Leadসংবাদ শিরোনাম

রাজনীতিতে তরুণদের এগিয়ে আসার আহবান ড. ইউনূসের

yunus-2ঢাকা জার্নাল: ‘তরুণরা এখনই সমাজের নেতৃত্ব দেবে’ উল্লেখ করে ড. মোহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ভবিষ্যৎ পর্যন্ত অপেক্ষা করার দরকার নেই।

তিনি বলেন, “দেশের সমাজ ব্যবস্থা, অর্থনীতি ও রাজনীতি কেমন হবে তা আমাদেরই ঠিক করতে হবে। আমাদের সমাজ, অর্থনীতি ও রাজনীতি সম্পর্কে আমাদেরকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কারো উপর নির্ভর করে থাকা ঠিক হবে না।”

তরুণদের নেতৃত্বে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ নতুন করে গড়তে এখনই কাঠামো ঠিক করতে হবে। তবে পুরাতন নেতৃত্বকে অবজ্ঞা করার প্রয়োজন নেই।”

শনিবার রাজধানীর সোবহানবাগে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি মিলনায়তনে সোস্যাল বিজনেস কনভেনশন-২০১৩ আয়োজিত অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

ড. ইউনূস বলেন, “আগামী দিনের যে পৃথিবী আসছে তাতে সৃজনশীলতার শক্তি অনেক বেশি। বাংলাদেশ সে বিষয়ে খুবই সৌভাগ্যবান। কারণ দেশে অর্ধেকের বেশি তরুণ।”

তিনি বলেন, “বলা হয়ে থাকে ‘তরুণরাই ভবিষ্যতে সমাজের নেতৃত্ব দেবে’। ভবিষ্যৎ পর্যন্ত অপেক্ষা করার দরকার নেই। প্রযুক্তির কারণে যে পরিপক্কতা হয়েছে তাতে এখনি তারা নেতৃত্ব দেবে। আর এই নেতৃত্বকে গ্রহণ করতে হবে।”

প্রযুক্তিগত কারণে তরুণরা পুরাতন প্রজন্মের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী। আমরা যদি সৃজনশীলতাকে কাজে লাগাতে পারি, তাহলে বাংলাদেশের আমল পরিবর্তন হবে।”

‘তরুণ প্রজন্মের আইডল হিসেবে আপনাকেই যদি মনে করে তরুণরা’ এমন প্রসঙ্গে ড. ইউনুস বলেন, পুরাতনদের দিয়ে নয়, তাদের মধ্য থেকেই নেতৃত্ব বেছে নিতে হবে।

তরুণ সমাজকে অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তাদের কোন বাধা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এ জন্য দরকার সিস্টেম ও লিডারশিপ। তরুণরা কি করবে তা বেছে নিয়ে নির্ধারণ করলে অন্যরা বিনিয়োগ করবে।”

টাকার প্রয়োজন হলে ‘তোমরা আমার কাছে আসবে’ বলেও উল্লেখ করে ড. ইউনূস।

সিঙ্গাপুরের চেয়েও বাংলাদেশ বেশি ধনী হতে পারে

দারিদ্র বিমোচনে সামাজিক ব্যবসার কথা উল্লেখ করে ড. ইউনুস বলেন, “নতুন করে বাংলাদেশ গড়তে হলে নতুন করে কাঠামো গড়তে হবে। এ ক্ষেত্রে তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে।”

তিনি বলেন, “এই অঞ্চলের দেশ নেপাল, ভুটান, ভারত দ্রুততম সময়ে অনেক উন্নতি লাভ করেছে। সেই তুলনায় বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে আছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার অপ্রতুলতার কারণে অনেক ক্ষেত্রে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়ে আছে। এক্ষেত্রে আমাদের যোগাযোগ বাড়াতে হবে।”

‘বিশ্ব মানচিত্রে আমাদের ভৌগলিক অবস্থান খুবই গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ আমরা এমন এক অবস্থানে আছি এর বিরাট খুবই সুবিধা আছে। এই অবস্থানগত সুবিধা নিতে হলে আমাদের এখনই প্রস্তুতি নিতে হবে। এ অঞ্চলের দেশগুলোকে পরস্পরের যোগাযোগের জন্য আমাদের মাঝখান দিয়ে যেতে হয়। যদি তাদের কাছ থেকে সুযোগ সুবিধা নিতে পারি তাহলে আমাদের অর্থনীতি এমনিতেই ওপরের দিকে যাবে।”

গভীর সমুদ্রকে ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়ে ড. ইউনূস বলেন, “নেপাল, ভুটান ও ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করতে হবে।”

সিঙ্গাপুর সারা বিশ্বের ব্যবসায়ীদের স্থান উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, “আমরা আমাদের তরুণ সমাজকে কাজে লাগিয়ে তাদের চেয়ে অনেক উন্নতি করতে পারি।”

তিনি বলেন, “চীনের বঙ্গোপসাগর নেই। আমরা গভীর সমুদ্রবন্দরকে কাজে লাগিয়ে চীন ও সিঙ্গাপুরের সমপর্যায়ে যেতে পারি। তাছাড়া আমাদের অনেক সুযোগ রয়েছে।”

গভীর সমুদ্রবন্দরকে কাজে লাগতে হবে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, “আমাদের যে সুযোগ রয়েছে তার মৌলিকত্ব কাজে লাগাতে পারলে অন্য দেশও আমাদের কাছে শিক্ষা নেবে।”

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ফ্রান্সের হ্যানস রিজ এবং জাপানের অধ্যাপক ওকাদা ও ড্রাফোডিল’র বোর্ড অব টাস্ট্রির চেয়ারম্যান সবুর খান।

কনভেনশনে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান।

ঢাকা জার্নাল, জুন ২৯, ২০১৩

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.