বিএনপি নয়া পল্টনই চায়

অক্টোবর ২৪, ২০১৩

BNPs-office
ঢাকা জার্নাল: অনেক নাটকীয়তার পর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ১৩ শর্তে জনসভা করার অনুমতি মিললেও তাতে সন্তুষ্ট নয় বিরোধী দল বিএনপি।

রাজধানীর নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনেই শুক্রবার দুপুর থেকে সমাবেশের ঘোষণা দিয়ে আবারো মহানগর পুলিশের কাছে লিখিত আবেদন করেছে তত্ত্বাবধায়ক ফেরানোর দাবিতে আন্দোলনে থাকা দলটি।

নির্বাচনকালীন ক্ষণগণনার শুরুতে নির্দলীয় সরকারের দাবিতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের এই সমাবেশে বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়ার বক্তৃতা করার কথা রয়েছে।

তবে বিএনপিকে সোহরাওয়ার্দীতেই সমাবেশ করার অনুরোধ করেছে পুলিশ। তারা সাংঘর্ষিক কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না বলেও আশা প্রকাশ করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার বেনজির আহমেদ।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, “পুলিশ বিকালে আমাদের শর্তসাপেক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি দিলেও সেখানে কর্মসূচি পালন এখন আমাদের পক্ষে সম্ভব না।

“আমরা আগামীকাল নয়া পল্টনেই সমাবেশ করব। বেলা ২টায় সমাবেশের কার্যক্রম শুরু হবে। বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়াও সমাবেশে যোগ দেবেন।”

সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার পর বিরোধীদলীয় প্রধান হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুকের নেতৃত্বে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল ঢাকার পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে দেখা করে নয়া পল্টনের অনুমতি চেয়ে লিখিত আবেদন করেন।

ফারুক পরে বলেন, “আমরা কমিশনারকে বলেছি, নয়া পল্টনেই আমরা সমাবেশ করতে চাই।”

বিএনপি অনুমতি পাচ্ছে কি না জানতে চাইলে কমিশনার বেনজির আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, “তাদের আমি অনুরোধ করেছি, আপনারা সোহরাওয়ার্দীতেই সমাবেশ করেন।”

তারপরও বিএনপি নয়া পল্টনেই সমাবেশ করার চেষ্টা করলে কি করবেন- এমন প্রশ্নের জবাবে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “রাজনীতিবিদদের প্রতি আমার অগাধ বিশ্বাস আছে। তারা এ ধরনের সাংঘর্ষিক কোনো সিদ্ধান্ত নেবেন না বলেই আমি মনে করি।”

নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে আন্দোলনরত বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট প্রায় দুই সপ্তাহ আগে শুক্রবারের এই জনসভার কর্মসূচি ঘোষণা করে। সে সময় নয়া পল্টন, সোহরাওয়ার্দি উদ্যান ও পল্টন ময়দানে জনসভার অনুমতি চেয়ে মহানগর পুলিশের কাছে আবেদন করে তারা।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও একই দিনে রাজধানীতে কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিলে জনমনে সৃষ্টি হয় সংঘাতের আশঙ্কা। এই প্রেক্ষটে ২০ অক্টোবর থেকে ঢাকা মহানগর এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে পুলিশ।

সভা সমাবেশে নিষেধাজ্ঞার কারণে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিএনপিপন্থী সংগঠন সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের জাতীয় সম্মেলন প্রথমে আটকে দিলেও পরে শর্তসাপেক্ষে অনুমতি দেয় পুলিশ। ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা দেন বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়া।

ঢাকার পর অন্যান্য বিভাগীয় শহরগুলোতেও শুক্রবার পাল্টাপাল্টি সমাবেশের ঘোষণা আসায় চট্টগ্রাম, বরিশাল ও খুলনায় সভা-সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। বিভিন্ন স্থানে আইনশঙ্খলা রক্ষায় নামানো হয় বিজিবি।

বৃহস্পতিবার বিরোধী দল যে কোনো মূল্যে নয়া পল্টনে সমাবেশ করার ঘোষণা দিলে ক্ষমতাসীনরাও মাঠে থাকার ঘোষণা দেয়।

এই উত্তেজনার মধ্যেই নয়া পল্টনে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাছে দ্বিতীয় দফা আবেদন করে বিএনপি।

বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার ইব্রাহিম ফাতেমির কাছে ওই আবেদনপত্র জমা দেয়।

ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান বিকালে সাংবাদিকদের জানান, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপিকে ১৩টি শর্তে সমাবেশ করার অনুমতি দেয়া হয়েছে।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.