পদ্মা সেতু তিন কোটি মানুষের জীবনমানে পরিবর্তন আনবে
পদ্মা বহুমুখী সেতু চালু হলে শিল্পায়ন ও বানিজ্যিক কর্মকান্ড বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশের দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় তিনকোটি মানুষের জীবনে পরিবর্তন আসবে। পদ্মা সেতুর অর্থনৈতিক প্রভাব সংক্রান্ত বিভিন্ন গবেষণা ও সমীক্ষায় এসব কথা বলা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতুর মূল অংশের নির্মান কাজ ও নদী শাসন কাজ উদ্বোধন করেন। আশা করা হচ্ছে ২০১৮ সালে সেতুটি যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে। বিশ্বব্যাংকের এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, দেশের মোট জনসংখ্যার এক-পঞ্চমাংশ বা কমপক্ষে তিনকোটি মানুষ সরাসরি এই সেতুর মাধ্যমে উপকৃত হবে। এতে বলা হয়, এই সেতুর মাধ্যমে আঞ্চলিক বাণিজ্য সমৃদ্ধ হবে, পাশাপাশি দারিদ্র বিমোচন হবে এবং উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধি গতি ত্বরান্বিত হবে। দেশের ওই অঞ্চল থেকে রাজধানী ঢাকার দূরত্ব গড়ে ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত কমবে। আরেক সমীক্ষায় এশিয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) নির্মানের ফলে দেশের আঞ্চলিক ও জাতীয় অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে লক্ষনীয় অগ্রগতি হবে। এই সেতু চালু হলে মানুষ ও পণ্য পরিবহনের সময় ও অর্থ সাশ্রয় হবে, যানবাহন রক্ষনাবেক্ষন, জ্বালানী ও আমদানি ব্যয় হ্রাস পাবে। এডিবি’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এই সেতুর মাধ্যমে শিল্পায়ন ও বানিজ্যিক কর্মকাণ্ড প্রসারের লক্ষ্যে পুঁজির প্রবাহ বাড়বে, পাশাপাশি স্থানীয় জনগনের জন্য অর্থনৈতিক ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এছাড়াও স্থানীয় জনগন উন্নততর স্বাস্থ্য সেবা, শিক্ষা ও প্রশিক্ষনের জন্য খুব সহজেই রাজধানী ঢাকা যেতে পারবেন। সেতু নির্মানের ফলে নদীর তীর সংরক্ষনের ফলে নদীভাঙ্গন ও ভূমিক্ষয় কমবে। আর সেতুর নির্মান চলাকালে বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্থানীয় বাসিন্দাদের কর্মসংস্থান হবে। এডিবি’র মতে, এই সেতুর ফলে দেশের জিডিপি ১ দশমিক ২ শতাংশ এবং আঞ্চলিক জিডিপি ৩ দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। ভারতের ‘ইকোনমিক টাইমস’-এ প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়েছে, এই সেতুটি (পদ্মা সেতু) বাংলাদেশের জন্য গৌরবের এবং অর্থনীতির জন্য যুগান্তকারি ঘটনা। যা ২০২১ সালের মধ্যে দেশটিকে ‘মধ্যম আয়ের’ দেশে রূপান্তরের ক্ষেত্রে সরকারের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ক্ষেত্রেও সহায়ক হবে। নিউইয়র্ক ভিত্তিক আমেরিকান সোসাইটি অব মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার্স (এএসএমই)-এর মতে, এই সেতুটি (পদ্মা সেতু) রাজধানী ঢাকা ও তুলনামূলকভাবে উন্নত অন্যান্য এলাকার সাথে সংযুক্ত করার মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে অনগ্রসর দেশের দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলের রূপান্তর ঘটাবে। এতে আরও বলা হয়, ঢাকা- কলকাতা (ভারত) সংযোগ সড়কে অবস্থিত এই সেতুটি এশিয়ান হাইওয়ে এবং ইউরো-এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্ক সিস্টেমের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হবে। – বাসস।