রোহিঙ্গা ইস্যুতে আইসিসিতে মত জানালো বাংলাদেশ, ২০ জুন শুনানি
ঢাকা জার্নাল: চলমান রোহিঙ্গা সংকট ইস্যুতে আন্তর্জাতিক ক্রিমিনাল কোর্টের (আইসিসি) অনুরোধে সাড়া দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিমত জমা দিয়েছে বাংলাদেশ। সোমবার (১১ জুন) সকালে নেদারল্যান্ডসে আইসিসির সদর দফতরে আদালতের রেজিস্ট্রার পিটার লুইসের কাছে এই অভিমত জমা দিয়েছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শেখ মোহাম্মাদ বেলাল। এদিকে আগামী ২০ জুন আইসিসির প্রি-ট্রায়াল চেম্বারে এ বিষয়ে শুনানি হবে। এ সময় কেবল আইসিসির প্রসিকিউটর ফেতো বেনসুদা উপস্থিত থাকবেন। সরকারের একজন কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে আইসিসির প্রি-ট্রায়াল চেম্বার গত ৭ মে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিচারের বিষয়ে অভিমত সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠিয়ে ১১ জুনের মধ্যে প্রকাশ্যে বা গোপনে অভিমত জানানোর জন্য অনুরোধ জানান।
বাংলাদেশ ছাড়া এখন পর্যন্ত তিন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান আইসিসির অনুরোধে সাড়া দিয়ে তাদের অভিমত দিয়েছে।
এই প্রসঙ্গে সরকারের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘আজ বাংলাদেশ শুধু নিজেদের অভিমত দিয়েছে। পরবর্তী সময়ে যদি কোর্ট ফ্যাক্টস চায়, তবে সেটিও সরবরাহ করতে আমরা প্রস্তুত।’ এই বিষয়ের স্পর্শকাতরতা বিবেচনা করে বাংলাদেশ গোপনীয়ভাবে অভিমত দিয়েছে বলেও তিনি জানান।
এখন পর্যন্ত অ্যামিকাস কিউরি (কোর্টের বন্ধু) হিসেবে ডা. মোহাম্মাদ হাদি জাকের হোসেইন ও আন্তর্জাতিক কমিশন অব জুরিস্ট তাদের অভিমত দিয়েছেন। এছাড়া ৪০০জন রোহিঙ্গার পক্ষে একটি আন্তর্জাতিক এনজিও গ্লোবাল রাইটস কমপ্লায়েন্সও মত দিয়েছে।
আইসিসির প্রসিকিউটর ফেতো বেনসুদা মিয়ানমার থেকে জোর করে রোহিঙ্গাদের তাড়িয়ে বাংলাদেশে পাঠানো সংক্রান্ত অপরাধের বিচার করার অধিকার কোর্টের আছে কিনা, জানতে চেয়ে গত ১৯ এপ্রিল একটি পিটিশন দাখিল করেন। এর ধারাবাহিকতায় আইসিসি বাংলাদেশের অভিমত চেয়েছেন।
২০ জুন শুনানি
আগামী ২০ জুন আইসিসির প্রি-ট্রায়াল চেম্বার এ বিষয়ে শুনানির জন্য রুদ্ধদ্বার কক্ষে মিলিত হবেন। শুনানির সময় আদালতে কেবল আইসিসির প্রসিকিউটর ফেতো বেনসুদা উপস্থিত থাকবেন।
জাতিসংঘের কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমারে সংঘটিত অপরাধের বিষয়ে দায়বদ্ধতার বিষয়টি তুলে আসছিলেন। এ কারণে বেনসুদা এই ইস্যুটি কোর্টের সামনে নিয়ে আসেন।
সম্প্রতি গণহত্যা সংক্রান্ত জাতিসংঘের বিশেষ দূত আদামা দিয়েং বাংলাদেশ সফরের সময়ে মন্তব্য করেন, ‘মিয়ানমারে আন্তর্জাতিক অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। রোহিঙ্গা মুসলিমদের শুধু তাদের পরিচয়ের জন্য হত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন, জীবিত পুড়িয়ে মারা ও অন্যান্য অপরাধ সংঘটিত হয়েছে।’
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর অত্যাচারে ১১ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। এরমধ্যে গত ২৫ আগস্টের পরে যারা পালিয়ে এসেছে, তাদের মধ্যে ৩০ হাজার অন্তঃসত্ত্বা নারী, ৩৬ হাজার অনাথ এবং বাবা মা নিখোঁজ, এমন প্রায় আট হাজার শিশু বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।
ঢাকা জার্নাল, জুন ১১, ২০১৮।