ঈদ ও হরতাল শেষে ঢাকামুখো জনস্রোত
ঢাকা জার্নাল: ঈদের তিন দিন পরেই ৪৮ ঘণ্টার হরতাল ছিলো দেশজুড়ে। মঙ্গল ও বুধবার তাই ঢাকায় ফিরতে পারেননি ঈদে বাড়ি ফেরা মানুষেরা। জীবন আর জীবিকার তাগিদে আবার ঢাকামুখো হচ্ছেন মানুষ। টানা দু’দিন সড়ক ও নৌ-পথ বন্ধ থাকায় বৃহস্পতিবার ট্রেন, বাস ও লঞ্চে ছিলো বাড়তি চাপ।
শেকড়ের টানে যারা বাড়ি যান, তারা ঢাকা ফিরে আসেন সাধারণত ঈদের চার/পাঁচ দিনের মধ্যেই। এবার জামায়াতের ৪৮ ঘণ্টার হরতালের কারণে বিপাকে পড়ে যান ঈদে যারা নিজ শহর বা গ্রামে গিয়েছেন। জামায়াত প্রথমে ১২ ও ১৩ আগস্ট হরতাল ডাকে। পরে একদিন পিছিয়ে ১৩ ও ১৪ আগস্ট ৪৮ ঘণ্টার হরতাল দেয় দলটি। এরপর হরতাল চলাকালে ৪৮ ঘণ্টার হরতাল ১২ ঘণ্টা কমানোর ঘোষণা দেয়। ৪৮ ঘণ্টা থেকে ৩৬ ঘণ্টা করার ঘোষণা দিয়ে আবার ৪৮ ঘণ্টা হরতাল রাখার ঘোষণা দেয়। হরতাল নিয়ে জামায়াতের এমন কর্মকাণ্ডে ঢাকামুখো মানুষরা পড়ে যান বিভ্রান্তিতে। ঢাকায় আসাও অনেকের অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।
ঈদের ছুটির সঙ্গে মিলিয়ে দু’তিন দিন যারা বেশি ছুটি নিয়েছেন, তারাও এবার ঢাকায় ফিরতে বিপাকে পড়ে যান। ঢাকামুখো মানুষদের অনেকেই আসার দিনক্ষণ হিসেবে বেছে নিয়েছেন বৃহস্পতিবারকে।
তাই মানুষের জনস্রোত দেখা যাচ্ছে ট্রেন, বাস ও লঞ্চে।
কমলাপুর রেলস্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, ঢাকায় ফেরা মানুষের পদচারণায় মুখর রেলওয়ের প্রধান এ স্টেশনটি। পরিবার-পরিজনসহ মানুষ জীবিকার তাগিদে ফিরে আসছেন ঢাকায়।
কমলাপুর রেলস্টেশনের ম্যানেজার খায়রুল বশীর বাংলানিউজকে জানান, ৪৮ ঘণ্টার হরতালে সকল ট্রেনই ঠিকমতো চলাচল করেছে।
তিনি বলেন, হরতালেও ট্রেনে চাপ ছিলো। তবে আজ (বৃহস্পতিবার) তুলনামূলক বেশি চাপ দেখা যাচ্ছে।
এবার ঈদে পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলসহ কোনো ট্রেনেই শিডিউল বিপর্যয় হয়নি বলেও তিনি জানান।
কমলাপুর স্টেশনে কয়েকজন যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অনেকেই মঙ্গল ও বুধবার ঢাকায় আসার জন্য মনস্থির করলেও হরতালের কারণে তারা বৃহস্পতিবার আসতে বাধ্য হয়েছেন। আসন না পেয়ে অনেকেই স্ট্যান্ডিং টিকিট কেটে দাঁড়িয়েই ঢাকা এসেছেন। পূবাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চল থেকে আসা প্রতিটি ট্রেনই ছিল কানায় কানায় পরিপূর্ণ।
ফেরার টিকিট কিনতে গিয়ে এবারও যাত্রীরা কিছুটা বিড়ম্বনার শিকার হলেও বাসও ছেড়েছে মোটামুটি সময় মেনেই। টানা দু’দিনের হরতাল শেষে শনিবার পর্যন্ত রাজধানীমুখো মানুষের চাপ আরো বাড়বে বলে মনে করছেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।
সায়েদাবাদ ও গাবতলী বাস টার্মিনালেও ঢাকামুখো মানুষের স্রোত দেখা দেখা গেছে। একই দৃশ্য সদরঘাট লঞ্চঘাটেও। ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত সদরঘাটে পৌঁছে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার লঞ্চ। ঢাকামুখো মানুষের উপচেপড়া ভিড় ছিল লক্ষ্যণীয়।
এদিকে বৃহস্পতিবার জাতীয় শোক দিবসের সরকারি ছুটি থাকায় রাজধানীতে যানজটও লক্ষ্য করা যায়নি। রাজধানীর ব্যস্ত সড়কেও গাড়ির জট ছিলো না। শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যাওয়া যাচ্ছে কম সময়েই।
ঢাকা জার্নাল, আগস্ট ১৫, ২০১৩