রানুর অশ্লিল বক্তব্যে ছয় বার মাইক বন্ধ, তবু দাবি সুন্দর ভাষায় কথা বলছি
ঢাকা জার্নাল: বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্য রেহেনা আক্তার রানুর বক্তব্যে অশ্লিল, অশোভন শব্দ ব্যবহারের কারণে ছয় বার মাইক বন্ধ করেছেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। তবে রানু দাবি করেছেন তার বক্তব্যের ভাষা সুন্দর।
রানু বাচেট আলোচনায় দাঁড়িয়ে বাজেট নিয়ে একটি কথাও না বলে বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর স্বামী ওয়াজেদ মিয়া, পুত্র জয়সহ আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে অশালীন ও অশোভন বক্তব্য দেন। গিরিঙ্গী দিয়ে শুরু করেন বান্দর পর্যন্তও বলেন রানু।
রানু বলেন, “আজ ঐতিহাসিক ২৩শে জুন। আজ আমার ১৯৯৬ সালের ২৩ জুনের কথা মনে পড়ে গেলো। আওয়ামী লীগ নেত্রী কাতান শাড়ি পরে সেজেগুজে বসে আছেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে যাবেন। শপথ নিতে যাচ্ছেন না। কিসের জন্য জানি অপেক্ষা করছেন। আমরা ছোট বেলায় পড়েছি আয় ছেলেরা আয় মেয়েরা ফুল তুলিতে যাই…। সেই সুরে সুরে উনি দলের নেতা-কর্মীদের ডেকে ডেকে বলছেন আয় সন্তাসীরা আয় বাকশালীরা আয় খুন করিতে যাই, লাশের মালা গলায় নিয়ে দেশ শাসনে যাই।”
এভাবে প্রধানমন্ত্রী কটাক্ষ করেই তার বাজে বক্তৃতা শুরু হয় অশোভন কথা দিয়ে।
রানু বলেন, “সরকারের সাড়ে চার বছরে যে দূর্নীতি করেছে তা তুলে ধরে জনগণের কাছে উন্মোচিত করবো। উনাদের দুর্নীতির কলিজা কাঁপানো অভিযোগ আমার কাছে আছে।”
‘আমরা সংসদে এসেছি জনগণের পক্ষে কথা বলার জন্য, রবীন্দ সংগীত শোনার জন্য নয়।’ এভাবে শুরু করেই
সরকারের চারটি নির্বাচনে ১৮ দলয়ি জোট প্রর্থীদের বিপুল বিজয় ঘোষণা করেছে, বাংলাদেশে আগামী দিন নিপীড়িত নির্যাতিত মানুষের নেত্রী বেগম খআলোদা জিয়া।”
রানু বলেন, আওয়ামী রীগের বড় শত্রু আওয়ামী লীগ নেতা-নেত্রীদের জিহবা। সঙখ্যা গরিষ্ট মুসলমানের দেশ বাংলাদেশ। এটা বাংলাদেশ পার্লামেন্ট। গত ২০ জুন এক হিন্দু সংসদ সদস্য ফেনসিডিল খেয়ে, ইয়াবা খেয়ে, আাদের নেতৃকে নিয়ে বক্তব্য রাখেন। তা কুৎসিত, নোংরা। আমাদের নেতৃত্রীকে নিয়ে নোংরা ইতিহাস পাঠ করা হয়েছে।
উপু উকিলকে কটাক্ষ করে তিনি আরো বলেন, থুথু ছিটাই তার মুখে। তিনি স্দ্দিক সালিকের লেখা একটি বইয়ের কথা বলেছেন। আমি চ্যলেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি এ নামে কোন বই নেই। উনার স্বপ্ন দোষ আছে। স্বপ্নে উনি ওই বই পেয়েছেন। এই বইয়ের প্রশাসক লেখক উনার নেত্রী।
এর পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি কটাক্ষ করে বক্তব্য রাখেন। অর্থমন্ত্রীকে সরাসরি মাল মুহিত উল্লেখ করে কটাক্ষ করে বক্তব্য দেন।
আমরা এতো সুন্দর ভাষায় কথা বলছি উল্লেখ করে উনাদের নারী সংসদরা যেভাষায় কথা বলেন তা নিশিদ্ধ পল্লীর ভাষা উলেল্লখ করে শুরু করেন অশুভ শব্দমালার বক্তব্য।
জঙ্গী নেতা আব্দুর রহমান বাংলাভাই আওয়ামী লীগের এমপিদের দুলা ভাই। মন্ত্রী সোহেল তাজ আওয়ামী লীগকে তালাক দিয়ে গেছে।
পুরুষ নির্যাতনের কথা উল্লেখ প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে রানু বলেন, “ড. ওয়াজেদ একবার নেত্রীর (খালোদা জিয়ার কাছে) গিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “ঘরের মহিলার জ্বালায় আমি অতিষ্ঠ।”
রানু বলেন, যারা তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কথা বলছেন তারা ব্লগার রাজিবের পেতাত্মা। তারেক রহমান যেদিন ফিরবেন সেদিন উনাদের থোতা মুখ ভোতা হয়ে যাবে। গণধোলাই খেয়ে রাম, রাম হরে কৃষ্ণ হরে রাম আওয়ামী লীগের বাপের নাম বলে পালাবেন।
সজিব ওয়াজেদ জয়কে কটাক্ষ করে রানু বলেন, জয় জেল খাটা আসামী মাতাল অবস্থায় রাস্তা থেকে ধানমন্ডি ও গুশৈান থানা তাকে কয়েকবার গ্রেফতার করেছে। আমেরিকাতে মাতাল অবস্থায় কয়েকবার পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে।
প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে রানু আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সফর সঙ্গী হয়ে প্রেস সচিব শাকিল রাতের বেলা হেটেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নারী কর্মকর্তাকে জড়িয়ে ধরেছে। এতজন নারী প্রধানমন্ত্রীর অফিসে নারী ক্যালেংকারীর নায়ক শাকিলের চাকরি এখনও বহাল থাকে কিভাবে।
রানু বলেন, “আমার কাছে একটা বই আছে, মতিউর রহমান রিন্টুর লেখা- আমার ফাসি চাই, এই বই পড়লে উনারা (সরকারী দলের সদস্যরা) বান্দরের মতো লাফালাফি করবেন। মজার বিষয় ওয়াক আউট করতে পারবেন না।”
রানুর এ বক্তব্যের সময় সাত বার মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয়। স্পিকার রুলিং দিয়ে বলেন ২৭০ বিধির মেনে বক্তব্য না দিলে সবার মাইকই বন্ধ করে দেওয়া হবে।
পরে সরকার দলীয় সদস্য ফজিলাতুন্ননেসা বাপ্পী রানুর বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে জিয়াউর রহমানকে কটাক্ষ করলে একবার মাইক বন্ধ করেন স্পিকার এবং বাজেট আলোচনা করতে বলেন।
ঢাকা জার্নাল, জুন ২৩, ২০১৩।