Leadসব সংবাদ

মামুনুল হকসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা তদন্তের নির্দেশ

বায়তুল মোকাররমে তাণ্ডবের ঘটনায় হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা আগামী ২৭ মে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আদেশ দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ধীমান চন্দ্র মণ্ডলের আদালত মামলার এজাহার গ্রহণ করেন। এরপর মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য তারিখ ধার্য করেন।

মামলার অপর আসামিরা হলেন—হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা লোকমান হাকিম, যুগ্ম মহাসচিব নাসির উদ্দিন মনির, নায়েবে আমির মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া, মাওলানা নুরুল ইসলাম জেহাদী, নায়েবে আমির ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা সাজেদুর রহমান, লালবাগের মাওলনা হাবিবুর রহমান, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, মাওলানা জসিম উদ্দিন, মাওলানা মাসুদুল করিম, মুফতি মনির হোসেন কাসেমী, মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়েজী, মাওলানা ফয়সাল আহমেদ, মাওলানা মুশতাকুন্নবী, মাওলানা হাফেজ মোহাম্মদ জোবায়ের, মাওলানা হাফেজ মোহাম্মদ তৈয়ব।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মতিঝিল জোনের সহকারী কমিশনার জাহিদুল ইসলাম জানান, হেফাজত নেতা মামুনুল হকসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। পুরান ঢাকার বাসিন্দা আরিফ-উজ-জামান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন। আসামিদের শনাক্ত ও গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

নাম উল্লেখ করে ১৭ জন ছাড়াও এ মামলার অজ্ঞাতনামা আসামির সংখ্যা দুই থেকে তিন হাজার। এজাহারে বাদী আরিফ-উজ-জামান বলেছেন, গত ২৬ মার্চ শুক্রবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে আমি বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে যাই। ফরজ নামাজ শেষে মসজিদের ভেতর কিছু উচ্ছৃঙ্খল, ধর্মান্ধ ব্যক্তিকে জুতা প্রদর্শনসহ বিভিন্ন ধরনের রাষ্ট্রবিরোধী স্লোগান দিতে দেখি। নামাজ শেষে মসজিদ থেকে বের হয়ে বাইরে উত্তর গেটের সিঁড়িতে কয়েক হাজার জামায়াত-শিবির, বিএনপি, হেফাজতের উগ্র মৌলবাদী ব্যক্তিদের উচ্ছৃঙ্খল জমায়েত দেখতে পাই।

অভিযোগে তিনি আরও বলেন, তাদের স্লোগান ও কথোপকথন থেকে জানতে পারি যে হেফাজত ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের নেতৃত্বে শীর্ষস্থানীয় জামায়াত-শিবির, বিএনপি, হেফাজত নেতারা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গোপন বৈঠকে মিলিত হয়ে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে দেশি-বিদেশি সরকার প্রধান ও রাষ্ট্রপ্রধানদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত কর্মসূচিকে বানচাল করতে ঢাকাসহ সারা দেশে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টির পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্র করেন।

এজাহারে বলা হয়েছে, তারা দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্রসহ দা, ছোরা, কুড়াল, কিরিচ, হাতুড়ি, তলোয়ার, বাঁশ, গজারি লাঠি, শাবল ও রিভলভার, পাইপগানসহ অন্যান্য অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সাধারণ মুসল্লিদের ওপর হামলা করে।

ব্যবসায়ী আরিফ-উজ-জামান অভিযোগ করেন, হেফাজত নেতা মাওলানা মামুনুল হকের নির্দেশে মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব তার হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় আঘাত করেন। পরে তিনি আমার ডান হাঁটু পিটিয়ে জখম করেন। এ সময় আমি মাটিতে পড়ে গেলে মাওলানা লোকমান হাকিম ও নাসির উদ্দিন মনির তাদের হাতে থাকা বাঁশের লাঠি দিয়ে আমাকে পিটিয়ে আহত করেন। একপর্যায়ে মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া তার হাতে থাকা ধারালো কিরিচ দিয়ে আমার মাথার পেছনে আঘাত করেন। পরে নুরুল ইসলাম জিহাদী বাঁশের লাঠি দিয়ে বাম বাহুতে পেটান।

এজাহারে বলা হয়, স্থানীয় জনতার শক্ত প্রতিরোধের কারণে হেফাজত নেতাকর্মীরা পিছু হটেন। তারা দুটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেন। এছাড়া তারা টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ করেন। বায়তুল মোকাররম মসজিদের আশপাশের দোকানে হামলা চালিয়ে লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগ করেন। আসামিরা বায়তুল মোকাররমসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় তাণ্ডব চালিয়ে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন।