Leadখেলা

শান্ত বললেন, ‘সরি’

ঢাকা জার্নাল ডেস্ক: 

২০২৩ ওয়ানডে ফরম্যাটে এশিয়া কাপ, সুপার ফোরে ওঠার বাঁচা-মরার লড়াই। মুখোমুখি শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান। লঙ্কানরা প্রথমে ব্যাট করে তোলে ২৯১ রান আফগানদের এই রান তারা করতে হতো ৩৭.১ বলে। তারা প্রায় কাছাকাছিও চলে গিয়েছিল। তবে হিসাবে তালগোল পাকিয়ে শেষ অবধি এমন হলো যে সমীকরণে মিলিয়ে জয় তো দূরে থাক, শেষ অবধি হারে দুই রানের ব্যবধানে।

ঐ ম্যাচটি যেন ফের একবার দেখল ক্রিকেট বিশ্ব। এবারও সেই আফগানিস্তান শুধু বদলেছে, প্রতিপক্ষ লঙ্কানদের জায়গায় বাংলাদেশ। তবে এ যাত্রায় আফগানরা সফল বাংলাদেশ ডুবেছে হতাশায়। গতকাল সকালে আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়ের খুব কাছে থেকেও বৃষ্টি আইনে আট রানে হারে বাংলাদেশ। ম্যাচ শেষে দলের প্রতিনিধি হিসেবে সংবাদ সম্মেলনে এসে অধিনায়ক শান্ত বলেন, ‘বোলাররা শুরু থেকে দারুণ করেছে, যেভাবে তারা বল করেছে তাতে এ ম্যাচে আমাদের জয়ের প্রত্যাশাই ছিল। তবে আমাদের ব্যাটাররা কিছু বাজে সিদ্ধান্ত নিয়ে সেটার দামই দিতে হয়েছে আমাদের।’

বাংলাদেশের এই ম্যাচে সমীকরণ সহজ ছিল লক্ষ্য যতই আসুক আফগানদের পক্ষ থেকে সেটি তুলে জয় পেতে হবে ১২.১ ওভারের মধ্যেই। লক্ষ্য পেয়েছিল ধরাছোঁয়ার মধ্যেই। তাও পারেনি। এ ম্যাচে নিজেদের ব্যাটিং পরিকল্পনা নিয়ে শান্ত বলেন, ‘প্রথমত আমরা এই ম্যাচে জয়ের পরিকল্পনা করেই খেলছিলাম। প্রথম ইনিংস শেষে যখন আমরা দেখলাম ১১৫ রানের লক্ষ্য সে সময় আমরা সমীকরণ অনুসারে পরিকল্পনা করে নেমেছিলাম ব্যাটিংয়ে। তবে আগে যেটা বলেছিলাম, আমাদের ব্যাটিং ডিপার্টমেন্ট অনেকগুলো বাজে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

পরিকল্পনার বিষয়ে ভিন্ন প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘পরিকল্পনাটা এমন ছিল যে আমরা প্রথম ছয় ওভার চেষ্টা করব এবং আরো ভেবে রেখেছিলাম যদি ভালো শুরু পাই, দ্রুত উইকেট যদি না পড়ে তাহলে আমরা সুযোগটা নেব। কিন্তু শুরুতেই তিন উইকেট পড়ে গেল, তখন পরিকল্পনা পরিবর্তন হয় সে সময় চিন্তা একটাই ছিল যে কীভাবে ম্যাচটা জিততে পারি। তার পরও আমরা বলব যে মিডল অর্ডাররা খুব ভালো সিদ্ধান্ত নেয়নি, যার কারণে আমার মনে হয় ম্যাচটা হেরে গিয়েছি।’

এর আগে সুপার এইটের প্রথম দুই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের বিপক্ষে হেরেছে বড় ব্যবধানে। তবুও সব শেষ ম্যাচেও ছিল সেমিতে যাওয়ার সুযোগ। একটু কঠিন সমীকরণ হলেও ছিল সামর্থ্যের মধ্যেই আর প্রতিপক্ষও বেশ পরিচিত আফগানিস্তান। তবে সমীকরণ মেলানো তো দূরেই থাক তাদের পারফরম্যান্সে জেতার চেষ্টা অবধি দেখা যায়নি। যদিও এটি শুধু এই ম্যাচে নয়, গোটা আসর জুড়েই তাদের পারফমরম্যান্স ছিল এমনই। টুর্নামেন্টে যে এতদূর এসেছে, এটার পুরো কৃতিত্বই বোলারদের। এছাড়া আর কোনো ডিপার্টমেন্টই নিজের কাজ পুরোপুরি করতে পারেনি। তাই আসর শেষ হতেই শান্ত ক্ষমা চাইলেন, সমর্থকদের উদ্দেশে বললেন, ‘আমরা সরি’। বিশ্বকাপে নিজেদের পারফরম্যান্স নিয়ে বলেন, ‘বিশ্বকাপের পুরো যাত্রা সম্পর্কে প্রথমেই বলতে চাই যে, আমরা দল হিসেবে বাংলাদেশের সব সমর্থককে হতাশ করেছি। যারা আমাদের খেলা অনুসরণ করেন, সবসময় সমর্থন করেন তাদের ‘লেট ডাউন’ করেছি। তো আমি দলের পক্ষ থেকে ক্ষমা চাইছি। আমরা ব্যাটিং গ্রুপ হিসেবে দেশের মানুষকে ভালো কিছু দিতে পারিনি। এটার জন্য আমরা সরি। সামনের দিকে আমাদের এটাই চেষ্টা থাকবে, কীভাবে এখান থেকে বের হয়ে আসতে পারি।’

চলমান বিশ্বকাপে বাংলাদেশের হতাশার মধ্যেও তিন তরুণ আলো ছড়িয়েছেন নিজেদের মতো করেই। তারা হলেন—রিশাদ হোসেন, তাওহীদ হূদয় ও তানজিম সাকিব। চেষ্টা করেছেন নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে জেতানোর জন্য। তবে দলের বাকিদের ব্যর্থতায় তাদের সফলতার গল্পও ঢাকা পড়ে গেছে। যদিও অধিনায়ক তা ভুলেননি। এ টুর্নামেন্ট থেকে দলের প্রাপ্তির কথা জোর দিয়ে না বললেও রিশাদ ও তানজিম সাকিবের প্রশংসা করেন শান্ত। বলেন, ‘ইতিবাচক দিক অবশ্যই বোলাররা… তারা সবাই খুবই ভালো বোলিং করেছে। রিশাদ এরকম একটা টুর্নামেন্টে এসে সবগুলা ম্যাচে ভালো বোলিং করেছে, তানজিম সাকিবও করেছে— বলব সব বলারই ভালো করেছে।’