সব সংবাদস্পটলাইট

জ্ঞান ফিরেছে তৌফা-তহুরার

গাইবান্ধায় কোমর জোড়া লাগানো অবস্থায় জন্ম নেয়া শিশু তৌফা ও তহুরার সফল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে।  মঙ্গলবার (১ আগস্ট) ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এক দল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সার্বিক তত্ত্বাবধানে সফল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তাদের আলাদা করা হয়েছে।

শিশু সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. আবদুল হানিফ টাবলু বিকেল জানান, তৌফা-তহুরার দেহে সফল অস্ত্রোপচার হয়েছে। অস্ত্রোপচার শেষে দুজনের জ্ঞান ফিরেছে। জ্ঞান ফেরার পর কান্নাকাটিও করেছে।

তিনি জানান, অস্ত্রোপচার শেষে দুজনকে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) স্থানান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। আইসিইউতে রেখে তাদের শারীরিক অবস্থার নিবিড় মনিটরিং করা হবে।

জানা গেছে, দুই দফায় এ জোড়া শিশুর অস্ত্রোপচার হয়। সকাল ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা ও পরবর্তীতে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত অস্ত্রোপচার চলে।

প্রথম দফায় অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হওয়ার পর শিশু সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক কানিজ হাসিনা শিউলি সাংবাদিকদের জানান, সকাল ৮টায় জরুরি বিভাগের তৃতীয় তলার অপারেশন থিয়েটারে অস্ত্রোপচার শুরুর পর বেলা আড়াইটায় শেষ হয়। ওরা দুজন এখন আলাদা। দুজনের অবস্থাই স্থিতিশীল। এখনও কিছু রিপেয়ারের কাজ বাকি আছে। আরও দুই-তিন ঘণ্টা সময় আমাদের লাগবে।

তিনি বলেন, তৌফা ও তহুরার স্পাইনাল কর্ড ও মেরুদণ্ড আলাদা করতে পেরেছি। এ পর্যন্ত যতটুকু সম্পন্ন হয়েছে, তা সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। শিশু দুটি ভালো আছে। দুই শিশুকে আলাদা করার পর দুপুরে চিকিৎসকদের অন্য দলটি শুরু করেন দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ।

এর আগে ঢামেক বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন সকালে জানিয়েছিলেন শিশু সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. আশরাফুল হক কাজলের নেতৃত্বে একদল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সার্বিক তত্ত্বাবধানে অস্ত্রোপচার চলছে।

উল্লেখ্য, গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়নের ঝিনিয়া গ্রামের রাজু মিয়ার স্ত্রী সাহিদা বেগম নিজ বাড়িতে জোড়া লাগানো অবস্থায় দুই কন্যাসন্তানের জন্ম দেন।

কোমরের কাছে জোড়া লাগানো শিশু দুটির সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গই রয়েছে, তবে তাদের প্রস্রাব-পায়খানার রাস্তা একটি। গত বছরের অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহে প্রথমবার ঢামেক হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করে তাদের পায়ুপথ আলাদা করা হয়। সাহিদা বেগম ও রাজু মিয়া দম্পতির পাঁচ বছর বয়সী একটি ছেলেও রয়েছে।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.