অস্তিত্বহীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এমপিওভুক্ত কতটি, জানতে চায় মন্ত্রণালয়
ঢাকা জার্নাল : এডুকেশনাল ইনস্টিটিউশন আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (ইআইআইএন) রয়েছে অথচ বাস্তবে কোনও অস্তিত্ব নেই সারাদেশে এমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা) রয়েছে ১৮৯টি। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম জানা নেই সরকারের। এমনকি কোনও প্রতিষ্ঠানের নামে এমপিও রয়েছে কিনা তাও অজানা। তাই অস্তিত্বহীন কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত কিনা তা জানতে চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মহাপরিচালকের কাছে তথ্য চেয়ে চিঠি দিয়েছে মাধ্যমিক উচ্চশিক্ষা বিভাগ। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ছাত্র-ছাত্রী নেই, এমনকি বাস্তবে কোনও ভবনেরও অস্তিত্ব নেই এমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে সরকারের তালিকায়। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কী কার্যক্রম চলে তাও জানা নেই মন্ত্রণালয়ের। এ কারণে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ সারাদেশে অস্তিত্বহীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কতটি তা জানতে গত বছর মাউশির পরিচালকের কাছে চিঠি দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ওই চিঠির পর গত বছর ২৮ নভেম্বর মাউশির পরিচালক (প্রশাসন ও কলেজ) অধ্যাপক মোহাম্মদ শামছুল হুদা স্বাক্ষরিত দেশের ৯টি অঞ্চল ও ৬৪ জেলার শিক্ষা কর্মকর্তাদের কাছে দেশের অস্তিত্বহীন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা চাওয়া হয়। জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ, শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ বন্ধ, প্রশ্নপত্র ফাঁস, ঝরে পড়া রোধ ও দেশীয় সংস্কৃতির বিকাশে এই তথ্য চাওয়া হয়েছিল বলে জানায় মাউশি।
মাঠ পর্যায় থেকে তথ্য পাওয়ার পর গত ৩ এপ্রিল মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক মো. মাহাবুবুর রহমান শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব বরাবর চিঠি দিয়ে জানান সারাদেশে অস্তিত্বহীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মোট ১৮৯টি। ওই চিঠিতে অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশনা চান মহাপরিচালক।
মহাপরিচালকের ওই চিঠির পর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ মঙ্গলবার (৪ জুন) মহাপরিচালক বরাবর আবার চিঠি দেয়। উপসচিব মো. কামরুল হাসান স্বাক্ষরিত চিঠিতে ওই চিঠিতে বলা হয়, যেসব প্রতিষ্ঠানের বাস্তবে অস্তিত্ব নেই অথচ এডুকেশনাল ইনস্টিটিউশন আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (ইআইআইএন) রয়েছে সেসব প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত কিনা তা যাচাই করে সাত দিনের মধ্যে তথ্য পাঠানোর জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
অস্তিত্বহীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে মাউশির পরবর্তী পদক্ষেপ কী জানতে চাইলে মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক মো. মাহাবুবুর রহমান বলেন, ‘অস্তিত্ব নেই এমন প্রতিষ্ঠান ছেঁটে ফেলা প্রয়োজন। মন্ত্রণালয়ে পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য মতামত চাওয়া হয়েছে। মতামত পাওয়া গেলে এসব প্রতিষ্ঠান ছেঁটে ফেলা হবে।’
এ বিষয়ে মাউশির পরিচালক (মাধ্যমিক) ড. আব্দুল মান্নান বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের পরবর্তী নির্দেশনা পেলে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকলে এমপিও বন্ধ করে দেওয়া হবে। আমরা দ্রুত তথ্য সগ্রহ করে মন্ত্রণালয়কে জানাবো।’
এর আগে এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের যুগ্মসচিব (মাধ্যমিক) সালমা জাহান বলেছিলেন, এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে মন্ত্রণালয়।’
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সারাদেশে অস্তিত্বহীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ঢাকায় রয়েছে ২০টি, ময়মনসিংহ অঞ্চলে ৭টি, সিলেট অঞ্চলে ৮টি, বরিশাল অঞ্চলে ২২টি, রাজশাহী অঞ্চলে ৫৯টি, রংপুরে ৭০টি ও চট্টগ্রামে ৩টি।
ঢাকা জার্নাল, জুন ৭, ২০১৮।