‘স্বামীর বদলে টাকা নিয়ে কী করব’
‘আমি টাকা পাইলে আমার পরিবার হয়তো সচ্ছল হবে কিন্তু মানসিক শান্তি কখনো পাব না। আমার আর্থিক সচ্ছলতার চাইতে বেশি গুরুত্বপূর্ণ স্বামী হত্যার বিচার। স্বামীর বদলে আমি টাকা নিয়ে কী করব। আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই।’
সোমবার পুলিশ সদর দফতরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের পর এভাবেই সাংবাদিকদের কাছে মিনতি করছিলেন সম্প্রতি নিহত এএসআই ইব্রাহিম মোল্লার স্ত্রী খায়রুন্নেসা।
দুপুর ১২টায় পুলিশ সদর দফতরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সম্প্রতি কর্তব্যরত অবস্থায় সড়ক দুর্ঘটনা ও দুর্বৃত্তদের আক্রমণে নিহত ১৪ পুলিশ সদস্যের পরিবারকে ৬১ লাখ টাকা প্রদান করে পুলিশ সদর দফতর।
সাড়ে পাঁচ বছর বয়সি মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস ইরা এবং ২ বছর বয়সি ছেলে ইয়াসিন আরাফাত পরাগকে নিয়ে পুলিশ সদর দফতরে হাজির হন খায়রুন্নেসাও। তিনি পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি) এ কে এম শহীদুল হকের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা ও লিখিত শোকবার্তা গ্রহণ করেন।
পরে স্বামী হত্যার বিচার সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পুলিশ সদর দফতর ডেকে চেক হস্তান্তর করে যে সম্মান দিয়েছে, সে জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি আইজিপিকে। তবে আমার কাছে আর্থিক সচ্ছলতার চাইতে বেশি গুরুত্বপূর্ণ স্বামী ইব্রাহিম মোল্লা হত্যার বিচার। যদি স্বামী হত্যাকারীদের বিচার দেখতে পেতাম তাহলে বেশি খুশি হতাম।’ আবেগাপ্লুত কণ্ঠে খায়রুন্নেসা বলেন, ‘আমার অনেক কষ্ট হবে, সংগ্রাম করতে হবে। বাবাহীন ছেলে-মেয়েকে মানুষ করতে হবে। তবে আত্মতৃপ্তির কোনো জায়গা নেই। বাবাহারা সন্তানের মুখ দেখলে দিশেহারা হয়ে যাই।’
শুধু ইব্রাহিম মোল্লা নয়, আশুলিয়ার শিল্প পুলিশের-১ কনস্টেবল মো. মুকুল হোসেনের (২৩) বাবা সহিদুল ইসলামসহ কর্তব্যরত অবস্থায় সড়ক দুর্ঘটনায়, দুর্বৃত্তদের আক্রমণে নিহত মোট ১৪ পুলিশ সদস্যের পরিবারের আত্মীয়স্বজন উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত, গত ২২ অক্টোবর সন্ধ্যায় গাবতলীর পর্বত সিনেমা হলের সামনে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে নিহত হন দারুস সালাম থানার এএসআই ইব্রাহিম মোল্লা। পরে তার লাশ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরায় দাফন করা হয়