সব সংবাদস্পটলাইট

তারুণ্যের আলোক শিখায় বঙ্গবন্ধু

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর ১০ দিন ব্যাপী অনুষ্ঠানের চতুর্থ দিনের থিম ছিল ‘তারুণ্যের আলোক শিখা’। পুরো অনুষ্ঠান জুড়েই ছিল বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আলোচনা, তার প্রিয় গান এবং সংগ্রাম কথা।

শনিবার (২০ মার্চ) জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডের এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার ছোট বোন শেখ রেহানা। পুরো অনুষ্ঠানকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। বিকাল ৫টা থেকে আলোচনা এবং সাড়ে ৬টা থেকে শুরু হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

অনুষ্ঠানের প্রথম পর্ব সঞ্চালনা করেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক। ‘তারুণ্যের আলোকশিখা’ থিমের ওপর বক্তৃতা করেন কথা সাহিত্যিক মুহাম্মদ জাফর ইকবাল। বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’, ‘আমার দেখা নয়া চীন’ এবং ’কারাগারের রোজনামচা’ বইয়ের বিভিন্ন উদ্ধৃতি টেনে তারুণ্যের শেখ মুজিবকে ফুটিয়ে তোলেন জাফর ইকবাল।

স্কুল জীবনে সহপাঠীকে ছাড়িয়ে আনার গল্প, দাঙ্গা-দুর্ভিক্ষ মোকাবিলায় ভূমিকা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের পাশে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধুর ছাত্রত্ব হারানোর কথাও স্মরণ করিয়ে দেন তিনি। বেরিবেরি রোগে আক্রান্ত হওয়ায় স্কুলে বঙ্গবন্ধুর পড়াশোনায় ছেদ পড়েছিল। পরে সহপাঠীদের থেকে বয়সে বড় মুজিব স্বভাবগতভাবেই তাদের নেতা হয়ে ওঠেন।

বৈষম্য ও অসমতার বিরুদ্ধে সংগ্রামের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অনন্তকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবেন বলে মন্তব্য করেন ইসলামী রাষ্ট্রগুলোর জোট ওআইসির মহাসচিব ইউসুফ বিন আহমেদ আল ওথাইমিন। চতুর্থ দিনের আয়োজনে এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘১৯২০ সালের মার্চে জন্ম নেওয়া জাতির জনক বৈষম্য, অসমতা দূর করার সংগ্রামে তার সারাজীবন উৎসর্গ করেছেন। নিজের দেশকে সোনার বাংলায় রূপ দিতে তার প্রচেষ্টা অনন্তকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় ভাগে লোকজ ও দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করেন কণ্ঠশিল্পী পান্থ কানাই, সাব্বির, কোনাল, কনাসহ আরও অনেকে। গানের তালে ছিল নাচ। দর্শক সারিতে প্রধানমন্ত্রী ও তার বোন হাততালি দিয়ে কণ্ঠশিল্পীদের পরিবেশনার প্রশংসা করেন। তাদের পাশে ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেছেন অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী ও অভিনেত্রী জয়া আহসান।

জাপানের দুই সংগীতশিল্পীর কণ্ঠে ‘ধনধান্য পুষ্পভরা’ গান শুনে মুগ্ধ হন প্রধানমন্ত্রী।
এই গানের পর চঞ্চল চৌধুরীর সঙ্গে মঞ্চে আসেন জাতীয় নারী দলের অধিনায়ক জাহানারা আলম। উপস্থাপনার পাশাপাশি তারা বঙ্গবন্ধুর লেখা বইয়ের ওপর আলোচনা করেন।

তুরঙ্গমী রেপার্টরি ড্যান্স থিয়েটারের আয়োজনে কোরিওগ্রাফি ‘অদম্য’ পরিবেশন করা হয় অনুষ্ঠানে। ‘অদম্য’ পরিচালনা ও পরিবেশনা করেন তুরঙ্গমীর পরিচালক নৃত্যশিল্পী পূজা সেনগুপ্ত। তিনি নিজেই বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে পারফর্ম করেন। কোরিওগ্রাফিতে ভাষা ও সংস্কৃতিভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনের যে স্বপ্ন বঙ্গবন্ধু দেখেছিলেন, সেটিকে বাস্তব রূপে তুলে ধরা হয়। দাবার কোর্টের ওপর করা মঞ্চে কোরিওগ্রাফিটি পরিবেশন করা হয়। ‘অদম্য’-এর জন্য কাজ করেন ৩৫ জন শিল্পী-কলাকুশলী, যাদের ২৩ জন মঞ্চে পারফর্ম করেন।

এছাড়াও অনুষ্ঠানে দুই প্রজন্মের শিল্পীদের কণ্ঠে গাওয়া হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রিয় গানগুলো।