যেসব যুদ্ধাপরাধী বিচারের অপেক্ষায়
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী ও জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামীর করা আপিল আবেদনের শুনানি চলছে। এছাড়া জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলী, এটিএম আজহারুল ইসলাম, আব্দুস সুবহান, ব্রাক্ষণবাড়িয়া আওয়ামী লীগের বহিস্কৃত নেতা মোবারক হোসেন, হবিগঞ্জের সাবেক জাতীয় পার্টির নেতা সৈয়দ মুহম্মদ কায়সার, চাপাইনবাবগঞ্জের সাবেক মুসলিম লীগ আফসার হোসেন চুটু ও মাহিদুর রহমান, পটুয়াখালীর রাজাকার মো. ফোরকান মল্লিক এবং বাগেরহাটের সিরাজুল হক ওরফে কসাই সিরাজ ও খান আকরাম হোসেনের আপিল পর্যায়ক্রমে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।
অপরদিকে ট্রাইব্যুনালে আমৃত্যু দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত পিরোজপুরের সাবেক এমপি পলাতক জব্বার ইঞ্জিনিয়ারের সাজা বৃদ্ধি করার (মৃত্যুদণ্ড) আর্জি জানিয়ে আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। এছাড়া যুদ্ধাপরাধের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারে ছয়জনের ফাঁসির আদেশ হলেও তারা বিচারের আগে থেকেই বিদেশে পলাতক। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক ছয় যুদ্ধাপরাধী হচ্ছে- জামায়াতের আবুল কালাম আযাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকার, আল বদর নেতা চৌধুরী মাইনুদ্দিন, আশরাফুজ্জামান খান, নগরকান্দার বিএনপি নেতা জাহিদ হোসেন খোকন, রোজপুরের সাবেক এমপি জাতীয় পার্টির নেতা ইঞ্জিনিয়ার আবদুল জব্বার ও কিশোরগঞ্জের রাজাকার সৈয়দ মো. হাসান আলী।
এর আগে ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর জামায়াত নেতা যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর হয়। চলতি বছর ১১ এপ্রিল আরেক যুদ্ধাপরাধী কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকর হয়।
২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল যুদ্ধাপরাধের দায়ে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুদণ্ড দেন। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর তার দণ্ড কমিয়ে আমৃত্যু কারাবাস দেন।
ইতিমধ্যে বিচারে দণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযম এবং জয়পুরহাটের রাজাকার ও বিএনপি নেতা আবদুল আলীম কারাগারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। সাজার আগেই বিচারাধীন অবস্থায় মারা যান জামায়াতের নেতা একেএম ইউসুফ।
চলতি বছর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধের দায়ে ছয়টি মামলার রায় হয়েছে।
দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠনের পর গত পাঁচ বছরে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াত ও জাতীয় পার্টির একাধিক নেতাসহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে ২২টি মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে। বর্তমানে পাঁচটি মামলার বিচার চলছে। পর্যায়ক্রমে আরো নতুন নতুন মামলা যুক্ত হচ্ছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- ময়মনসিংহের এমপি ও জাতীয় পার্টির নেতা এম এ হান্নান, যশোরের সাবেক এমপি সাখাওয়ারত হোসেন, সাতক্ষীরার সাবেক এমপি জামায়াত নেতা আব্দুল খালেক মণ্ডলসহ আরো ৬৪ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত কাজ চলছে।