ডার নাঈম ইসলাম। ১১৫ বল খেলে ১২ চারের সুবাদে ৮৪ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ২০০৯ সালে চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের পক্ষে নাঈম ইসলামের সর্বোচ্চ ৭৩ রান ছিলো তার ক্যারিয়ের সেরা। এছাড়া মাহমুদুদল্লাহ রিয়াদ (২৯) রান ও আব্দুর রাজ্জাক ১২ রান করেন।

টস হেরে ব্যাটিং করতে নামা টাইগাররা প্রথম ধাক্কা খায় ইনিংসের শুরুতেই তামিম ইকবালকে (৫) হারিয়ে। এরপর একটি শার্প সিঙ্গেলস নিতে গিয়ে মারাত্নক ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হন মমিনুল(০)।

এরপর আরেক ওপেনার আনামুল টিম সাউদির বলে নাথান ম্যাককালামের হাতে ক্যাচ দেন ব্যক্তিগত ১৩ রানে। মাত্র ২৫ রানেই ৩ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা।

এরপর অধিনায়ক মুশফিক ও নাঈম চতুর্থ উইকেট জুটিতে ১৫৪ রান যোগ করেন দলীয় ভান্ডারে। এরই ফাঁকে মুশফিক তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১২তম অর্ধশতক হাঁকান। আর নাঈম চতুর্থ অর্ধশতক পূর্ণ করেন। এটা কিউইদের বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের জুটিও বটে। কিউইদের পক্ষে জেমস নিশাম মাত্র ৪২ রানে ৪ এবং টিম সাউদি ৩৪ রানে ৩ উইকেট নেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলাদেশ ৪৯.৫ ওভারে ২৬৫(মুশফিক ৯০, নাঈম ৮৪, রিয়াদ ২৯, আনামুল ১৩, রাজ্জাক ১২, নিশাম ৪/৪২. সাউদি ৩/৩৪, অ্যান্ডারসন ২/৪৬)

নিউজিল্যান্ড ২০ ওভারে ৮২/৩(ইলিয়ট ব্যাটিং ২৮, ডেভচিচ ২২, অ্যান্ডারসন ব্যাটিং ২০, টেলর ৮, রাদারফোর্ড ১, রিয়াদ ১/১২, রুবেল ১/১৪, সোহাগ ১/১৯)

ঢকা জার্নাল, অক্টোবর ২৯, ২০১৩।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.