শিক্ষা-সংস্কৃতি

প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণচেষ্টা, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষকসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সম্প্রতি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলাটি দায়ের করেন ভুক্তভোগী ইতালি প্রবাসীর স্ত্রী। এ ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি করেছে।

মামলার আসামিরা হলেন-ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামী ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক আনোয়ার হোসেন, অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক দেবাশীষ শর্মা, ঝিনুক আবাসিক টাওয়ারে বসবাসরত লিয়াকত হোসেন, এমডি আব্দুর সাদ, মোকাররম হোসেন ও দারোয়ান মামুন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আনোয়ার হোসেন ওই নারীর স্বামী প্রবাসে থাকার কারণে প্রায়ই বিভিন্নভাবে তাকে উত্ত্যক্ত করত। সে ঝিনুক টাওয়ারের পঞ্চম তলায় তার এক ভাই ও শিশু বাচ্চা নিয়ে বসবাস করে আসছিল। গত ২৭ মে রাত ১০টার সময় তার ছোট ভাই কয়েল আর ডিম আনার জন্য বাসা থেকে বের হয়ে বাইরে যায়। এসময় সময় শিক্ষক আনোয়ার হোসেন ও অভিযুক্ত অন্যরা তার ঘরে প্রবেশ করে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। ওইসময় তার ভাই বাইর থেকে এসে বাসায় প্রবেশ করতে চাইলে বাসার দারোয়ান তার ভাইকে প্রবেশ করতে বাধা দেয়।
ঘটনার পর বাদী সদর থানায় মামলা করতে যান। কিন্তু থানার ওসি তাকে আদালতে মামলা দায়ের করতে পরামর্শ দেন। তার পরামর্শ মোতাবেক আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন তিনি। পরে আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে থানায় এজাহার হিসেবে নেওয়ার জন্য আদেশ দেন। থানা মামলাটি এজাহার হিসেবে গণ্য করেন।

মামলার বিষয়ে ইবি শিক্ষক আনোয়ার হোসেন ও দেবাশীষ শর্মা জানান, মামলাটি সম্পূর্ণভাবে মিথ্যা। ওই নারী ঝিনুক টাওয়ারে পঞ্চম তলায় ভাড়া নেওয়ার পর উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন শুরু করেছিল। বিষয়টি দারোয়ানের মাধ্যমে জানতে পারলে আমরা তাকে দ্রুত বাসা ছেড়ে দেওয়ার জন্য বলি। তার ভাই পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি সম্প্রতি রাত ১০টার পরে তার ফ্ল্যাটে আসার চেষ্টা করে, তখন দারোয়ান তাকে বাসায় প্রবেশ করতে দেয় না। তখন ওই নারী থানায় যায়। ঘটনা মীমাংসা করার জন্য তার গ্রাম থেকে ইউনিয়ন চেয়ারম্যানসহ তার শ্বশুর আসে। আমরা জানি যে ঘটনাটি মীমাংসা হয়ে গেছে। কিন্তু পরে জানতে পারি আমাদের নামে ওই নারী আদালতে মামলা দায়ের করেছে।

এ ব্যাপারে ধর্ষনচেষ্টার শিকার ভুক্তভোগী নারীর কাছে জিজ্ঞাসা করা হলে, তিনি উত্তরে বলেন, কোনো অপরাধীই তার অপরাধ স্বীকার করে না। এরাও নিজেদের নির্দোষ দাবি করছে। অথচ আমি সত্যি ঘটনায় ভুক্তভোগি হয়ে মামলা করেছি। আমি বর্তমানে খুবই অসুস্থ ও মানসিকভাবে অনেকটা ভেঙে পড়েছি।

মামলার বিষয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর কামরুজ্জামান জানান, মামলাটি এজাহার হিসেবে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বর্তমানে মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। দ্রুতই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।