রোহিঙ্গাদের জন্য ‘রিফিউজি ক্যাম্প’ করছে মিয়ানমার!
ঢাকা জার্নাল: বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরাতে ‘রিফিউজি ক্যাম্প’ তৈরি করছে মিয়ানমার। দেশটির মংডুর ত্রিশ কিলোমিটার দূরে বলিবাজার থেকে সাহেব বাজার পর্যন্ত বিস্তৃত এই ক্যাম্পে মুসলমান ও হিন্দু রোহিঙ্গাদের রাখা হবে মনে করছেন স্থানীয়রা।
বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) দুপুরে মিয়ানমারের মংডুর হরিতলা থেকে ইন্টারনেট আলাপকালে এ তথ্য দেন স্থানীয় মাদ্রাসা শিক্ষক মৌলভি আবদুল করিম। তার কথা অনুবাদ করেন টেকনাফের মুছুনি ক্যাম্পে থাকা মৌলভি করিমের ভগ্নিপতি রোহিঙ্গা আবদুল্লাহ ওরফে আরিফ।
আবদুল্লাহ জানান, মৌলভি করিম মংডুর হরিতলা গ্রামে বসবাস করছেন। এই গ্রামটিতে মিয়ানমার সরকারের নিপীড়ন অপেক্ষাকৃত কম। ইন্টারনেটে মৌলভি করিম তাৎক্ষণিক তার বাড়ির আশেপাশের অবস্থার ছবি তুলে পাঠান। এরমধ্যে হরিতলা গ্রামে রাস্তা, ধানক্ষেত, বন্ধ স্কুল ও মাদ্রাসার ছবি রয়েছে।
মৌলভি করিম জানান, তিনি বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে ফেরত যাওয়া রোহিঙ্গা স্বজনদের কাছ থেকেই শুনেছেন, মিয়ানমার সরকার বলিবাজার থেকে শাববাজর পর্যন্ত শরণার্থী ক্যাম্প তৈরি করছে।
টেকনাফের ক্যাম্পে থাকা রোহিঙ্গা আবদু্ল্লাহ বলেন, ‘শাববাজার থেকে বলিবাজারের দূরত্ব প্রায় ৬ কিলোমিটার। এর পুরো জায়গায় ক্যাম্প তৈরি করছে মিয়ানমার সরকার। আবদুল্লাহর দাবি, এই দু’টি স্থানে রোহিঙ্গাদের বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দিয়ে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও মগরা দখল করেছে।’ তিনি আরও জানান, ‘বলিবাজার-শাববাজার বাংলাদেশের ঘুমধুম সীমান্তের কাছেই অবস্থিত।’ তবে ওই এলাকার কোনও ছবি পাওয়া যায়নি।
তিনি জানান, তার গ্রামে এখন মিয়ানমার বাহিনীর নির্যাতন অপেক্ষাকৃত কম। তবে তারা বাড়ির আশপাশ থেকে দূরে কোথাও যাওয়া-আসা করেন না। এমনকি ঘরের কাছে নিজেদের লাগানো ধান পাকলেও কাটতে মানা রয়েছে।
মৌলভী করিম জানান, প্রায় ৫-৬ দিন আগে থেকে বলিবাজার-শাববাজার এলাকায় ক্যাম্প স্থাপনের কাজ শুরু হয়।
এ বিষয়ে কথা হয় রোহিঙ্গা ইসমাইলের সঙ্গে। তিনি জানান, রোহিঙ্গাদের বাড়িঘরে থাকতে দেওয়া হবে না, এ কারণে ক্যাম্প করছে সরকার।
মিয়ানমার সরকার ইতোমধ্যেই দাবি করেছে, তারা রোহিঙ্গাদের নিতে চাইলেও ঢাকা অনুমতি দিচ্ছে না। গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, প্রথমবারের অঘোষিত সফরে আজ বৃহস্পতিবার মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সাং সু চি দেশটির উত্তরাঞ্চলে সহিংসতাপূর্ণ রাখাইন রাজ্যে সফর করেছেন।
এ প্রসঙ্গে সংবাদ সংস্থা এএফপিকে মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্র জো হাতে বলেন, স্টেট কাউন্সেলর সু চি মিয়ানমারের সহিংসতাপূর্ণ সিতি, মংডু ও বুথিডংয়ে যাবেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, তারা এ বিষয়ে এখনও কিছু জানেন না।
ঢাকা জার্নাল, নভেম্বর ২, ২০১৭।