Leadস্পটলাইট

পঞ্চগড়ে বাড়িঘর ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ, ১৫ নাগরিকের উদ্বেগ

পঞ্চগড়ের আহমদিয়া সম্প্রদায়ের বসতিতে হামলা চালিয়ে বাড়িঘর ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় উদ্বেগ ও বিক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে দেশে ১৫ বিশিষ্ট নাগরিক। শনিবার (৪ মার্চ) ‘সচেতন নাগরিক সমাজের’ ব্যানারে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আহমদিয়া সম্প্রদায় কিংবা অন্যান্য ধর্মীয় জাতিগোষ্ঠীর উপর ইতোপূর্বে সংঘটিত নিপীড়নের ঘটনায় কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হলে স্বাধীনতার মাসে আজকের পরিস্থিতি সৃষ্টি হতো না।’

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুধু আহমদিয়া সম্প্রদায়ই নয়, দেশের বিভিন্ন জায়গায় অন্যান্য সংখ্যালঘু ধর্মীয় বা ভিন্নমতাবলম্বী ব্যক্তি-জনে একইভাবে উগ্র ইসলামী জঙ্গিগোষ্ঠীর আক্রমণের শিকার হয়ে আসছে। সাম্প্রতিক সময়ে এ ধরনের আক্রমণ প্রবণতা বেড়েই চলেছে। কিন্তু রাষ্ট্র এই আক্রমণ বন্ধ কিংবা প্রতিহত করার ক্ষেত্রে বরাবরই নিষ্ক্রিয় থাকছে। রাষ্ট্রের এই নিষ্ক্রিয়তা সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর জীবনযাপন নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টিসহ বাংলাদেশকে ক্রমশ ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও ভিন্ন মতাবলম্বীর জন্য ভীতিকর রাষ্ট্রে পরিণত করছে, যা জনযুদ্ধের মাধ্যমে গড়ে ওঠা বাংলাদেশের ধর্মনিরপেক্ষতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতার নীতিকে কলঙ্কিত করছে ।

একটি নির্দিষ্ট ধর্মের প্রতি রাষ্ট্রের অধিক গুরুত্ব প্রদান এবং ধর্মীয় উগ্রপন্থার অপ্রতিরোধ্য অগ্রাসনেও নিষ্ক্রিয় থাকা দেশে ধর্ম ও জাতিগত নিপীড়ন প্রবণতার সৃষ্টির জন্য দায়ী বলে উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে। প্রতিটি ঘটনার পরে ‘তদন্ত কমিটি গঠন ও ঘটনাস্থলে কয়েক দিনের পুলিশি পাহারা বসিয়ে’ রাষ্ট্রীয় দায় শেষ করার বিপরীতে রাষ্ট্রকে কঠোর নীতি অনুসরণ করার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিতে সচেতন নাগরিকরা বলেন, ‘সকল ধর্ম ও বিশ্বাসের মানুষের জন্য মুক্তিযুদ্ধের মৌল চেতনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় রাষ্ট্র তথা সরকারকে ধর্মবোধের রাজনীতি থেকে মুক্ত হয়ে কঠোরতার সঙ্গে ধর্মীয় উগ্রতা ও জঙ্গিবাদ মোকাবিলা করতে হবে।’

বিবৃতি স্বাক্ষরকারীরা হলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, রাশেদা কে চৌধুরী, ঐক্য ন্যাপ-এর সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য রামেন্দু মজুমদার, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলী, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত, মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম, সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদ বিরোধী মঞ্চের সদস্য সচিব ড. নুর মোহাম্মদ তালুকদার, বাংলাদেশ কৃষক সমিতির সভাপতি এস এম এ সবুর, মানবাধিকার কর্মী খুশী কবির, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট তবারক হোসাইন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম এম আকাশ, রোবায়েত ফেরদৌস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য রনজিৎ কুমার সাহা ও এএলআরডি’র নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা।