স্পটলাইট

ঈদে পোশাকের দাম নিয়ে কারসাজি করলে ব্যবস্থা

ঈদের বাজারে পোশাকের দাম নিয়ে কারসাজি করলে ভোক্তা অধিকার আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর।

বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) রাজধানীর কাওরান বাজারে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর কার্যালয়ে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পোশাক ও কাপড় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ কথা জানায় সংস্থাটি। এ সময় ভোক্তা অধিদফতরের মহাপরিচালক এ এইচ এম শফিকুজ্জামান বলেন, ‘বাজারে অনিয়ম হলে মার্কেট কমিটি বাতিলের সুপারিশ করা হবে।’

বিক্রয় কর্মীদের আচরণ আরও মার্জিত করার আহ্বান জানিয়ে এএইচএম শফিকুজ্জামান বলেন, ‘বিক্রেতাদের উদ্ধত আচরণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। উন্নয়নশীল দেশে এসব মেনে নেওয়া হয় না। কোনও পোশাকের চাহিদা বাড়লে তার মূল্য যেন সকাল-বিকাল বাড়িয়ে দেওয়া না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।’

এ সময় জানানো হয়, মূল্য পরিস্থিতি তদারকি করার জন্য বাজার কমিটিগুলোকে চিঠি পাঠাবে এই সংস্থা। সারা দেশে পোশাক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে পর্যায়ক্রমে বৈঠক করা হবে।

অধিদফতর থেকে কাপড়ের ক্ষেত্রে অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে প্রাপ্ত অনিয়ম, যেমন- ঈদ উপলক্ষে একই পোশাকের দাম অন্যান্য সময়ের তুলনায় বাড়িয়ে দেওয়া, একটি পোশাকে বিভিন্ন দামের প্রাইস ট্যাগ লাগানো, কাপড়ের ক্ষেত্রে মিটারের পরিবর্তে গজের ব্যবহার, মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করা, আসল বলে নকল কাপড় বিক্রি করা ইত্যাদি বিষয়ে সভায় আলোচনা করা হয়। এছাড়া রেডিমেড গার্মেন্টসের ক্ষেত্রে মোড়কের গায়ে এমআরপি না লেখা, এমআরপি ঘষামাজা বা কাটাকাটি করে বেশি মূল্য নির্ধারণ করা, পুরাতন মূল্যের ওপর নতুন স্টিকার লাগিয়ে বেশি মূল্য নেওয়া, ১০০ শতাংশ কটন ঘোষণা দিয়ে ১০০ শতাংশ কটন না দেওয়া, কাটাফাটা পোশাক বিক্রি করা এবং সময় মতো এক্সচেঞ্জ করে না দেওয়া, ভোক্তাদের পেমেন্টের ক্ষেত্রে লম্বা লাইনে অপেক্ষমাণ না রাখার বিষয়েও আলোচনা করা হয়।

বিভিন্ন কাপড়ের ব্রান্ড প্রতিষ্ঠান থেকে আগত প্রতিনিধিরা সভার আলোচনা থেকে প্রাপ্ত নির্দেশনা অনুসরণ করে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করবেন বলে সভায় জানান।

মহাপরিচালক এএইচএম শফিকুজ্জামান অধিদফতর থেকে কাপড়ের ক্ষেত্রে অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে প্রাপ্ত অনিয়মের বিষয়ে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করেন। তিনি বলেন, ‘বিদেশি পোশাক ও কসমেটিকসের ক্ষেত্রে আমদানিকারকের নাম ও সিল থাকতে হবে। এমআরপি হবে আমদানিকারক থেকে প্রদেয়। নকল পণ্যের বিষয়েও তিনি ব্যবসায়ীদের সতর্ক করেন। এ ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট তথ্য পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।’

মহাপরিচালক আলোচনায় বলেন, ‘অনেক সময় দেখা যায় পাশের দেশগুলো থেকে কিছু বিক্রয়কারী আমাদের দেশে এসে বাসা ভাড়া নিয়ে ভেতরে ভেতরে টার্গেট কাস্টমারের কাছে বিদেশি কাপড় বিক্রয় করছে। এই ধরনের কার্যক্রম দেশীয় ফ্যাশন হাউজগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এ ক্ষেত্রে তথ্যগুলো আমাদের কাছে দেওয়া হলে আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবো। আমরা চাই সবাই আইন মেনে ব্যবসা করুক, ভোক্তারা যেন ন্যায্যমূল্যে পণ্য পান। শপিং মলগুলোতে অনিয়ম পেলে মার্কেট কমিটিকে দায়ী করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

অধিদফতরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, ‘বিভিন্ন ব্র্যান্ডের কাপড়ের গুণগত মান যেন ভালো থাকে। বিদেশি যারা আসে তারা যেন কাপড়ের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলতে না পারে। কাপড়ের প্রাইস ট্যাগ ফ্যাক্টরিতে লাগাতে হবে; শোরুম পর্যায়ে যেন প্রাইস ট্যাগ লাগানো না হয়। এর ব্যত্যয় হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সভায় আরও ছিলেন প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক ও সহকারী পরিচালক, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের প্রতিনিধি, আড়ং, আটিসান, অঞ্জনস, টপ টেন, লুবনান, নগরদোলা, রং বাংলাদেশসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ড এবং কাপড় ব্যবসায়ীরা।