Leadশিক্ষা-সংস্কৃতিসব সংবাদ

নেতিবাচক মানসিকতা পরিবর্তনে গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান দীপু মনির

মানুষের ‘নেগেটিভ ফ্রেম অব মাইন্ড’ পরবর্তনে গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. ডা. দীপু মনি। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সস্টিটিউট মিলনায়তনে বাংলাদেশ এডুকেশন রিপোর্টার্স ফোরাম (বিইআরএফ) আয়োজিত ‘শিক্ষার পরিবেশ ও শিক্ষার্থীর সার্বিক নিরাপত্তা’ মত বিনিময় সভায় তিনি এ আহ্বান জানান।

দেশে নারী নির্যাতসহ বিভিন্ন ঘটনার প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘মানুষের নেগেটিভ ফ্রেম অবমাইন্ড চেঞ্জ করা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘নৈতিকতা ধ্বংস হলে রাতারাতি ফিরে আনা যায় না। অনেক কিছু ভেঙে গেলে জোড়া দেওয়া যায়, নৈতিকতা ভেঙে গেলে জোড়া দেওয়া যায় না। এটা জোড়া দেওয়ার মতো কোনও সুপারগ্লু নেই। এই জায়গায় গণমাধ্যমের একটি বিরাট ভূমিকা রয়েছে। ’

শিক্ষার্থীদের মানসম্মত শিক্ষা ও মানুষের মতো মতো মানুষ গড়তে সংবাদ মাধ্যমের সহযোগিতা চান শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন দিক থেকে অ্যাড্রেস করার চেষ্টা করছি। কারিকুলাম সংশোধন, শিক্ষক প্রশিক্ষণ, অবকাঠামো উন্নয়ন, আইসিটি শিক্ষা এবং অভিভাবকদের সচেতন করার মাধ্যমে চেষ্টা করে যাচ্ছি। এ ক্ষেত্রে গণমাধ্যম বিশাল ভূমিকা রাখে। যে আন্তরিকতা দিয়ে আপনার তথ্য সংগ্রহ করেন, প্রচার করেন, সেই জায়গা থেকে আমি আপনাদের কাছে বিনীতভাবে  অনুরোধ করছি আপনাদের আর একটু সচেতন হওয়ার প্রয়োজন আছে। যখন দেখি অপরাধ ঘটলে প্রথম পাতায় ছাপা হয়। অপরাধের বিচারে শাস্তি হলে ভেতরে কোথায় যেনও চলে যায়।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমি গণমাধ্যমকরমীদের সঙ্গে সম্পাদকদের সঙ্গে কথা বলে দেখেছি, তারা বলেন—পজেটিভ নিউজ লোকে খায় না। আপনাদের এই জায়গা থেকে বের হতে হবে। আপনি যদি সমাজের পজেটিভ চেঞ্জ আনতে চান, আপনাকে পজেটিভ নিউজকে তুলে ধরতে হবে। অকেক মানুষের পুরো পত্রিকা পড়ার সময় হয় না। আবার অনেকেই সারা দিনেও পুরো পত্রিকা পড়বেন না। ঘুম থেকে উঠে কাজে বেরুবার আগে হেডলাইন দেখেই চলে যাবেন। একজন মানুষ যদি পত্রিকার হেডলাইন সবই নেতিবাচক দেখে, তিনি একটা নেতিবাচক ‘ফ্রেম অব মাইন্ড’ (মানসিক কাঠামো) নিয়ে দিন শুরু করবেন। আপনি তার কাছ থেকে পজেটিভ অ্যাপ্রোস জীবনেও পাবেন না। এই জায়গায় গণমাধ্যমের বিশাল একটা ভূমিকা রয়েছে। আপনাদের কাগজের ছাইজটা নেহায়েতই কম নয়।

গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ডা. দীপু মনি বলেন, “অন্তত ২৫ শতাংশ করে প্রথম ও শেষ পাতায় যদি পজেটিভ নিউজ দেন, তাহলে একজন মানুষ ২৫ শতাংশ পজেটিভ ‘ফ্রেম অব মাইন্ড’ নিয়ে দিনের কাজ শুরু করবে। সকালে অন্তত ২৫ ভাগ পজেটিভ মানসিকতা নিয়ে বের হতে পারবেন। এইটু আপনাদের কাছে অনুরোধ করছি।’

শিক্ষামন্ত্রী গণমাধ্যমের সঙ্গে তার ঘনিষ্টতা তুলে ধরে বলেন, ‘এই দেশে যারা গোড়া থেকে সংবাদপত্রের সঙ্গে জড়িত, আমি তাদের একজনের কন্যা। দেশের একটি বড় পত্রিকার প্রেসের মধ্যে দৌড়াদৌড়ি করে কেটেছে আমার ছোট বেলা। পত্রিকার প্রেসের মধ্যে আমার শৈশব কেটেছে দিনের বেশিরভাগ সময়। সংবাদ মাধ্যমকে আমি আমার পরিবার মনে করি। আমি বিনীতভাবে অনুরোধ করবো, বাংলাদেশের মানুষের ‘পজেটিভ মানস’ গঠনে আপনাদের বিশাল ভূমিকা রয়েছে। কোন সংবাদ লোকে খায়, সেই হিসাব করে আপনাদের কাজটি করবেন না। কোন জিনিসটি মানুষকে খাওয়ালে দেশ এগুবে, জাতি এগুবে দয়া করে সেই কাজটি করুন।’

অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মত বিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. ফসিউল্লাহ্, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) মো. শাহেদুল খবির চৌধুরী, শিক্ষক-কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য সচিব শাহজাহান আলম সাজু, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ফওজিয়া রেজওয়ান, সিটি কলেজের অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের ডিরেক্টর-লিগ্যাল অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড লবি অ্যাডভোকেট মাকছুদা আখতার, বাংলাদেশ এডুকেশন রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি মোস্তাফা মল্লিক, সাধারণ সম্পাদক এস এম আববাস এবং সাংগাঠনিক সম্পাদক নূর এ আলম পিন্টু।