Leadশিক্ষা-সংস্কৃতিসব সংবাদ

দারুল ইহসানের সনদধারী শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওভুক্তির অপেক্ষা বাড়লো

ঢাকা জার্নাল: উচ্চ আদালতের নির্দেশের দুই বছরের বেশি সময় অপেক্ষার পরও দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদধারীদের এমপিওভুক্তির ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত দেয়নি সরকার। মঙ্গলবার (২৮ আগস্ট) আদালতের রায়ের আলোকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে এমপিওভুক্তির একটি আদেশ জারি করলেও তা বুধবার (২৯ আগস্ট) স্থগিত করা হয়েছে। ফলে দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওভুক্তির অপেক্ষা বাড়লো। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (বেসরকারি মাধ্যমিক) জাবেদ আহমেদ বলেন, ‘উচ্চ আদালতের রায়ের নির্দেশনা অনুযায়ী আদেশ দেওয়া হয়েছিলো। তবে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আদেশটি স্থগিত করা হয়েছে। আদেশ বাতিল হয়নি। বিষয়টি সময় সাপেক্ষ।’

শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও সশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০০৬ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ১৩টি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৬ সালের ১৩ এপ্রিল হাইকোর্ট রায় ঘোষণা করেন। রায়ে দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এই নামে কোনও বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের অনুমতি না দেওয়ার জন্য সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়। রায়ে বলা হয়, দারুল ইহসান কোনও বিশ্ববিদ্যালয় নয়। তবে সনদ অবৈধ ঘোষণা করেননি আদালত। সনদের গ্রহণযোগ্যতার বিষয়ে আদালত রায়ে বলেছেন, ২০১৬ সালের ১৩ এপ্রিলের আগের সনদধারীদের সনদের গ্রহণযোগ্যতা মূল্যায়ন করবে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ (বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ হচ্ছে—গভর্নিং বডি, ম্যানেজিং কমিটি)।

আদালতের এই রায়ের পর দুই বছরের বেশি সময় ধরে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওভুক্তি বন্ধ থাকে। দুই বছর অপেক্ষার পর হাইকোর্টের রায়ের আলোকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় গত মঙ্গলবার (২৮ আগস্ট)।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের ওই আদেশে বলা হয়, ‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা মোতাবেক দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা সনদের গ্রহণযোগ্যতার বিষয়ে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি, ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে এবং ওই সনদের ভিত্তিতে বিধি মোতাবেক নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওভুক্ত সংক্রান্ত সব কার্যক্রম মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর গ্রহণ করবে।’

জানা যায়, এই আদেশের পর দুই বছর থেকে ছয় বছর পর্যন্ত বিনা বেতনে চাকরি করা প্রায় তিন হাজার শিক্ষক-কর্মচারীর এমপিওভুক্তির বিষয়টি সুরাহা হয়। কিন্তু আদেশটি বুধবার (২৯ আগস্ট) স্থগিত করায় আবারও উৎকণ্ঠা দেখা দেয় শিক্ষকদের মধ্যে।

মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর গার্লস হাই-স্কুলের শরীরচর্চা শিক্ষক শাহ আলম প্রাং বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমার বাবা নাপিত। অনেক কষ্ট করে দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১২ সালে অনার্স পাস করি। তারপর জাতীয় বিশ্ববিদ্যলয়ের আধীন রাজশাহী শহীদ জিয়া শারীরিক শিক্ষা কলেজ থেকে বিপিএড করি। ২০১৫ সালে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) থেকে নিবন্ধন পাই। এনটিআরসি আমাকে ২০১৬ সালে শরীরচর্চা শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়। আমার কী অপরাধ, আমি বেতন পাবো না?’

ঢাকা জার্নাল, আগস্ট ২৯, ২০১৮।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.