কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি ভাড়াটিয়া কল্যাণ সমিতির
ঢাকা : আগামী বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ কমিশন গঠন এবং ৯ দফা বাস্তবায়ন না হলে কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে বাংলাদেশ ভাড়াটিয়া কল্যাণ সমিতি।
রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ভাড়াটিয়া কল্যাণ সমিতি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি অ্যাডভোকেট মেসবাহ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী এ হুঁসিয়ারি দেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন-১৯৯১ ও বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ প্রণীত বিধিমালা ১৯৬৪-এ যথাযথ বাস্তবায়ন, কার্যকর না হওয়ায় দেশের ছয়টি বিভাগীয় শহরে তিন কোটি ভাড়াটিয়া জিম্মিদশায় দিন কাটাচ্ছে। গত ২৫ বছরে (১৯৯০-২০১৫) ছয়টি বিভাগীয় শহরে বাড়িভাড়া বেড়েছে প্রায় ২৫০ শতাংশ।
ঢাকা শহরের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ মানুষ ভাড়াটিয়া। চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, খুলনা মহানগরীতে ৬৫ শতাংশ মানুষ ভাড়াটিয়া। লাগামহীন বাড়িভাড়ায় এ মানুষগুলোর জীবন বিপর্যস্ত। চলতি বছরের ১ জুলাই বাড়ির মালিক ও ভাড়াটিয়াদের সার্বিক সমস্যা নিরসনে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিশন গঠনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। কিন্তু সরকার এ বিষয়ে আন্তরিক না হওয়ায় বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ কমিশন এখনও গঠন হয়নি। এছাড়া বাংলাদেশ ভাড়াটিয়া কল্যাণ সমিতির ৯ দফা দাবি সরকারের কাছে বিভিন্ন সময় উপাস্থাপন করা হলেও তা বাস্তবায়ন করেনি।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ তৌকির আহমদের সঞ্চলনায় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- সহ-সভাপতি এসএম শাহ নেওয়াজ আলী মির্জা, অ্যাডভোকেট জোবায়ের বাপ্পী, অ্যাডভোকেট সাইদুল করিম (মারুফ), সামজাদ হোসেন, আনোয়ার হোসেন (ফয়সাল), এমএ মালেক, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আজিমুল হক খাঁন, আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সোলায়মান, প্রচার সম্পাদক ওমর ফারুক প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সংবিধানের ১৫ অনুচ্ছেদে অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা ও বাসস্থানকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। অথচ জীবনযাপনের মৌলিক প্রতিটি অধিকার নিয়েই প্রচণ্ড চাপের মধ্যে থাকে দেশের মানুষ। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বাসস্থানের সমস্যা। বাড়িভাড়া এখন যন্ত্রণার আরেক নাম। দেশের প্রায় তিন কোটি মানুষ বাড়িভাড়া নিয়ে জিম্মিদশায় জীবন কাটছে। এ পরিস্থিতি দিন দিন প্রকট হচ্ছে। নতুন বছর শুরুই হয় ভাড়া বৃদ্ধির আতঙ্ক দিয়ে। এ জন্য আদালত পর্যন্ত যান অল্প কিছু সচেতন লোক। বাড়তি ভাড়া দিতে না পারলে বাড়ি ছেড়ে দেয়া ছাড়া বাকিদের সামনে আর কোনো পথ খোলা থাকে না।
এতে আরো বলা হয়, চলতি বছরের ১ জুলাই বাড়ির মালিক ও ভাড়াটিয়াদের সার্বিক সমস্যা নিরসনে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিশন গঠনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। ওই রায়ে বলা হয়, কমিশন সুপারিশ না করা পর্যন্ত ১৯৯১ সালের বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩ ধারা অনুযায়ী সরকারের আর্থিক সক্ষমতাসাপেক্ষে প্রতিটি ওয়ার্ডে বাড়ি ভাড়া-সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য একজন করে নিয়ন্ত্রক, অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রক ও উপনিয়ন্ত্রক নিয়োগের উদ্যোগ নেবে। কিন্তু তা এখনও পর্যন্ত বাস্তবায়ন হয়নি।