মন্ত্রীর পরিচয় দিয়েই ফাঁদে
জুন ৯, ২০১৩ ঢাকা জার্নাল: রাজধানীতে মাসিক চুক্তিতে গাড়ি ভাড়া করে আবার মালিক সেজে সেই গাড়ি বিক্রি করছে একটি চক্র। কখনো গাড়ির নকল কাগজপত্র তৈরি করে আবার কখনো গাড়ি ভাড়া করে মালিকানার নকল কপি নিয়ে দীর্ঘদিন জালিয়াতি করে আসছিল চক্রটি।গত শুক্রবার রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকা থেকে প্রতারক চক্রের অন্যতম সদস্য রিজওয়ানা খালেদ ইমা (৩০) নামে এক নারীকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ভাই তানভীর খালেদের সহায়তায় এসব প্রতারণা করে আসছিল।
কখনো মন্ত্রীর ‘কাছের লোক’, কখনো আবার ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তার ‘আত্মীয়’ বলে পরিচয় দিতেন ইমা। তার বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা ও সাধারণ ডায়রি রয়েছে। তাকে গ্রেফতারের পরও বিভিন্ন সংস্থার ঊর্ধ্বতন ব্যক্তির পরিচয়ে তদবির করা হয়েছিল। যারা তদবির করেছিল, তারাও প্রতারক চক্রের সদস্য। তদবির কারীদের মধ্যে মানবাধিকার সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর জোয়ার সাহারা এলাকার আমির এন্টার প্রাইজের কাছ থেকে সিআরভি জিপ (ঢাকা মেট্টো-গ-১৪-০২৮৫) মাসিক ৭৫ হাজার টাকায় ভাড়া নেয় রিজওয়ানা খালেদা ও তার ভাই তানভীর খালেদ। চুক্তি অনুযায়ী কয়েক মাস ভাড়া পরিশোধের পর তারা ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে এক নাট্য নির্মাতার কাছে গাড়িটি বিক্রি করে দেন। এ ঘটনায় গুলশানা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে আমির এন্টার প্রাইজের মালিক আমির। আর এতে প্রতারণার শিকার হয়েছেন গাড়ির ক্রেতা নাট্য নির্মাতা দীপংকর সেন গুপ্ত। জানা যায়, রিজওয়ানা ও তার ভাই খালেদ একটি আরএভি জিপ গাড়ি ৯ লাখ টাকায় বিক্রয়ের চুক্তি করেন। বায়না হিসেবে তাদের ৫ লাখ টাকা পরিশোধও করেন। এরপরও মূল কাগজপত্র দেওয়ার নামে তাকে দুই মাস গড়িমসি করে। এ ঘটনায় তিনি ৩ জুন রামপুরা থানায় একটি মামলা করে। সূত্র জানায়, ইমা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পরিচয় দিতেন। আবার একেক সময় একেক ঠিকানা ব্যবহার করতেন। কারও কাছে বনানী, পিংক সিটি আবার পুরনো ডিওএইচএসে বসবাস করার কথা বলতেন। বিভিন্ন সময় প্রতারণা করে আসলেও পুলিশ তাকে গ্রেফতারের সাহস করত না। কারণ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বান্ধবী ও আত্মীয় বলে পরিচয় দিয়ে ওই পুলিশ কর্মকর্তার চাকরি খেয়ে ফেলার হুমকি দিতেন। আমির এন্টার প্রাইজের মালিক আমির হোসেন বলেন, মাসিক চুক্তিতে ভাড়া নেওয়ার পর প্রথম কয়েক মাস ঠিকমতো ভাড়া পরিশোধ করে ইমা। এরপর ভাড়া দেওয়া বন্ধ করে দেয়। গাড়ি ফেরত চাইলে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। পরে জানতে পারি মালিকানা পরিচয়ে ভাড়া গাড়ি দীপঙ্কর নামে এক নাট্য নির্মাতার কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। প্রতারক এই চক্রের বাকি সদস্যদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দাবি করেন তিনি। ঢাকা জার্নাল, জুন ৯, ২০১৩। |